রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২
logo
বেহালদশা

নড়াইল-ফুলতলা সড়ক সংস্কার হয়নি ১০ বছরেও

নড়াইল-ফুলতলা সড়ক সংস্কার হয়নি ১০ বছরেও

নড়াইল, ২৪ জানুয়ারি, এবিনিউজ : পিচ-খোয়া ওঠে ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত ছাড়াও রাস্তা আড়াআড়ি খালের সৃষ্টি হয়েছে। সামান্য বৃষ্টিতেই পানি জমে নাকাল অবস্থা হয়। এর ওপর দিয়ে হেলেদুলে ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন। দুর্ঘটনা এড়াতে যানবাহনগুলো ধীরে চলতে বাধ্য হচ্ছে। এমনকি মোটরসাইকেল, বাইসাইকেল চলাচল করছে অনেকে ঝুঁকি নিয়ে। এ অবস্থা নড়াইল-ফুলতলা সড়কের। এ সড়কে নিত্যদিন যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের নড়াইল কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নড়াইল- গোবরা-ফুলতলা সড়কটি ২৮ কিলোমিটার। এর ২৬ কিলোমিটার নড়াইল সওজের অধীনে। বাকি দুই কিলোমিটার অংশ খুলনা জেলার ফুলতলা উপজেলার মধ্যে। এই দুই কিলোমিটার খুলনা সওজের অধীনে।

সওজের নড়াইল কার্যালয় নির্বাহী প্রকৌশলী তাপসী দাস জানান, এই ২৮ কিলোমিটার সড়ক প্রায় ১০ বছর ধরে সংস্কার হয় না। ৪-৫বছর ধরে ফাইল চালাচালি হচ্ছে। সম্প্রতি যোগাযোগ মন্ত্রণালয় থেকে কর্মকর্তা এসেছিলেন। সড়কটি সংস্কারের জন্য ১১৩ কোটি টাকার প্রকল্প তৈরি হয়েছে। এ প্রকল্পের মধ্যে ভৈরব নদের সিকিরহাটে ফেরিও হবে। এবার বোধ হয় বরাদ্দ হবে। তিনি বলেন, সড়কটির ৫ কিলোমিটার অংশ মোটামুটি ভালো। অন্য ২৩ কিলোমিটার খুবই খারাপ।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন অসংখ্য যাত্রীবাহী বাস, ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার, পিকআপ ভ্যান, ইজিবাইক ও অটোরিকশাসহ নানা ধরনের যানবাহন চলাচল করে। সড়কের নড়াইল-গোবরা ৭ কিলোমিটার অংশ ব্যবহার করে দেশের গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক শহর যশোরের নওয়াপাড়ায় যাওয়া যায়। এতে নড়াইল-নওয়াপাড়া যাতায়াতে প্রায় ১৫ কিলোমিটার বাঁচে।

এদিকে নড়াইল-সিকিরহাট সড়কটি দিয়ে নড়াইল-ফুলতলা ও খুলনা যাতায়াতে প্রায় ২০ কিলোমিটার সাশ্রয় হয়।

এ সড়কের আশপাশে গোবরা মহিলা কলেজ, গোবরা মিত্র মহাবিদ্যালয়, মির্জাপুর ডিগ্রি কলেজ, পার্বতী বিদ্যাপিঠ, প্রগতি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সিঙ্গা-শোলপুর কেপি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, আড়পাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ অন্তত ১৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এ সড়ক ব্যবহার করে।

গোবরা, মির্জাপুর, রুখালী ও চাকই এই এলাকার বড় বাজার। এসব বাজারে পণ্য পরিবহনে প্রতিনিয়নত মালবোঝাই ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান চলাচল করে।

সরেজমিন দেখা গেছে, এ সড়কের মির্জাপুর থেকে রুখালী পর্যন্ত দুই কিলোমিটার এবং চাকই থেকে শুভরাড়া পর্যন্ত তিন কিলোমিটার সড়ক মোটামুটি চলাচলযোগ্য। অন্য ২৩ কিলোমিটার সড়কে পিচ ও খোয়া উঠে ছোট-বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। যানবাহন চলছে হেলেদুলে ঝুঁকি নিয়ে। দুর্ঘটনা এড়াতে যানবাহন চালাতে হয় ধীর গতিতে।

গোবরা বাসস্ট্যান্ডের সময় নিয়ন্ত্রক (স্টাটার) মইন মিনা বলেন, নড়াইল থেকে গোবার পর্যন্ত সাত কিলোমিটার সড়কে বাস পার হতে ১০ মিনিট সময় লাগার কথা। সেখানে প্রায় ৪৫ মিনিট সময় লাগে। কখনো কখনো বাস, মালবোঝাই ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান গর্তে পড়ে গেলে দুর্ভোগের আর শেষ থাকে না। সড়কে তখন অন্য যানবাহন চলাচল আটকে থাকে। বৃষ্টি হলেতো নাকাল অবস্থা।

সড়কের শুরুতেই নড়াইল পৌর এলাকার মাছিমদিয়া, বেতবাড়িয়া, ধোপাখোলা, ও উজিরপুর এলাকার অবস্থা খুবই খারাপ। ছোট-বড় গর্ত ও খানাখন্দে ভরপুর। জায়গায় জায়গায় শুধু পিচই নয় খোয়াও উঠে গেছে। শুধু যানবাহন নয়, পথচারীদের চলাফেরায়ও অসুবিধা হচ্ছে। প্রায় একই অবস্থা দেখা গেছে সড়কের কলোড়া, বীড়গ্রাম, গোবরা, বরকুলা, আড়পাড়া, মির্জাপুর ও চাকই এলাকায়।

গোবরা গ্রামের মোটরসাইকেল চালক মিজানুর রহমান বলেন, গত ১৫ বছর ধরে ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালাচ্ছি। এত খারাপ অবস্থা আশপাশের উপজেলার সড়কে নেই। গোবরা বাজারের ব্যবসায়ী বাবু বৈরাগী বলেন, রাস্তার কারণে মোকামঘাট বাদই দিয়ে দিয়েছি। এ সড়ক পথে মাল আনতে দ্বিগুণ টাকা লাগে। তাই খুলনা থেকে চিত্রা নদী পথে ট্রলারে মাল আনি। কিন্তু ট্রলারতো সব সময় পাওয়া যায় না। ট্রলারে সময়ও বেশি লাগে।

এবিএন/খায়রুল আলম/জসিম/সাদিক

ad

প্রধান শিরোনাম

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত