![বরগুনা-বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কে অনির্দিষ্টকালের জন্য বাস ধর্মঘট](https://archive.abnews24.com/assets/images/news_images/2017/02/16/dhormoghot@abnews24_62659.jpg)
বরগুনা, ১৬ ফেব্রুয়ারি, এবিনিউজ : বরগুনা-বরিশাল-পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়কে মাহেন্দ্র, ইজিবাইক ও ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলের অবৈধ চলাচল বন্ধসহ আটক বাসশ্রমিকদের মুক্তির দাবিতে আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে এ পথে অনির্দিষ্টকালের জন্য যানবাহন ধর্মঘট ডেকেছে তিন জেলার বাসমালিক ও শ্রমিক সমন্বয় পরিষদ। ধর্মঘটের কারনে বরগুনা থেকে কোন গাড়ি ছাড়েনি।এত হাজার হাজার মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছে।
বরিশাল-পটুয়াখালী-বরগুনা মালিক-শ্রমিক সমন্বয় পরিষদ আজ বৃহস্পতিবার থেকে এই ধর্মঘটের ডাক দেয়।বরগুনায় এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তারা এ কর্মসূচী ঘোষনা করেন। সংবাদ সম্মেলনে তারা উল্লেখ করেন।
বরিশাল-পটুয়াখালী-বরগুনা-কুয়াকাটা মহাসড়কে মাহেন্দ্র, ইজিবাইক ও ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলের অবৈধ চলাচল বন্ধ না করা পর্যন্ত তাঁদের এই ধর্মঘট অব্যাহত থাকবে। একই সঙ্গে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি বরগুনার আমতলী চৌরাস্তা বাসস্ট্যান্ডে মাহেন্দ্র ও বাসশ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষের সময় গ্রেপ্তার করা বাসশ্রমিকদের নিঃশর্ত মুক্তি ও তাঁদের বিরুদ্ধে দায়ের করা পুলিশের মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়। বরগুনা জেলা বাসমালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা ও সাধারণ সম্পাদক মো. সগির হোসেন, শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. সাহাবুদ্দিন সাবু , বাসশ্রমিক সমন্বয় পরিষদের আহ্বায়ক রিয়াজ উদ্দিন মৃধা, বাসমালিক সোহেল গাজী প্রমুখ বক্তব্য দেন।
এদিকে বরগুনার আমতলীর বাসস্ট্যান্ডে রাখা হাসান এন্টারপ্রাইজ নামের একটি বাসে গত মঙ্গলবার রাতে দুর্বৃত্তরা অগ্নিসংযোগ করায় বাসটি পুড়ে গেছে। বাসমালিক হাসান মৃধার দাবি, বাসমালিক-শ্রমিকদের ধর্মঘট বানচাল করার জন্য মাহেন্দ্রর শ্রমিকেরা পরিকল্পিতভাবে বাসে আগুন দিয়েছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রত্যক্ষদর্শী লোকজন সূত্রে জানা গেছে, আমতলী শহরের তালতলী বাসস্ট্যান্ডে হাসান এন্টারপ্রাইজের বাসটি চার দিন ধরে অবস্থান করছিল। গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে আগুনের সূত্রপাত। মুহূর্তের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে পড়ে এবং বাসটি পুড়ে যায়। স্থানীয় লোকজন আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। তবে কীভাবে বাসটিতে আগুন লাগে, কেউ জানাতে পারেননি।
বরগুনা জেলা মাহেন্দ্র শ্রমিক সমিতির সভাপতি জহিরুল ইসলাম মৃধা বলেন, বাসমালিক ও শ্রমিকেরা পরিস্থিতি ঘোলাটে করার জন্য একটি পরিত্যক্ত বাসে আগুন দিয়েছেন। এটা তাঁদের সাজানো নাটক।
আমতলী থানার ওসি মো. সহিদ উল্লাহ্ বলেন, বাসটিতে কীভাবে অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত, তা এখন পর্যন্ত বলা যাচ্ছে না। বিষয়টির তদন্ত চলছে। তবে এ ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি।
প্রসঙ্গত,গত ১৩ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরিশাল-পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়কের আমতলীর চৌরাস্তা এলাকায় বাসশ্রমিক এবং মাহেন্দ্র, ইজিবাইক ও ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ঘণ্টাব্যাপী এই সংঘর্ষে আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) পুলিশের সাতজন সদস্য আহত হন। এ ছাড়া শ্রমিকদের দুই পক্ষের অন্তত ২২ জন আহত হন। দীর্ঘদিন ধরে এই মহাসড়কে মহেন্দ্র, ইজিবাইক, ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল অবৈধভাবে চলাচল করা নিয়ে বাসমালিকদের সঙ্গে বিরোধ চলে আসছিল। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি সকালে দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কোনো পক্ষই বৈঠকে না বসে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
এবিএন/তরিকুল ইসলাম/জসিম/স্বপ্না