বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১ ফাল্গুন ১৪৩১
logo

বরগুনায় মুক্তিযোদ্ধার নাম ছিনতাই করলেন ওসি

বরগুনায় মুক্তিযোদ্ধার নাম ছিনতাই করলেন ওসি

বরগুনা, ২২ ফেব্রুয়ারি, এবিনিউজ : বরগুনার তালতলীতে মুক্তিযোদ্ধার নাম ছিনতাই করেছেন সাবেক এক পুলিশ অফিসার। প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার নাম বাদ দিয়ে তিনি মুক্তিযোদ্ধার তালিকা ভুক্ত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তালতলী থানার সাবেক ওসি মোঃ সামসুল হক পিপিএম এর বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে। তিনি বাউফল উপজেলার মোঃ আলী হাওলাদারের পুত্র । গত কয়েক মাস পূর্বে তিনি বরগুনা সদর থানা থেকে অবসরে যান। তালতলী উপজেলার প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা মৃতু মোঃ সামসুল হক হাওলাদারের ছেলেরা লিখিত ভাবে এ অভিযোগ করেন।

মৃতু সামসুল হক হাওলাদারের বড় ছেলে সাবেক ইউপি সদস্য শহিদুল হক হাওলাদার জানান, তার পিতা ছিলেন একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালিন সময় ৯নং সেক্টরাধীন পটুয়াখালীর সাব সেক্টর হেডকোয়ার্টার বামনার (বুকাবুনিয়া) ক্যাম্পে অবস্থান করে সাহসিকতার সহিত মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহন করেন। ঐ সেক্টরের সহযোদ্ধা মুক্তিযোদ্ধা সিনিয়র ক্যাম্প অধিনায়ক জহির শাহ আলমগীর ও একই সেক্টরের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা এমএ রাব্বানী ফিরোজ এর দেয়া প্রত্যয়নে এবং কেন্দ্রীয় সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সদস্য তালিকায় মুক্তিযোদ্ধা মৃতু সামসুল হকের সুচক নং- ০৪-০৯-৩৯-০০৯ রয়েছে। তিনি আরও জানান, বাংলাদেশ আর্মস ফোর্সের ৯ নং সেক্টরের মেহেদী আলী ইমাম ক্যাপ্টেন সাব সেক্টর কমান্ডার, পটুয়াখালী এর দেয়া সার্টিফিকেটে জানা যায় ১৯৭১ সালে ৬ জুন থেকে ৬ আগষ্ট পর্যন্ত আমার বাবা মোঃ সামসুল হক হাওলাদার তাদের সাথে থেকে সক্রিয় ভাবে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহন করেন।

২০০২ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে আমার বাবা মোঃ সামসুল হক হাওলাদার ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। বর্তমান সরকার ২০১৪ সালে অনলাইনে মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা চাওয়ায় আমরা ২ নভেম্বর-২০১৪ সালে আবেদন করি। যার ডিজিনং-১২১৯৩২৯ এবং জাতীয় পরিচয় পত্র নং-৩২৭০১০৯০১১৯১০০৪১। এ আবেদনের প্রেক্ষিতে সারা দেশের ন্যায় সম্প্রতি তালতলী উপজেলায়ও যাচাই-বাছাই কার্যক্রম শেষ হয়েছে। আমরা ঐ বাছাই কার্যক্রমে উপস্থিত থাকলেও রহস্যজনক কারনে আমার পিতার নাম ডাকা হয়নি। পরবর্তিতে খোঁজ নিয়ে জানা যায় পটুয়াখালী জেলার বাউফল উপজেলার মোঃ আলী হাওলাদারের পুত্র মোঃ সামসুল হক পিপিএম ২০০৪ সালের এপ্রিলে তালতলী থানায় ওসি হিসেবে যোগদান করে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ও এর সহযোগীদের যোগসাজসে আমার বাবার নাম মোঃ সামসুল হকের সাথে পিপিএম যোগ করে নিজ নাম মোঃ সামসুল হক পিপিএম এবং আমার দাদার নাম মোঃ ছাদের আলী হাওলাদারের ছাদের কেটে দিয়ে তার পিতা মোঃ আলী হাওলাদার নাম দিয়ে তালতলীর বড়বগী ঠিকানায় পরবর্র্তী প্রকাশিত গেজেটে ৫২৫ নং এ মুক্তিযোদ্ধার তালিকা ভুক্ত হন।

সাবেক ওসি সামসুল হক পিপিএম এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তালতলীতে চাকরীর সময় আমি বড়বগীর ঠিকানায় মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে অন্তর্ভূক্তি হই। ২০০৯ সালে আমি মন্ত্রনালয়ে আবেদন করলে তালতলী উপজেলা থেকে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় আমার নামের গেজেট অন্তর্ভূক্ত হয়। তিনি বড়বগীর সামসুল হক হাওলাদারের নাম কেটে তার নাম অন্তর্ভূক্তির কথা অস্বীকার করেন।

তালতলী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাচাই কমিটির সদস্য সচিব ও তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) তৌছিফ আমম্মেদ জানান, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল থেকে অন্তর্ভূক্ত হয়ে যে নাম এসেছে তাদের ডাকা হয়েছে। তবে তালতলী থানার সাবেক ওসি সামসুল হক পিপিএম যদি মুক্তিযোদ্ধা না হয়েও দুর্নীতির মাধ্যমে অন্যের নাম ব্যবহার করে মুক্তিযোদ্ধা হয় তাহলে তদন্তের মাধ্যমে তার নাম বাদ দেওয়া হবে।

এবিএন/তরিকুল ইসলাম/জসিম/রাজ্জাক

ad

প্রধান শিরোনাম

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত