![নড়াইলে শহীদ মিনার ভাঙার ষড়যন্ত্র](https://archive.abnews24.com/assets/images/news_images/2017/03/07/shohod-minar@„bmwhy_65768.jpg)
নড়াইল , ০৭ মার্চ , এবিনিউজ :নড়াইলের নড়াগাতি থানার প্রধান শহীদ মিনারটি ভেঙে ফেলার ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
স্থানীয় সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত শহীদ মিনারটি নিয় এলাকাবাসীর দুশ্চিন্তা কাটছে না। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে সেখানে আদালত ১৪৪ ধারা জারি করেছেন। অবশ্য শহীদ মিনারটি ভাঙা হবে না বলে আশ্বস্ত করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
নড়াইল-গোপালগঞ্জ সীমান্তে নড়াইলের কালিয়ার ছয়টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত নড়াগাতি থানা। ইউনিয়ন পরিষদের জায়গায় নির্মিত শহীদ মিনারটি ভেঙে এটি মহল সেখানে দোকান নির্মাণের পাঁয়তারা করছে। এর আগে ১৯৯৮ সালে নড়াগাতি থানা ঘোষিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাজার সংশ্লিষ্ট জয়নগর ইউণিযন পরিষদ কার্যালয়ে থানার কর্মকান্ত পরিচালিত হয়। পরে ২০০৯ সালে স্থানীয় উদিচি শিল্পী গোষ্ঠির উদ্যোগে নড়াগাতি বাজারে ইউনিয়ন পরিষদের সামনে নড়াগাতি থানার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মিত হয়।
এর আগে প্রায় ২৫ বছর ধরে এলাকার মানুষ কলাগাছ দিয়ে শহীদ মিনার বানিয়ে সেখানে ফুল দিত। ক্রমে এলাকাবাসীর শ্রদ্ধা নিবেদনের একমাত্র জায়গায় পরিণত হয় এটি। এলাকার সব সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড ও হয় একে কেন্দ্র করেই।
নড়াগাতি থানার উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি চৌধুরী হিরক পাশা বলেন, এ এলাকায় কোনো শহীদ মিনার না থাকায় আমরা নিজেরা চাঁদা তুলে শহীদ মিনারটি তৈরি করি। এলাকার প্রগতিশীল মানুষজন এ শহীদ মিনার তৈরিতে সহায়তা করে।
জয়নগর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি মো. ওমর চৌধুরী বলেন, আমরা স্থানীয় এমপির সমর্থনপুষ্ট ছাত্রলীগ নেতা আলমের সঙ্গে পেরে উঠছি না। দুই বছর ধরে এই শহীদ মিনার রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছি। এখানে শহীদ মিনার ভেঙে স্থাপনা তৈরি করা হলে তা এলকার জনগণ প্রতিহত করবে। ইতিমধ্যে শহীদ মিনারটি আংশিক ভেঙে ফেলা হয়েছে।
উদীচী নড়াগাতি থানার সভাপতি আবদুস সাত্তার বলেন, উদীচী এ স্থানে প্রতিবছর বইমেলা থেকে শুরু কের সব জাতয়ি দিবসের অনুষ্ঠান করে থাকে।
নগাহাতি থানা আওয়ামীলগি নেতা জাহান চৌধুরী বলেন, এখানে দল-মত নির্বিশেষে সবাই জাতীয় অনুষ্ঠানে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে। এটি এলাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার। আমরা যেকোনো মুল্যে এটি রক্ষা করব।
জয়নগর ইউপি চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন চৌধুরী জানান, ইউনিয়ন পরিষদের জায়গা দখলের পাঁয়তারা চলছে। এলাকায় এটা নিয়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে। তবে নড়াগাতি থানা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. মাহবুবুল আলম অভিযোগ প্রসঙ্গে বলেন, আওয়ামী লীগের যে অংশটি শহীদ মিনারের নামে কথা বলছে, তারাও মূলক টাকা খাওয়ার জন্যই খুরছে। আমরা বন্দোবস্ত নিলেও তারা চাচ্ছে প্রতিটি দোকান বরাদ্দ থেকে তাদের একটি অংশ দিতে হবে। আমরা তাতে রাজি না হওয়ায় তার ক্ষেপেছে। তবে শহীদ মিনারের কোন ক্ষতি হবে না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুল ইসলাম বলেন, ইউনিয়ন পরিষদটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়ায় নিলাম করে ভেঙে ফেলা হয়েছে। বাজারের ভেতর হওয়ায় শহীদ মিনারের জন্য তিন ফুট জায়গা রেখে বাকিটুকু বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। শহীদ মিনার ভেঙে ফেলার প্রশ্নই ওঠে না। ইউপি চেয়ারম্যানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ওই স্থঅনে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। সেখানে শান্তি শৃঙ্খলার অবনতি হলে সব ধরনের কর্মকান্ডই বন্ধ থাকবে।
নড়াইলের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) কাজী মাহবুবুর রশদি বলেন, সরকারি খাসজমি হিসেবে উপজেলা ভূমি অফিস বন্দোবস্ত দিচ্ছে। তবে আমি কালিয়া ইউএনওর সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছি, শহীদ মিনার ভাঙা হবে না, সেটা যেখানে আছে সেখানেই থাকবে।
এবিএন/সৈয়দ খাইরুল আলম/জসিম/নির্ঝর