শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২ ফাল্গুন ১৪৩১
logo
  • হোম
  • সারাদেশ
  • সোনাগাজীর ছোট ফেনী নদীতে সেতুতে নিম্মমানের কাঁচামাল ব্যাবহার

সোনাগাজীর ছোট ফেনী নদীতে সেতুতে নিম্মমানের কাঁচামাল ব্যাবহার

সোনাগাজীর ছোট ফেনী নদীতে সেতুতে নিম্মমানের কাঁচামাল ব্যাবহার

সোনাগাজী(ফেনী), ২২ মার্চ , এবিনিউজ : সোনাগাজী ও কোম্পানিগঞ্জ উপজেলার প্রায় ১০ লক্ষ মানুষের দির্ঘ দিনের স্বপ্নের সেতু ছোট ফেনী নদীর উপর সাহেবের ঘাট সেতুর নির্মান কাজ ধীর গতিতে চলছে।এ একটি মাত্র সেতুর কারনে দুই অঞ্চলের জনসাধারন কে ৪৫ বছর পর্যন্ত দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সেতু না থাকার কারনে কৃষি ও মৎস প্রধান এলাকাটিতে কাংখিত উন্নয়ন সাধিত হয়নি। জনগনের দাবীর পরও অতীতের সরকারগুলো সেতু নির্মানে কোন কার্যকরী প্রদক্ষেপ গ্রহন করেনি। ২০০৮ সালে শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতায় আসার পর সেতু নির্মানে নোয়াখালীর কোম্পানিগঞ্জ উপজেলার সংসদ সদস্য বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ওবায়দুল কাদের কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহন করে। বর্তমান সরকার দ্বীতিয় মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহনের পর ওবায়দুল কাদের সেতু মন্ত্রীর দায়িত্ব পেলে তার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় সোনাপুর - জোরারগঞ্জ সড়কের নির্মানের জন্য একনেকে অর্থ বরাদ্ধ দিলে ছোট ফেনী নদীর উপর স্বপ্নের সাহেবের ঘাট সেতু নির্মান বাস্তবে রুপ নেয়। যার ফলশ্রুতিতে ২০১৬ সালের জানুয়ারী মাসে ৫৩ কোটি টাকা ব্যায়ে ৪৭৮.১৭১ মিটার দির্ঘ সেতুর নির্মান কাজ শুরু হয়। যাহা ২০১৮ সালে সমাপ্ত হওয়ার কথা রয়েছে।ইতিমধ্যে সেতুর মুল বেসের ২০ টি কলামের কাজ নির্মান সম্পন্ন হয়েছে। সেতুটির নির্মান কাজ নোয়াখালীর সড়ক বিভাগ বাস্তবায়ন করলেও সেতু নির্মানের স্থান ভৌগলিকভাবে সোনাগাজীতে অবস্থিত। কিন্তু নির্মান কাজ শুরু হওয়ার পর থেকে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান রানা বিল্ডার্স লিমিটেডের বিরুদ্ধে কাজের ধীরগতি ও নিম্মমানের নির্মান সামগ্রী ব্যাবহারের অভিযোগ উঠে। স্থানীয় এলাকাবাসী ও সুশিল সমাজের পক্ষ থেকে অভিযোগ করার পরও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এ বিষয়টি অজ্ঞাত কারনে আমলেই নেয়নি। সরজমিনে দেখা যায়,সেতু নির্মানে যে কাঁচামাল( পাথর,বালু,সিমেন্ট,রড়) তাহা বেশীরভাগ ক্ষেত্রে নিম্মমানের ব্যাবহার করা হচ্ছে।এমনকি নির্মান কাজে ছোট ফেনী নদীর লবনাক্ত পানি ব্যাবহার করতে দেখা গেছে।আর এ লবনাক্ত পানি ব্যাবহারের কারনে সেতুর আয়ুস্কাল কমে যাচ্ছে বলে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে। ঢালাইয়ের জন্য যে পাথর বালু ব্যাহ্নত হচ্ছে সেগুলোতো ময়লা ও কাদা মাটির আধিক্য রয়েছে। বালু ছেকে ও পাথর পানি দিয়ে পরিস্কার করার বিধান থাকলেও তাহা অনুসরন করা হচ্ছেনা। পরিমান মতো সিমেন্ট ব্যাবহার করার বিধান থাকলেও প্রজেক্ট ম্যানেজার ও সেকশন অফিসারের কারসাজিতে কম পরিমানে সিমেন্টে ব্যাবহার করা হচ্ছে।তবে সেতুর নির্মান সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তা উপস্থিত থাকলে কাজের মান কিছুটা মানসম্পন্ন হয়ে থাকে। আপাতত দৃষ্টিতে নিদিষ্ট পরিমানের রড়ের ব্যাবহার দেখা গেলেও এখানেও রয়েছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সুক্ষ কারসাজি।বি.এস.আর.এম ব্যান্ডের রড় ব্যাবহার করতে দেখা গেলেও সেখানে নিম্মমানের অন্য ব্যান্ডের রড় ব্যাবহার করা হচ্ছে।ঢালাইয়ের সময় মরিচায় ধরা রড় ব্যাবহারের নিয়ম না থাকলেও সেই মরিচায় ধরা রড় ব্যাববহার করতে দেখা গেছে। গত কয়েকদিন পূর্বে নির্মান কাজ চলার সময় সেকশন অফিসার আবুল খায়ের ও প্রজেক্ট ম্যানেজার অজয় বাবুর উপস্থিতিতে অনিয়মের বিষয়গুলো হাতে নাতে তুলে ধরা হলে তারা এ বিষয়ে কোন সদুত্তর দিতে পারেনি। লবনাক্ত পানি ব্যাবহারের বিষয়টি অবগত করা হলে তারা পানি লবনাক্ত নয় বলে বলার চেষ্টা করেন কিন্তু যে পানি ব্যাবহার করা হচ্ছে তাহা মুখে দিয়ে স্বাধ পরীক্ষার কথা বল্লে তারা ঘটনার প্রসঙ্গ অন্য দিকে নেওয়ার চেষ্টা করে। এসব অনিয়মের বিষয়ে জানতে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের স্বত্তাধীকারী মোহাম্মদ পাখি মিয়ার সাথে তার ব্যাববহ্নত মুঠোফোনে একাধীকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি। মুঠোফোনে সেতুর নির্মান কাজে সংশ্লিষ্ট নোয়াখালীর নির্বাহী প্রকোশৌলি জাহিদ হোসেন কে অনিয়মের বিষয়ে অবহিত করলে তিনি বিষয়গুলো খতিয়ে দেখার আশ্বাস প্রদান করেন। কাজের ধীরগতির বিষয়টি জানানো হলে তিনি নিদিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হবে বলে জানান। কাজের গুনগত মান দেখে সহজে অনমান করা যায় ইতিমধ্যে যে কাজ সম্পন্ন হয়েছে তাতে নিম্মমানের নির্মান সামগ্রীর ব্যাবহার হয়েছে। স্থানীয় এলাকাবাসী মনে করেন সেতু নির্মানে অনিয়মের সাথে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহন করা এবং অবশিষ্ট নির্মান কাজ যেন মানসম্মত হয় সে জন্য মাননীয় সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের আশু হস্তক্ষেপ জরুরী।

এবিএন/আবুল হোসেন রিপন/জসিম/নির্ঝর

ad

প্রধান শিরোনাম

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত