বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১ ফাল্গুন ১৪৩১
logo

খাগড়াছড়িতে আনারসের বাম্পার ফলন

খাগড়াছড়িতে আনারসের বাম্পার ফলন

খাগড়াছড়ি, ২৭ মার্চ, এবিনিউজ : আনারসের বাগান করে ভাগ্য পরিবর্তন করেছেন পানছড়ির লতিবান ইউনিয়নের কুড়াদিয়াছড়ি গ্রামের বাসিন্দা তুষিত কুমার চাকমা (৪৩)। মৌসুম না হওয়া সত্ত্বেও তাঁর বাগানের আনারসে এখন রং ধরেছে। তিনি বলেন, ‘চোখ বন্ধ করে বলতে পারি আমি অনেক লাভ করতে পারব।’ গত ২৬ ফেব্রুয়ারি তুষিত কুমার চাকমার বাগান ঘুরে দেখা যায়, বাগানের প্রতিটি গাছে আনারস ধরেছে।

তুষিত কুমার চাকমা আনারস চাষের কাহিনি বলেন প্রথম আলোকে। তাঁর ভাষায়, ‘প্রায় সাত-আট বছর আগে মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলে বেড়াতে গিয়েছিলাম। সেখানকার পাহাড়গুলোতে আনারসের বাগান দেখে আমিও উদ্বুদ্ধ হই। চেষ্টা চালাই সেখানকার কৃষকদের সঙ্গে বাগান নিয়ে আলোচনা করার। পরিচিত হই স্থানীয় এক ত্রিপুরা আদিবাসীর সঙ্গে। তিনি আমার আগ্রহের কথা শুনে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন। পরে আমাকে ১২ জন শ্রমিক ঠিক করে দেন যাঁরা আমার এখানে (খাগড়াছড়িতে) এসে বাগানে কাজ করবেন।’

সেই ১২ জন শ্রমিক নিয়ে তুষিত তিন বছর আগে বাগানের কাজ শুর করেন। পাঁচ একর জায়গাজুড়ে এক লাখ ২৫ হাজার আনারসের চারা রোপণ করেন। প্রথম বছর ফলন হয়নি। দ্বিতীয় বছর শ্রমিকেরা হঠাৎ চলে যাওয়ায় এবং যোগাযোগের অসুবিধার কারণে বাগানের অনেক আনারস পেকে পচে যায়। তৃতীয় বছরে ওই শ্রমিকেরা আবার আসেন, ঠিকমতো বাগান পরিচর্যা করেন, ফলে মৌসুম না হওয়া সত্ত্বেও বাগানে এখন প্রচুর আনারস ধরেছে।

তিনি জানান, এ পর্যন্ত তাঁর বাগানের পেছনে খরচ হয়েছে প্রায় এক লাখ ৮০ হাজার টাকা। তবে ইতিমধ্যেই খরচের টাকা উঠে এসেছে। প্রায় এক মাস আগে থেকে বাগানের আনারস (এ বছর) বিক্রি শুর করেছেন। এ পর্যন্ত বাগানের ৬-৭ শতাংশ আনারস বিক্রি করেছেন বলে তিনি জানান। তুষিত কুমার চাকমা বলেন, ‘স্থানীয়ভাবে আমরাও (আদিবাসী) আনারসের বাগান করি। কিন্তু আমরা আনারসের বাগান করতে যে কষ্ট-পরিশ্রম করতে হয় তা করি না, সহ্য হয় না। তাই আমরা সফল হতে পারি না। কিন্তু বাগান শ্রমিকেরা এই কষ্ট মেনে নিয়ে কাজ করে। ফলে তাঁরা সফল হন।’

বাগানের শ্রমিক সুরেশ ব্যানার্জি (২৮) নিজের পরিচয় দিয়ে বলেন, ‘আমরা বংশ পরম্পরায় চা-বাগান, আনারস ও লেবুর বাগানে কাজ করে যাচ্ছি। আনারসের বাগানে কখন কী করতে হবে তা আমাদের জানা আছে।’ তিনি বলেন, হরমোন প্রয়োগ করে এই আনারসের আগাম ফলন ফলানো হয়েছে।

খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা যুগল পদ দে জানান, স্থানীয় যে আনারস (গাছের পাতা কাঁটাযুক্ত) উৎপন্ন হয় তা হানি কুইন জাতের। এর বৈশিষ্ট্য হলো অত্যধিক রসালো, পাকলে মিষ্টি, চোখ ভাসা ভাসা। এই জাতের আনারস হরমোন ব্যবহার করে বছরে তিন বার ফলন ফলানো যায়। অফ-সিজনে (অ-মৌসুম) দুবার ও মৌসুমে একবার। তিনি আরও জানান, সাধারণত সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে আনারস লাগানো হয়। ফেব্রুয়ার্রী- মার্চ- ফলন হয়। আনারসের ফলন ফলাতে হলে গাছে প্রচুর পানি দিতে হয়।

তুষিত কুমার চাকমার বাগান ঘুরে দেখা যায়, বাগানে প্রতিটি গাছে ফলন এসেছে। তবে অনেক গাছের ফল আকারে ছোট। শীতকালে অর্থাৎ শুকনো মৌসুমে তিনি বাগানে কোনো সেচের ব্যবস্থা রাখেননি বলে জানান

এবিএন/ইব্রাহিম শেখ/জসিম/স্বপ্না

ad

প্রধান শিরোনাম

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত