বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১ ফাল্গুন ১৪৩১
logo

ফেনীতে ‘অপচিকিৎসার’ আরেক নাম ইস্কয়ার ল্যাব

ফেনীতে ‘অপচিকিৎসার’ আরেক নাম ইস্কয়ার ল্যাব

ফেনী, ৩১ মার্চ, এবিনিউজ : ভুল রিপোর্ট দেয়া, একজনের রিপোর্ট আরেকজনের সাথে গুলিয়ে ফেলা, রোগী হয়রানি, দুর্ব্যবহার, উচ্চ ফি নেয়া- ফেনীতে ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে উঠা ডায়গনস্টিক সেন্টারগুলোর বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ বেশ পুরনো। প্রায় প্রতিদিনই রোগী ও তাদের স্বজনদের কাছ থেকে পাওয়া যায় এসব অভিযোগ। তবে এবার ফেনীর ইস্কয়ার ল্যাব এর বিরুদ্ধে সঠিক রোগ নির্ণয়ের নামে রোগীদের সাথে প্রতারণাসহ নানা অভিযোগ উঠেছে। প্রথম থেকে স্কয়ার নাম দিয়ে প্রতারণ শুরু করে, পরে সংশোধনের সুযোগ পেয়ে নাম পরিবর্তন করে। সবচেয়ে আতঙ্কের বিষয় হলো, প্রতিষ্ঠানটি অনেক রিপোর্ট ডাক্তারকে না দেখিয়ে নিজেরাই স্বাক্ষর করে রোগীদের সরবরাহ করছে। ফলে সঠিক চিকিৎসা সেবা নিতে গিয়ে রোগীরা প্রতারিত হয়ে আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারী মাসে জন্ডিস পরীক্ষার ভুল রিপোর্ট প্রদান ছাড়াও একের পর এক অনুমান নির্ভর রিপোর্ট প্রদানের ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির রোগ নির্ণয়ের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন সচেতন মহল। ফেনীর এস.এস.কে রোডের আজিজ শপিং সেন্টারের নিচ তলায় ই-স্কয়ার ল্যাবের অবস্থান।

জানা যায়, চলতি বছরের ১১ ফেব্রুয়ারী সোনাগাজীর সুলতানপুর গ্রামের বাসিন্দা ফয়েজ আহম্মদের ছেলে কাওছার আহমদ সন্ধ্যা সোয়া ছ’টায় জন্ডিস পরীক্ষা করতে ইস্কয়ার ল্যাবে যান। মেডিকেল প্যাথলজিষ্ট স্বাক্ষরিত রিপোর্টে বিলিরোবিনের পরিমাণ ৩.৪ উল্লে করে তাকে রিপোর্ট ডেলিভারী করা হয়।

পরে কাওছারের শারীরিক অবস্থা ও রিপোর্ট দেখে চিকিৎসকের সন্দেহ হলে ওইদিন রাতেই তাকে একই পরীক্ষার জন্য শহরের ‘ভাইটাল’ ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পাঠান।

সেখানকার মেডিক্যাল টেকনলজিস্ট স্বাক্ষরিত রিপোর্টে বিলিরোবিনের পরিমাণ ৬.২০ উল্লেখ থাকায় রোগী নিজেই বিভ্রান্ত হয়ে পড়েন। প্রায় ১ ঘন্টার ব্যবধানে দুটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দু’ধরণের রিপোর্টে রোগীর মনে সন্দেহের দানা বাধে।

পরে ওই রোগী প্রকৃত রিপোর্টের জন্য ১২ জানুয়ারি চট্রগামের একটি ডায়গনস্টিক সেন্টারে পরীক্ষা করলে বিলিরোবিনের পরিমাণ ৬.৭ আসে। একই রোগীর প্রায় ২৪ ঘন্টা সময়ের মধ্যে তিন ধরণের রিপোর্টে জন্ডিসের মত একটি জটিল রোগের ব্যাপক ব্যবধানের বিষয়টি জানাজানি হলে বিভিন্ন মহলে তোলপাড় শুরু হয়।

তিন ডায়গনস্টিক সেন্টারের ভিন্ন ভিন্ন রিপোর্টের বিষয়টি অনুসন্ধান করতে গিয়ে বেরিয়ে আসে ইস্কয়ার ল্যাবের রোগ নির্ণয়ে নামে সংশ্লিষ্টদের অবহেলার আর অনিয়মের বিষয়টি। এতে সাধারণ রোগীরা হয়রানি ও প্রতারণার স্বীকার হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঠিক নজরদারি ও তদারকি না থাকায় ওইসব ডায়গনস্টিক সেন্টারের মালিকরা তাদের খামখেয়ামীমত কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এ অভিযোগের বিষয়ে ইস্কয়ার ল্যাবের এক পরিচালক জানান, ‘এ ধরনের সামান্যতম ভুল হতে পারে এতে তেমন কোনো সমস্যা হবে না।’

ডায়াগনস্টিক সেন্টার গুলোর বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে অভিযোগ হতে পার পেয়ে যায় এ প্রতিষ্ঠানগুলো।

এ বিষয়ে ফেনী জেলা সিভিল সার্জেন ডাক্তার হাসান শাহরিয়ার কবির বুধবার এ প্রতিবেদককে জানান, এ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন থেকে এই সব অভিযোগের কথা অনেকের মুখে শুনছি, লিখিত অভিযোগ পেলে ২৪ ঘন্টার মধ্যে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নিবো।

এবিএন/মোহাম্মদ ইসমাইল/জসিম/স্বপ্না

ad

প্রধান শিরোনাম

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত