শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২ ফাল্গুন ১৪৩১
logo
  • হোম
  • সারাদেশ
  • আগামী ১২ এপ্রিল আদিবাসীদের ঐতিহ্যবাহী উৎসব ফুল বিজু

আগামী ১২ এপ্রিল আদিবাসীদের ঐতিহ্যবাহী উৎসব ফুল বিজু

আগামী ১২ এপ্রিল আদিবাসীদের ঐতিহ্যবাহী উৎসব ফুল বিজু

খাগড়াছড়ি, ০৭ এপ্রিল, এবিনিউজ : প্রতি বছরের ন্যায় এই বছর ও পালিত হচ্ছে আদিবাসীদের ঐতিহ্যবাহী প্রধান উৎসব বৈসু, সাংগ্রাই, বিজু ,বিষু ,বিহু ,সাংক্রান ইত্যাদি ।আসন্ন ঐতিহ্যবাহী উৎসব উপলক্ষ্যে থাকছে বিভিন্ন আয়োজন ।

বাংলাদেশের আদিবাসীদের প্রধান ঐতিহ্যবাহী উৎসব বৈসাবি সাধারণত তিন আদ্যাক্ষর নিয়ে সৃষ্টি। বৈসু, সাংগ্রাই, বিজু(ত্রিপুরা,মারমা,চাকমা) ঐতিহ্যবাহী উৎসবের প্রধান অক্ষরগুলোকে প্রাধান্য দিয়ে বৈসাবি শব্দটি উৎপত্তি হয় । যদিও এটি বিভিন্ন নামে প্রতিটি জাতিগোষ্ঠীর সংস্কৃতির নাম অনুসারে এখনো বিদ্যমান রয়েছে । বৈসু, সাংগ্রাই, বিজু ,বিষু ,বিহু ,সাংক্রান ইত্যাদি ।

বাংলাদেশে তিন আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর বর্ষবরণ উৎসব এটি। বৈসু, সাংগ্রাই, বিজু এই তিন নামের আদ্যাক্ষর নিয়ে বৈসাবি নামের উৎপত্তি। তারা বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয পালন করে বাংলা নববর্ষ। পুরনো বছরের কালিমা আর জীর্ণতাকে ধুয়ে নতুন বছরকে বরণ করে নেয তারা। আদিবাসীরা বর্ষবরণ উৎসব পালন করে বিভিন্ন নামে। কেউ বৈসু, কেউ সাংগ্রাই আবার কেউ বিজু। বর্ষবরণ উৎসবকে ত্রিপুরারা বৈসু, মারমারা সাংগ্রাই ও চাকমারা বিজু বলে অভিহিত করে এবং এগুলি বৈসাবি নামে পরিচিত। সাধারণত বছরের শেষ দুইদিন এবং নতুন বছরের প্রথম দিন বর্ষবরণ উৎসব বৈসাবি পালিত হয খাগডাছডড়ি বান্দরবান ও রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলায।

ত্রিপুরাদের বর্ষবরণ উৎসবের নাম বৈসু। বৈসু উৎসব এদের জীবনের সবচেযে বড উৎসব। বৈসু উৎসব একটানা তিন দিন পালন করা হয। এই তিন দিনের অনুষ্ঠানগুলির নাম হলো হারি বৈসু, বিসুমা বৈসু ও বিসিকাতাল বা আতাদাং বৈসু। বৈসু উৎসবের প্রথম দিন হারি বৈসু। এই দিন ভোরে ঘুম থেকে উঠে তারা ঘরদোর লেপেপোঁছে, বসতবাড়ি কাপডচোপড পরিস্কারপরিচ্ছন্ন করে। ত্রিপুরারা বিশেষ একপ্রকার গাছের পাতার রস আর হলুদের রস মিশিয়ে গোসল করে। ফুল দিয়ে ঘরবাড়ি সাজায। গবাদিপশুদের গোসল করানো হয এবং ফুল দিয়ে সাজানো হয়।

শিশুরা বাড়ি বাড়ি ফুল বিতরণ করে। তরণতরণীরা প্রিযজনকে ফুল উপহার দেয়। দেবতার নামে নদীতে বা ঝর্ণায ফুল ছিটিযে খুমকামীং পূজা দেওযা হয। কেউ কেউ পুষ্পপূজা করে। এদিন মহিলারা বিন্নি চাউলের পিঠা ও চোলাই মদ তৈরি করে। পুরষেরা বাঁশ ও বেত শিল্পের প্রতিযোগিতা ও খেলাধুলায মেতে উঠে। এদিন এরা দাং, গুদু, চুর, সুকুই, উদেং ও ওযাকারাই খেলায অংশগ্রহণ করে। জুম কৃষক পাডার মধ্যে হাঁসমুরগির জন্য শস্যদানা ছিটিয দেয। হারি বৈসু উৎসবের দিন থেকে এরা গরযা নৃত্য পরিবেশন শুর করে। এ নৃত্য সাত দিন থেকে আটাশ দিন পর্যন্ত চলে। ঢোলের তালে তালে সারিবদ্ধভাবে লোকজন নাচে। নাচ শেষে গরযা পূজার ব্যবস্থা করা হয।

উৎসবের দ্বিতীয দিন বিসুমাতে ত্রিপুরারা নববর্ষকে স্বাগত জানায, ধূপ, চন্দন ও প্রদীপ জ্বেলে পূজা দেয ও উপাসনা করে। সবাই গ্রাম থেকে গ্রামে ঘুর বেডায। বাড়িবাডিি গিয পাচন, সেমাই ও মিষ্টি খায এবং কলাপিঠা, চুযান পিঠা, জাল পিঠা, উন পিঠা ও মাযুং পিঠা খায। এছাডা এদিন তারা নিরামিষ ভোজন করে। কোনো প্রাণি বধ করে না। অনুষ্ঠানের তৃতীয দিন বিসিকাতালে আমিষ খাবার গ্রহণে বাধা নেই। এদিনও ফুল দেওযা হয ও উপাসনা করা হয। তারা বযয়োজ্যেষ্ঠদের গোসল করিয পাযরে কাছে পূজার নৈবেদ্য হিসেবে ফুল রাখে এবং প্রণাম করে। কেউ কিছু না খেয ফিরে না যায সেজন্য সারাদিন ঘরের দরজা খোলা থাকে। এতে গৃহস্থের কল্যাণ হবে বলে মনে করা হয।

মারমা আদিবাসীরা বর্ষবরণের এই উৎসব কে পালন করেন সাংগ্রাই নামে। এ উৎসব চলে ৪দিন ধরে। মারমাগণ সবাই বুদ্ধএর ছবি সহকারে নদীর তীরে যান এবং দুধ কিংবা চন্দন কাঠের জল দিযে এ ছবিটিকে স্নান করান। তারপর আবার এই ছবিটিকে আগের জাযগায অর্থাৎ মন্দির বা বাসাবাডড়িতে ফিরিয নিয যাওযা হয। মারমা লৈ সেই আদিকাল থেকে অন্যান্যআগামী ১২ এপ্রিল আদিবাসীদের ঐতিহ্যবাহী উৎসব ফুল বিজু।

সাংগ্রাইযরে উৎপত্তি নিযে মারমা ভাষায বিভিন্ন কল্পকাহিনী বিদ্যমান রযেেছ, যা এখনো মারমা বয়োজ্যেষ্ঠদের মুখে মুখে প্রচলিত। কবে থেকে মারমাদের সাংগ্রাই উদ্যাপন শুর হয এ ব্যাপারে সঠিক কোনো ইতিহাস এখনো পাওয যাযনি। সাংগ্রাই উৎসবটি মারমারা তিন দিনব্যাপী উদ্যাপন করে। সাংগ্রাইযরে প্রথম দিনকে মারমা ভাষায ‘সাংগ্রাই আক্যা’ বা ‘পাইং দোযাক’ (সাংগ্রাইযরে প্রথম দিন পুষ্প আহরণ)। দ্বিতীয দিনকে ‘সাংগ্রাই বাক্’ (সাংগ্রাইযরে দিন) এবং তৃতীয দিনকে ‘সাংগ্রাই আপ্যাইং’ (সাংগ্রাই বিদায) নামে পরিচিত। এই তিন দিন মারমারা নানা ধর্মীয আচার-অনুষ্ঠান, খেলাধুলা, খাওযা-দাওযার আযােজন করে ।

এবিএন/ইব্রাহিম শেখ/জসিম/স্বপ্না

ad

প্রধান শিরোনাম

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত