বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১ ফাল্গুন ১৪৩১
logo
  • হোম
  • সারাদেশ
  • শরীয়তপুরে ছাত্রলীগ নেতার শর্ট গানের গুলিতে গুলিবিদ্ধ ১১

শরীয়তপুরে ছাত্রলীগ নেতার শর্ট গানের গুলিতে গুলিবিদ্ধ ১১

শরীয়তপুরে ছাত্রলীগ নেতার শর্ট গানের গুলিতে গুলিবিদ্ধ ১১

শরীয়তপুর, ২২ এপ্রিল, এবিনিউজ : শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার গঙ্গানগর বাজারে শনিবার সকালে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র স্থানীয় আওয়ামীলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে ছাত্রলীগ নেতার শর্টগটনের গুলিতে ১১ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছে। এ সময়ে ককটেল ও ইটের আঘাতে আরো ৫/৬জন আহত হয়। তাদের জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ ভর্তি করা হয়। এর মধ্যে আশংকাজনক অবস্থায় দীপু কাজী নামে একজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এলাকায় এখনো থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাখতে এলাকায় পর্যাপ্ত পুলিশ মােতায়েন করা হয়েছে।

শরীয়তপুরে ছাত্রলীগ নেতার শর্ট গানের গুলিতে গুলিবিদ্ধ ১১

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জয়নগর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগ নেতা আমিনুল ইসলাম মিন্টু কাজী ও ঢাকা তেজগাঁও কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মিথুন ঢালীর সমর্থকদের মধ্যে স্থানীয় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দ্বন্দ চলে আসছিল। সম্প্রতি স্থানীয় মোল্যা বংশের মজিবর মোল্যা ও সুরুজ মোল্যার মধ্যে গঙ্গানগর বাজারের কাছে কিছু জমি নিয়ে দ্বন্দ সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে শালিস বৈঠক হয় একাধিকবার। সুরজ মোল্যা মিন্টু কাজীর সমর্থিত ও মজিবর মোল্যা ঢালী বংশের সমর্থিত হওয়ায় দ্বন্দ গিয়ে গড়ায় দুই গ্রুপের দুই নেতার উপর। এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনার সৃষ্টি হলে, শনিবার সকাল সাড়ে সাত টার দিকে মিথুন ঢালী ও তার ভাই শরীয়তপুর জেলা পরিষদের সদস্য সুজন ঢালীর সমর্থকরা আগ্নেয়াস্ত্র ও ককটেল নিয়ে স্থানীয় গঙ্গানগর বাজারে মিন্টু কাজীর সমর্থকদের উপর হামলা করে। এ সময় উভয় গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। সংঘর্ষের সময় মিথুন ঢালী ও তার লোকেরা শর্ট গান দিয়ে এলোপাথারি গুলি করলে মিন্টু কাজী গ্রুপের ১১ জন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারাত্মক আহত হয়। সংঘর্ষের সময় গঙ্গানগর বাজারের হালিম বেপারী, জহির আকন, দোলন কাজী, সিরাজ কাজী ও হামেদ সরদারসহ ১০/১২ জন ব্যবসায়ীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করা ও কোপানো হয়।

আহতরা হলেন, আলতু কাজীর ছেলে মান্নান কাজী ও সোহরাব কাজী, করীম কাজীর ছেলে শাহনেওয়াজ কাজী, মজিবুর কাজীর ছেলে দীপু কাজী, সিরাজ সরদারের ছেলে ফারুক সরদার, কাশেম কাজীর ছেলে রাজু কাজী, শফিক শিকদারের ছেলে খালেক শিকদার, কাশেম মুন্সির ছেলে সোহাগ মুন্সি, বারেক মুন্সির ছেলে সৈকত মুন্সি, হোসেন মুন্সির ছেলে বাবুল মুন্সি ও খালেক মীরের ছেলে রাজিব মীর। আহতদের জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এদের মধ্যে দীপু কাজীর শরীরে শর্ট গানের অসংখ্য স্প্রিন্টার বিদ্ধ হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

শরীয়তপুরে ছাত্রলীগ নেতার শর্ট গানের গুলিতে গুলিবিদ্ধ ১১

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শর্টগানের গুলিতে আহতরা জানিয়েছেন, ঢাকা তেজগাও কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মিথুন ঢালী ও তার ভাই শরীয়তপুর জেলা পরিষদের নির্বাচিত সদস্য সুজন ঢালী আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে তাদের উপর অকাতরে গুলি করে। এসময় গুলির শব্দে লোকজন পালিয়ে যেতে থাকে। বাজারের দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।

গঙ্গানগর বাজারের ব্যবসায়ী জহির আকন উল্টে অভিযোগ করে বলেন, মিন্টু কাজীর সমর্থকেরা আমার দোকানে হামলা করে দোকান কুপিয়ে ভাংচুর করেছে।

মিথুন ঢালী মুঠোফোনে এবিনিউজকে বলেন, কিছুদিন আগে একটা পক্ষ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বাজারে মহরা দিয়েছে। তারাই আজ হামলা করেছে। আমি কোন সংঘর্ষে অংশ নেইনি। এলাকার মানুষ আমাকে ভালোবাসে। আমার সুনাম ক্ষুন্ন করার জন্য একটি মহল পরিকল্পিতভাবে, একটি ছক তৈরি করে আমার বিরুদ্ধে এই অপ-প্রচার করেছ।

জয়নগর ইউনিয়নের নাবেক চেয়ারম্যান কাজী আমিনুল ইসলাম মিন্টু বলেন, আমার সমর্থক সুরুজ মোল্যার সাথে তার বংশীয় মজিবুর মোল্যার জমি নিয়ে দ্বন্দ ছিল। এই দ্বন্দ নিরসনের জন্য সালিশ বৈঠক করা হয়েছে। মিথুন ঢালী মজিবুর মোল্যার পক্ষ নিয়ে এলাকায় কিছুদিন যাবৎ ত্রাস সৃষ্টি করে আসছে। আমি বর্তমানে ঢাকায় অবস্থান করছি। শনিবার মিথুন-সুজন দুই ভাই সকালে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আমার সমর্থিতদের উপর অতর্কিতে হামলা চালায়। এ সময় এলাকার কিছু মুরুব্বী ও নিরহ মানুষ বাধা দেয়ায় তাদের পাখির মত গুলি করে আহত করে।

জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডাক্তার নাজমুল হক রনি বলেন, আমাদের হাসপাতালে ১১ জন রুগি ভর্তি হয়েছে। তাদের প্রত্যেকের শরীরে অসংখ্য ছিটা গুলির আঘাত রয়েছে। একজনের অবস্তা অশংকাজনক হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে।

জাজিরা থানার ওসি মো. নজরুল ইসলাম বলেন, গঙ্গানগরে স্থানীয় কাজী ও ঢালী বংশের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার কেন্দ্র করে দীর্ঘ দিন থেকে দ্বন্দ চলে আসছিল। শনিবার সকালে জমিজমা সংক্রান্ত বিষয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে এক পক্ষের গুলিতে অপর পক্ষের কয়েকজন আহত হন। এলাকার পরিস্থিতি বর্তমানে পুলিশের নিয়ন্ত্রনে রয়েছে। থানায় এখনো কোন মামলা হয়নি। তবে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

এবিএন/জনি/জসিম/কাজী নজরুল ইসলাম

ad

প্রধান শিরোনাম

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত