![খাগড়াছড়িতে ঘূর্ণিঝড়ে ঘর-বাড়ি বিধ্বস্ত](https://archive.abnews24.com/assets/images/news_images/2017/04/25/chori@abnews_74488.jpg)
খাগড়াছড়ি, ২৫ এপ্রিল, এবিনিউজ : খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার দীঘিনালা উপজেলার তারাবুনিয়া এলাকা দিয়ে বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড়ে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ভোর ৫টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এতে গ্রামের দুই শতাধিক ঘর-বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া মাইনী নদীর উপর নির্মিত ঝুলন্ত সেতুটি উল্টে যায়। ফলে হাচিনসনপুর এবং বোয়ালখালী এলাকার লোকজনের চলাচল বন্ধ রয়েছে। মঙ্গলবার সকালে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নব কমল চাকমা এবং কবাখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো: জাহাঙ্গীর হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, আজ মঙ্গলবার সকালে উপজেলার তারাবুনিয়া গ্রামে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে ঘর-বাড়ি, ঘরের আসবাবপত্র। উপড়ে পড়ে আছে, বড় বড় গাছ। অনেকে ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষতি সামলে নিতে মালামাল গোছানোর চেষ্টা করেছেন।
এসময় কথা হয় তারাবুনিয়া গ্রামের চন্দ্র আলো(২৮) জানান, আমরা তিন সন্তান, স্ত্রীসহ ঘূর্ণিঝড় চলার সময় ঘরেই ছিলাম। কিছু বুঝার আগেই পুরো ঘরটি আমাদের উপর আছড়ে পড়ে। দুই মিনিট পরেই চাপা পড়া ঘর থেকে বের হয়ে দেখি, চারপাশে বসতঘর ভেঙ্গে তছনছ হয়ে আছে। পূর্ণরাস চাকমা(২৮) জানান, আমরা ঘরে ছিলাম। হঠাৎ বাতাস এসেই আমার ঘরের চাল উড়িয়ে নিয়ে ফেলে দিয়েছে।
অঙ্গলাল চাকমা(৭৫) জানান, বিভিন্ন ফলের গাছ-গাছালি নিয়ে আমার ছিল বাগান বাড়ি। ঘূর্ণিঝড়ে আমার ঘরের চাল উড়িয়ে নিয়ে ক্ষান্ত হয়নি। এসময় বাগানের আম, লিচু, কাঠাল, আমড়া গাছগুলো ভেঙ্গে তছনছ করে দিয়েছে। মনে হচ্ছে, দুই মিনিটের বাতাসে পুরো গ্রামকে ছিন্নভিন্ন করে দিয়েছে।
এ ব্যাপারে তারাবুনিয়া এলাকার মেম্বার মো: সামসু জানান, তারাবুনিয়া দশবল বৌদ্ধ বিহারসহ প্রায় দুইশতাধিক ঘরবাড়ি ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এর মধ্যে কারো কারো পুরো ঘরই উপড়ে ফেলেছে। কারো আবার আংশিক। এছাড়া পুরো গ্রামে বিভিন্ন ফলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া মাইনী নদীর উপর নির্মিত সেতুটি উল্টে যাওয়ার ফলে এলাকাবাসী এবং দুটি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের চরম দুর্ভোগে পড়েছে। তাই সেতুটি দ্রুত মেরামতের জন্য এলাকাবাসীর পক্ষে জোড় দাবি জানাচ্ছি।
এব্যাপারে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নব কমল চাকমা জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ক্ষতিগ্রস্তদের নামের তালিকা প্রনয়ন করা হচ্ছে। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে পরামর্শ করে, খুব শীঘ্রই ত্রান-সহযোগিতার ব্যব্স্থা করা হবে।
এদিকে জেলার পানছড়ি উপজেলা বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর হেলে একটি বৈদ্যুতিক খুঁটির সাথে কোন রকম আটকে আছে। যে কোন মুহুর্তে ধসে পড়ে ঘটে যেতে পারে মারাত্মক দুর্ঘটনা। এ নিয়ে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও পথচারীদের মাঝে বিরাজ করছে চরম আতঙ্ক।
সরেজমিনে দেখা যায়, গত তিন-চার দিনের প্রবল বর্ষণে পানছড়ি বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের দক্ষিণ দিকের সীমানা প্রাচীরের প্রায় একশত ফুট দেয়াল ধসে হেলে পড়েছে। তাছাড়া বড় বড় ফাটলও রয়েছে।
সকাল ১০টার দিকে বিদ্যালয় প্রধান অলি আহাম্মদ লাল ফিতার বিপদ সংকেত লাগিয়ে জায়গাটি বাঁশের খুঁটি দিয়ে ঘেরাও করে রেখেছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন পানছড়িতে সদ্য যোগ দেয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: আবুল কাশেম ও ৩নং পানছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান মো: নাজির হোসেন।
এবিএন/চাইথোয়াই মারমা/জসিম/বিদ্যুৎ