শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২ ফাল্গুন ১৪৩১
logo
  • হোম
  • সারাদেশ
  • মা‌নিকগ‌ঞ্জে একটি বাড়ির জন্য ‌কো‌টি টাকার সেতু নির্মাণ!

মা‌নিকগ‌ঞ্জে একটি বাড়ির জন্য ‌কো‌টি টাকার সেতু নির্মাণ!

মা‌নিকগ‌ঞ্জে একটি বাড়ির জন্য ‌কো‌টি টাকার সেতু নির্মাণ!

মানিকগঞ্জ, ১০ মে, এবিনিউজ : মানিকগঞ্জের ঘিওর উপ‌জেলায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) তত্বাবধানে নির্মিত হচ্ছে একটি সেতু। কিন্তু প্রায় কোটি টাকা বাজেটের এই সেতুটির সুবিধাভোগী হবে হাতে গোনা কয়েকজন মানুষ।

প্রায় কোটি টাকা বাজেটের এই সেতুটি তৈ‌রি হ‌চ্ছে বিশেষ একটি বাড়ির সীমিত সংখ্যক মানুষের জন্য। এক‌টি বা‌ড়ির লোক‌দের জন্য কোটি টাকার সেতু নির্মাণে হতবাক এলাকাবাসী।

আর মানিকগঞ্জ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলীর দা‌বি স্থানীয় জনগণের চাহিদার ভিত্তিইে সেতুটি নির্মাণ করা হচ্ছে।

জানা গে‌ছে, ঢাকাস্থ মানিকগঞ্জ সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক সালাউদ্দিন কুটু, উচ্চ পর্যায়ে তদবিরের মাধ্যমে এই সেতুর কাজ করাচ্ছেন। মূলত তার বাড়ির ৫/৬ জন সদস্যদের জন্যই এই সেতু নির্মাণ করে দিচ্ছে এলজিইডি।

মানিকগঞ্জ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় সূ‌ত্রে জানা যায়,মা‌নিকগ‌ঞ্জের ঘিওর উপ‌জেলার বানিয়াজুরি-ঘিওর সড়কের পাশেই পুঠিয়াজানি গ্রামে জাবরা খালের ওপর ২১ মিটার দৈর্ঘ্য ও সাড়ে ৪ মিটার প্রস্থের একটি সেতু নির্মাণ হচ্ছে। ৮৬ লাখ টাকা বাজেটের এই সেতুটির গোড়ায় নেই সংযোগ সড়ক, নেই চলাচলের রাস্তা।

ঢাকাস্থ মানিকগঞ্জ সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক সালাউদ্দিন কুটু বলেন, আমি এলজিইডি কর্তৃপক্ষকে একটি সেতুর কথা বলেছিলাম। তারা নিজেরাই মাপজোখ করে এই সেতু নির্মাণ করে দিচ্ছে। এখন তারা ছোট সেতু করে দিবে, না বড় দিবে সেটি তাদের ব্যাপার। এত বড় সেতু নির্মাণে আমি নিজেও বিব্রত।

কুটুর প্রতিবেশী আবুল কাশেম জানায়, কুটু ও তাদের বাড়ির পাশে মোট ৫/৬টি বাড়ি রয়েছে। ওই সেতু নির্মাণের ব্যাপারে তাদের সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনা হয়নি। কুটু নিজেই তদবির করে ওই সেতুর কাজ করাচ্ছেন। এই সেতুতে তার কিছুটা জায়গা পড়েছিল। সেখানে কয়েকটি বড় বড় গাছ ছিল, সেগুলো কেটে ফেলা হয়েছে। উপজেলা এলজিইডিকে জানানো হলেও তারা বিষয়টি আমলে নেয়নি। সালাউদ্দিন কুটুর তদবিরের সেতু নির্মাণ হচ্ছে মরহুম মুক্তিযোদ্ধা বরকত আলীর জায়গায়।

বরকত আলীর স্ত্রী জবেলা খাতুন জানায়, এই সেতুতে তার ৭/৮ শতাংশ জায়গা চলে গেছে। এর জন্য তাকে কোনো ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়নি।

সরেজমিন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, এই জাবরা খালেই কুটুর বাড়ির আগে আরো কয়েকটি সেতু রয়েছে। একেবারে সরু এসব সেতু দিয়ে প্রতিদিন চলাচল করে অসংখ্য মানুষ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুর্গাবাড়ি এলাকার কয়েকজন জানিয়েছেন, সরু ভাঙ্গাচোরা সেতু দিয়ে প্রতিদিন শতশত মানুষ চলাচল করে। আর কুটুর বাড়ির সামনে কয়েকজন মানুষের চলাচলের জন্য এত বড় সেতু সরকার কিভাবে করে দিচ্ছে বিষয়টি অত্যন্ত চিন্তনীয়। ওই বাড়ির সামনে বেশি হলে দুই তিন লাখ টাকা দিয়ে একটি বক্স কালভার্ট করে দিতে পারত।

বানিয়াজুরি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম চতু জানান, এক ব্যক্তির স্বার্থেই ওই সেতু নির্মাণ হচ্ছে। ঘিওরে এমনও অনেক জায়গা রয়েছে যেখানে সেতুর অভাবে হাজারো মানুষ কষ্টে রয়েছে। জনস্বার্থে সেতুটি নির্মিত হলে অনেক মানুষ উপকৃত হতো।

এ ব্যাপারে মানিকগঞ্জ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. বারেক হাওলাদার বলেন, স্থানীয় জনগণের চাহিদার ভিত্তিইে সেতুটি নির্মাণ করা হচ্ছে।

এবিএন/‌মো: সো‌হেল রানা খান/মমিন/জসিম

ad

প্রধান শিরোনাম

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত