![বসত বাড়ির আঙ্গিনায় আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ করে স্বাবলম্বী বীর সিংহ ত্রিপুরা](https://archive.abnews24.com/assets/images/news_images/2017/05/13/sim@abnews_77613.jpg)
খাগড়াছড়ি, ১৩ মে, এবিনিউজ : খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার ভাইবোনছড়া ইউনিয়নের বীর সিংহ ত্রিপুরা একজন খেটে খাওয়া মানুষ। স্ত্রী ও চার ছেলে-মেয়ে নিয়ে তাঁর ছোট সংসার। বীর সিংহ ত্রিপুরার ছোট মেয়ে স্নাতকে অধ্যয়নরত। কৃষি কাজের মাধ্যেমেই সংসারের সকল খরচ ও মেয়ের পড়ালেখার খরচ মেটাতে হয়। বীর সিংহ ত্রিপুরা দীর্ঘদিন যাবৎ সনাতন পদ্ধতিতেই চাষাবাদ করে আসছে। কারন আধুনিক পদ্ধতির চাষাবাদ সম্পর্কে তাঁর ধারণা খুবই কম থাকায় খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা প্রকল্পের আওতায় পরিচালিত কৃষক মাঠ হতে আধুনিক কৃষি চাষাবাদ পদ্ধতি সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করেন।
বীর সিংহ ত্রিপুরা বলেন, আমি আগে সনাতন পদ্ধতিতে চাষ করতাম এতে ফলন তেমন ভাল হতো না। কৃষক মাঠ স্কুল হতে আধুনিক পদ্ধতিতে কিভাবে চাষাবাদ করতে হয় তা শিখেছি। বর্তমানে আমি কলা, বেগুন, লাউ, শিম,আদা ,হলুদ চাষ করছি। তিনি আরও বলেন, আমি আগে বাজার হতে রাসায়নিক সার ক্রয় করে ব্যবহার করতাম ফলে ফসল উৎপাদনে খরচ বেশি হতো। কিন্তু বর্তমানে বসতবাড়ির ময়লা আবর্জনা হতে জৈব সার তৈরী করে তা সবজি ও অন্যান্য ফসল ক্ষেতে প্রয়োগ করছি।
এতে রাসায়নিক সার ক্রয় না করে যেমন আমার আনুমানিক ২০০০-৩০০০ টাকা সাশ্রয় হচ্ছে তেমনি ভাবে জমির উর্বরতা শক্তিও অটুট থাকছে। আমার বসত ভিটা একটু টিলার ওপরে হওয়ায় সেচ সুবিধা কম। তাই আগে পানি সেচের অভাবে ফসলের বৃদ্ধি ও উৎপাদন ব্যাহত হতো। কিš‘ কৃষক মাঠ স্কুল হতে আমি শিখেছি কিভাবে মালচিং করতে হয় এবং শুষ্ক মৌসুমে ফলগাছে কিভাবে সেচ প্রদান করতে হয় । এ পদ্ধতি অনুসরণ করায় বর্তমানে কম পানি সেচ দিতে হয়।
এছাড়া আধুনিক পদ্ধতিতে মুরগি পালন সম্পর্কে শিখেছি। বর্তমানে আমার পরিবারে ৪০ টি মুরগী আছে এছাড়া গত ৩ মাসে ৭৫০০ টাকার মুরগি বিক্রয় করেছি। মুরগী বিক্রীর টাকায় বর্তমানে ১টি গর ক্রয় করেছি এবং আগে আমার ৪টি ছাগল ছিল বর্তমানে আমার ছাগলের সংখ্যা ৬টি। আগে বাজার থেকে শাক-সবজি কিনে খেতে হতো বর্তমানে বাড়িতে উৎপাদিত শাক-সবজি খেয়ে আরও বিক্রী করতে পারছি।
ফসল বিক্রির আয় দিয়ে আমার মেয়ের কলেজের লেখাপড়ার খরচ ও পরিবারের অন্যান্য খরচ চালায়। তার এ পরিবর্তন দেখে আশেপাশের লোকজনও আধুনিক চাষাবাদে আগ্রহী হচ্ছে। ভবিষ্যতে আমার পরিকল্পনা আছে গর ও ছাগলের সংখ্যা বৃদ্ধি করা এবং মুরগি পালনের আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার করে মুরগি ও ডিমের উৎপাদন বৃদ্ধি করা।এবং আমার গ্রামের অন্যান্য কৃষকদের ও আধুনিক চাষাবাদে আগ্রহী করা। আমি আশাকরি এ প্রকল্প চলমান থাকলে কৃষকরা আধুনিক পদ্ধতি অনুসরণ করে চাষাবাদ করে নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারবে।
এবিএন/ইব্রাহিম শেখ/মমিন/জসিম