![মানিকগঞ্জে পাউবো’র সম্পত্তি দখলের অভিযোগ](https://archive.abnews24.com/assets/images/news_images/2017/05/14/manikgonj@abnews_77753.jpg)
মানিকগঞ্জ, ১৪ মে, এবিনিউজ : মানিকগঞ্জ জেলার ঘিওর উপজেলার বানীয়াজুরি ইউনিয়নের পানি উন্নয়ন বোর্ডের সম্পত্তি দিনদিন বেদখল হয়ে যাচ্ছে।
এক শ্রেণির অসাধু প্রভাবশালীরা ভুয়া কাগজ নিজ নামে করে এখন জমির মালিকানা দাবি করছে। আর সেখান থেকে প্রতিনিয়ত লাখ লাখ টাকার মাটি বিক্রি করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশ ঘেঁষে নয়াচর, তাড়াইল, কাকজোড় গ্রামের ৭১.২৬ একর ভূমি (৬৪/৭০-৭১ ইং সালে এল.এ.কেস নং) বেড়িবাঁধের প্রয়োজনে পানি উন্নয়ন বোর্ড অধিগ্রহণ করে। কিন্তু পরবর্তীতে বাঁধের কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকে। এই সুযোগে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের এক শ্রেণির অসাধু কর্মকর্তা ও দলিল লেখকদের সহযোগিতায় জাল দলিল বানিয়ে তা কেনাবেচা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সব এলাকায় কতিপয় চিহ্নিত ভূমিদস্যুর দাপটে অসহায় হয়ে পড়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও এলাকাবাসী।
এ নিয়ে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে উপজেলা ও জেলা প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোনো সুফল পাচ্ছেন না ভুক্তভোগীরা। উল্টো ভূমিদস্যুদের দাপটে মামলা হামলার শিকার হচ্ছেন অনেকেই। আবার নিজের নাম করে পাউবো ও পার্শ্ববর্তী কৃষকদের মালিকানাধীন জায়গা থেকে জোরপূর্বক ভেকু ও ড্রেজার বসিয়ে অবৈধভাবে লাখ লাখ টাকার মাটি বিক্রি করে আসছে।
কাকজোর গ্রামের নাছিমা বেগম জানান, এলাকার ভূমিদস্যু ও মামলাবাজ হিসেবে পরিচিত আবদুল আউয়াল আনছারী, কাকজোড় গ্রামের ইন্তাজ সিকদারের ছেলে আলম সিকদারের কাছ থেকে নয়াচর-তাড়াইলের মৌজার জে.এল. নং-১৫১, আর,এস ২৮৮ খতিয়ানভুক্ত ১৪৭১/১৭৭০নং দাগের সাড়ে ৮ ডিসেমল জায়গা ২০০৬ সালের ২ এপ্রিল দলিল করে নেয়।
তিনি আরও বলেন, শুধু এই জায়গাই নয় সরকারি ও ব্যক্তিগত ঝামেলাযুক্ত জায়গা তিনি নামমাত্র দরে কিনে প্রভাব খাটিয়ে দখল করে নেয়।
রজ্জব আলী শিকদার জানায়, আমার চাচার কাছ থেকে যে জায়গা কিনে নিয়েছে তা আমরা এতদিন জানতাম না। চাচা মারা যাওয়ার পর আওয়াল আনছারী দাবি করছে যে আমি এই জায়গা তোমার চাচার কাছ থেকে কিনে নিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, ওই জায়গাতো পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে একবার বিক্রি করছিল আমার বাপ-চাচারা। সে জমি কিভাবে আওয়াল মালিক হয় বুঝতে পারছি না।
অভিযুক্ত আবদুল আউয়াল আনছারী এ ব্যাপারে বলেন, কাগজপত্র দেখেই কিনেছি। আমার নামে নিউজ করে কোনো লাভ নাই। আমার উপরে অনেক লোকের খুঁটির জোর আছে। ঝামেলা করলে আপনাদের দেখে নেওয়া হবে।
২০০৬ সালের দলিল সম্পাদনকারী সাব-রেজিস্ট্রার রুহুল ইসলাম বর্তমানে তার কর্মস্থল পরিবর্তন হওয়ায় তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
ঘিওর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীমা খন্দকার জানান, দ্রুত সময়ের ভেতর এই ভূমিদস্যু ও অবৈধ মাটি উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী হাসান মাহমুদ বলেন, বিষয়টি জানার পর আমরা অবৈধ দখলদারদের অনুপ্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করে সাইনবোর্ড টানিয়ে দিয়েছি। ভুয়া দলিলে পাউবোর জায়গা বিক্রির বিষয়টি আমাদের জানা ছিল না। তবে দ্রুতই আমাদের কর্মকর্তারা গিয়ে ব্যবস্থা নেবেন এবং পাউবোর আওতাধীন জায়গা দখলকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এবিএন/মো: সোহেল রানা খান/জসিম/নির্ঝর