শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২ ফাল্গুন ১৪৩১
logo
  • হোম
  • সারাদেশ
  • খাগড়াছড়িতে পাজেপ সদস্যসহ ৬৪নেতাকর্মীদের মধ্যে আটক-৫

খাগড়াছড়িতে পাজেপ সদস্যসহ ৬৪নেতাকর্মীদের মধ্যে আটক-৫

খাগড়াছড়িতে পাজেপ সদস্যসহ ৬৪নেতাকর্মীদের মধ্যে আটক-৫

খাগড়াছড়ি, ২২ মে, এবিনিউজ : খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা নুনছড়ি থলিপাড়ায় চিরঞ্জয় ত্রিপুরা ও তার ছেলে কর্ণ জ্যোতি ত্রিপুরাকে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা এবং ১ নারীকে গণধর্ষণের ঘটনায় এ পর্যন্ত ৫জনকে আটক করেছে পুলিশ। রোববার ভোর রাতে জেলা সদরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। খাগড়াছড়ি সদর উপজলোয় ব্যবসায়ী চিরঞ্জয় ত্রিপুরা ও তার ছেলে র্কণ জ্যোতি ত্রিপুরাকে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা এবং নারীদের গণধর্ষণের অভিযোগ এনে সদর উপজলো আওয়ামীলীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ সদস্য খোকনেশ্বের ত্রিপুরা ও মংশিপ্রু চৌধুরী অপুসহ ৬৪জনকে আসামী করে জেলা সদর মডেল থানায় মামলা করা হয়েছে। শুত্রবার রাতে নিহত চিরঞ্জয় ত্রিপুরার ছেলে নিহার ত্রিপুরা বাদী হয়ে এই মামলা দায়ের করেন।

খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) তারেক আব্দুল হান্নান জানান, গত বৃহস্পতিবার রাত ৮টর দিকে জেলা সদরের থলিপাড়া এলাকায় কালিবন্ধু ত্রিপুরা ও তার সন্ত্রাসী হামলায় ব্যবসায়ী চিরঞ্জয় ত্রিপুরা ও তার ছেলে কর্ণ জ্যোতি ত্রিপুরা নিহত হয়। হামলায় গুরুতর আহত হয় চিরঞ্জয় ত্রিপুরার স্ত্রী ভবেলক্ষী ত্রিপুরা ও ছেলে কর্ণ জ্যোতি ত্রিপুরার স্ত্রী বিজলি ত্রিপুরা। এ সময় সন্ত্রাসীরা নারীদের উপর পাশবিক নির্যাতন চালায়।

তারা এখন খাগড়াছড়ি জেলা সদর আধুনিক হাসপাতালে চিকিৎধীন রয়েছে। এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে নিহত চিরঞ্জয় ত্রিপুরার ছেলে নিহার ত্রিপুরা বাদী হয়ে খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ সদস্য খোকনেশ্বর ত্রিপুরা, জেলা আওয়ামীলীগের নেতা মংশেপ্রু চৌধুরী অপু এবং ইউপি সদস্য কালিবন্ধু ত্রিপুরাসহ ৩৪জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতসহ মোট ৬৪জনকে আসামি করে খাগড়াছড়ি সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করে। মামলার পর পুলিশ জেলা সদরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে এ পর্যন্ত ৫জনকে আটক করেছে। আটককৃতদের মধ্যে ৩জন নারী রয়েছে।

খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তারেক আব্দুল হান্নান মামলার বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে বলনে, মামলায় সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ সদস্য খোকনেশ্বের ত্রিপুরা ও আওয়ামীলীগের নেতা মংশিপ্রু চৌধুরী অপু এবং ইউপি সদস্য কালিবন্ধু ত্রিপুরাসহ ৩৪ জনরে নাম উল্লেখ্য করে আরো ৩০জনকে অজ্ঞাত আসামী করে মামলাটি দায়ের করা হয়। পুলিশ আসামিদের গ্রেফতারে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছে।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতবিার রাত ৯টার দিকে দেবতা পুকুরে থলিপাড়া এলাকায় কালিবন্ধু ত্রিপুরা ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর হামলায় ব্যবসায়ী চিরঞ্জয় ত্রিপুরা ও তার ছেলে র্কণ জ্যোতি ত্রিপুরা নিহত এবং চিরঞ্জয় ত্রিপুরার স্ত্রী ভবেলক্ষী ত্রিপুরা ও ছেলে র্কণ জ্যোতি ত্রিপুরার স্ত্রী বিজলি ত্রিপুরা গুরতর আহত হন।

সন্ত্রাসীরা ব্যবসায়ী চিরঞ্জয় ত্রিপুরা ও তার ছেলে র্কণ জ্যোতি ত্রিপুরা প্রথমে গুলি ও পরে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করে। এ সময় চিরঞ্জয় ত্রিপুরার স্ত্রী ভবেলক্ষী ত্রিপুরা ও ছেলে র্কণ জ্যোতি ত্রিপুরার স্ত্রী নারী কার্বারী বিজলি ত্রিপুরা পাশবিক নির্যাতনরে শিকার হয়। তারা এখন খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন।

এদিকে আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক নির্মূলেন্দু চৌধুরী এক বিবৃতিতে বলেন, আওয়ামী লীগের সুনামকে নষ্ট করার লক্ষ্যে একটি মহল এবং প্রকৃত দোষীদের বাচানোর পায়তারা করার জন্য আওয়ামী লীগের নেতাকে আসামী করেছে। এই ঘৃনিত চক্রান্তের প্রতিবাদে নিন্দা জানিয়েছে। থলিপাড়ায় পিতা-পুত্র হত্যাকান্ডের ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন ও দোষীদের গ্রেফতারের দাবী জানিয়েছে খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগ। খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার থলিপাড়া এলাকায় গত ১১মে ২০১৭, রোজ-বৃহস্পতিবার রাত আনুমানিক ৮টার দিকে পারিবারিক বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত স্থানীয় গ্রামবাসী চিরঞ্জিব ত্রিপুরা(৫৫), তার পুত্র কর্ণ ত্রিপুরা(৩০) এবং নিহত চিরঞ্জিব ত্রিপুরার স্ত্রী ভবেলক্ষী ত্রিপুরা(৪৫) ও পুত্রবধু বিজলী ত্রিপুরা(২৫) আহত হওয়ার ঘটনায় খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগ তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগ এ ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদ্ঘাটন, প্রকৃত দোষীদের গ্রেফতার পূর্বক আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির জোর দাবি জানাচ্ছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে প্রেরিত বিবৃতিতে খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক নির্মলেন্দু চৌধুরী জানান, এটি একটি নৃশংস হৃদয় বিদারক হত্যাকান্ড। এ ঘটনায় খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগ পরিবার মর্মাহত। ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত এ নৃশংস হত্যাকান্ডের বিষয়টি পারিবারিক অভিযোগ, স্থানীয় সূত্র ও খাগড়াছড়ি পুলিশ ও প্রশাসনের বরাত দিয়ে জানা গেছে, ঘটনাটির পারিবারিক দ্বন্ধের কারনে সংঘটিত হয়েছে। অথচ, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার শান্তিপূর্ণ পরিবেশকে অশান্ত করতে একটি মহল প্রকৃত ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে অপরাজনীতির মাধ্যমে রাজনৈতিক ফায়দা লুটার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

বিবৃতিতে তিনি আরো বলেন, নিরীহ গ্রামবাসী পিতা-পুত্র হত্যাকান্ডের ঘটনায় প্রকৃত রহস্য উদঘাটন, খুনীদের গ্রেফতার পূর্বক শাস্তি প্রদান নিশ্চিত করনে প্রশাসনকে সকল প্রকার সহযোগিতা প্রদানে অনড় অবস্থানে রয়েছে খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগ।

এ নিয়ে কোন প্রকার অপরাজনীতি, দুষ্টচক্রের পায়তারা রোধকল্পে খাগড়াছড়ি জেলার সর্বস্তরের জনসাধারন, জেলা আওয়ামীলীগের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মী এবং স্থানীয় প্রশাসনকে সজাগ থাকার আহবান জানিয়েছেন খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগ। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ, খাগড়াছড়ি জেলা শাখা সাধারন সম্পাদক(ভারপ্রাপ্ত) নির্মলেন্দু চৌধুরী স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

এবিএন/চাইথোয়াই মারমা/জসিম/নির্ঝর

ad

প্রধান শিরোনাম

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত