![মতলবে ঈদের বাজার জমজমাট : ক্রেতা সাধারণের উপচেপড়া ভীড়](https://archive.abnews24.com/assets/images/news_images/2017/06/20/abnews-24.bbbbbbbbbbbbbbbbb_84328.jpg)
চাঁদপুর, ২০ জুন, এবিনিউজ : পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে চাঁদপুরের মতলব সদর বাজার সহ উপজেলার ১৭/১৮টি ছোট বড় বাজারে ঈদের পোষাক সহ অন্যান্য জিনিসপত্র কেনা কাটায় ঈদের বাজার জমজমাট হয়ে উঠেছে। এর ফলে দিন দিন বাজারগুলোতে ক্রেতা সাধারণের লক্ষ্যনীয় কেনা কাটা দৃষ্টি গোচর হচ্ছে। তবে বাজারে আগত অনেকেই ছোট খাট ছিনতাইয়ের কবলে পড়ছে। যার ফলে প্রধান প্রধান বাজারগুলোতে পুলিশি টহল জরুরী হয়ে পড়েছে। সরজমিনে দেখা যায়, ঈদের কেনা কাটার জন্য ব্যাংক গুলোতে ভীড় বাড়ছে। সেখানে প্রবাসীরা তাদের পরিবার পরিজনের ঈদের কেনা কাটার জন্য টাকা পয়সা পাঠাচ্ছেন। আর সেগুলো তুলতে গিয়ে অনেকেই হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলে একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত বছরের ঈদের সময় ব্যাংকে একাধিক ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে এবং অনেকে মলমপার্টির খপ্পরে পড়ে সর্বশান্ত হয়েছে।
আর ৫ দিন পর পবিত্র ঈদুল ফিতর। সকলের মাঝে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনা লক্ষ্য করা গেছে। নাড়ীর টানে ঈদকে সামনে রেখে শহর থেকে বাড়ী ফিরবে মানুষ। বিভিন্ন লঞ্চ, বাস, সিএনজি, অটোরিক্সা স্ট্যান্ডগুলোতে যাত্রীদের উপচেপড়া ভীড় থাকবে। মতলব বাজারের বিভিন্ন দোকানগুলোতেও ক্রেতাদের উপচেপড়া ভীড় লক্ষ্য করা গেছে। ব্যবসায়ীরাও মনের আনন্দে ক্রেতাদের কাছে চাহিদা অনুযায়ী মালামাল বিক্রি করছেন। উপজেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বাজারগুলোতে পুলিশী টহলের প্রয়োজন। বিশেষ করে মুদি, গার্মেন্টস, জুতা ও কাপড়ের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভীড়। এছাড়া দেখা যায়, মার্কেটগুলোতে ধনী বিশেষ করে প্রবাসী পরিবারের লোকজনের কেনাকাটাই বেশী। ফলে নিম্ন মধ্যবিত্ত ও গরীব মানুষের ঈদের কেনাকাটা সাধ্যের বাহিরে দিন দিন বেড়েই চলছে। শহীদ জহির প্লাজার একাধিক ব্যবসায়ী সেলিম, বাবু, নাজির, লিখন, শিমুল, হাসান, হাসনাত, সোহেল, খোরশেদ, জহির জানান- ঈদের আরো ৬ দিন বাকী। আরো কয়েকদিন পরে মালামাল বিক্রি বেশী হবে। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার বেচাকেনা কিছুটা কম। কারণ দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির কারণে ক্রেতাদের ক্রয় ক্ষমতার বাহিরে থাকায় এবার বিক্রি কম হচ্ছে। কাপড়ের দোকানের চাইতে গার্মেন্টস দোকানগুলোতে বেশী ভীড় দেখা যায়। উঠতি বয়সের যুবক যুবতীরা তাদের পছন্দের বিভিন্ন পোষাক ক্রয় করছে। কেউ কেউ আবার টেইলারী দোকানের মাধ্যমে পোষাক তৈরী করছে। অন্যদিকে ষ্ট্রেশনারী ও পুষ্পালয়গুলোতেও ক্রেতাদের ভীড় দেখা গেছে। যদিও স্বর্ণ মূল্যবান হওয়ায় ষ্ট্রেশনারী দোকানগুলো থেকে এমিটেশনের অনামেন্স ক্রয় করছে তারা। গার্মেন্টস ব্যবসায়ী আবু নাছির ও আবুল হাসনাত জানায়, গত বছরের তুলনায় এ বছর বিক্রি কিছুটা বেশী। কারণ, গত বছরের তুলনায় এ বছর অনেক নতুন নতুন পোষাক বাজারে এসেছে। অনেক দামী পোষাকও এসেছে। তবে কম দামের চেয়ে বেশী দামী পোষাকের চাহিদা আছে। আমরা ক্রেতার চাহিদা মত পোষাক এনে বিক্রি করছি।
তবে রোজা আরো কয়েকটি অতিবাহিত হলে ক্রেতার সংখ্যা আরো বাড়বে এবং পোষাকও বিক্রি বেশী হবে। বেশ কয়েকজন ক্রেতা লাবন, আবু সায়েম, সোহেল, সাইফুল জানায়, ঈদ আসছে নিজে নতুন জামা কাপড় ক্রয় করেছি এবং পিতা মাতা, ভাই বোনের জন্য নতুন জামা কাপড় ক্রয় করছি। তাছাড়া ছেলে মেয়ে সহ আত্মীয় স্বজনের জন্য নতুন জামা কাপড় কিনেছি। এদিকে উপজেলার নায়েরগাঁও, নারায়নপুর, মুন্সিরহাট সহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে ঈদের বাজার জমে উঠেছে। কেউ কেউ আবার ঈদকে সামনে রেখে নিজের পছন্দের জিনিস বিক্রি করে ছেলে মেয়ে আত্মীয় স্বজনদের কাপড় চোপড় ও প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র ক্রয় করছে। গত বছর অনেক ক্রেতাই মতলব বাজার সহ নায়েরগাঁও, নারায়নপুর ও মুন্সীরহাট বাজারে অনেক ক্রেতা বাজার করে বাড়ী ফেরার পথে ছিনতাইকারী ও মলমপার্টিদের কবলে পড়ে সবস্ব হারিয়েছে। একাধিক ব্যবসায়ী ও শহরবাসী জানান, ঈদকে সামনে রেখে একটি চক্র প্রতি বছরের ন্যায় এবারও সক্রিয় হয়ে ওঠেছে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক সহ প্রধান প্রধান সড়ক ও সড়কের মোড়ে এরা চক্রবদ্ধভাবে ওৎ পেতে থাকে। যার ফলে ঈদের কেনা কাটার জন্য আগত ক্রেতা সাধারণগণ তাদের স্বর্ণালংকার সহ নগদ টাকা হারানোর আশংকায় থাকেন। এ কারণে পুলিশী নিরাপত্তা জরুরী প্রয়োজন বলে ক্রেতা সাধারণ মনে করছেন।
এবিএন/শ্যামল চন্দ্র দাস/জসিম/তোহা