
মানিকগঞ্জ, ২১ জুন, এবিনিউজ : ঈদের বাকি ১ সপ্তাহের কম। নাড়ির টানে সকলের সাথে অানন্দ ভাগাভাগি করে নিতে ঈদে বাড়ি যায় সবাই।
ঈদে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার যাত্রী ও যানবাহন পারাপার নির্বিঘ্ন করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাট কর্তৃপক্ষ। ঈদে বাড়ি যাওয়া যাত্রী ভোগান্তি কমাতে ঘাটে থাকছে ১৯টি ফেরি ও ৩৩টি লঞ্চ।
এ ছাড়া যানজট কমাতে ঈদের তিনদিন আগে ও পরে বন্ধ থাকবে পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল। থাকবে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
পাটুরিয়া ঘাট দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ৩ থেকে ৪ হাজার যানবাহন পারাপার হয়। ঈদের সময় এ চাপ কয়েক গুণ বেড়ে যায়। এবার ঈদে বাড়তি চাপ সামলাতে প্রস্তুতি নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
ঈদের ৩ দিন আগে থেকে পণ্যবাহী ট্রাক পারাপার বন্ধ থাকবে। যানজট নিরসনে ঘাট থেকে এক কিলোমিটার পর্যন্ত ওয়ানওয়ে পদ্ধতি নেয়া হয়েছে। ছোট আর বড় গাড়ির জন্য থাকছে আলাদা লেন।
যানবাহনগুলোতে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন ও ভাড়া আদায় ঠেকাতে থাকবে ভ্রাম্যমাণ আদালত। ঘাট এলাকার নিরাপত্তায় থাকবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় ৬শ’ সদস্য। সড়কপথ ছাড়াও যাত্রীদের নিরাপত্তায় ২৪ ঘণ্টা নদী পথে টহল দেবেন নৌপুলিশের সদস্যরা।
বর্তমানে ১৫টি ফেরি চলাচল করলেও ঈদের মৌসুমে ১৯টি ফেরি চলবে।
এ নৌ-রুটে নিরাপদে যানবাহন পারাপারের জন্য, বিআইডব্লিউটিসি, জেলা প্রশাসন, পুলিশ সুপার এবং বিআরটিএ পৃথক প্রস্তুতি সম্পন্ন শেষ করেছে।
দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের ২১টি জেলার ঈদে ঘরমুখী মানুষদের নির্বিঘ্নে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ফেরি দিয়ে পারাপার করতে ফেরির যান্ত্রিক বিঘ্ন ঘটলে তাৎক্ষনিকভাবে ভাসমান ফেরি মেরামত কারখানা প্রস্তুত রেখেছে বিআইডব্লিউটিসি।
পাটুরিয়ায় যানবাহন পারাপার করতে ৪টি ঘাট প্রস্তুত রাখা হয়েছে। নদী স্বাভাবিক থাকলে তেমন কোনো যানজট দেখা দিচ্ছে না। তবে এই নৌ-রুটে ২০ রমজানের পর থেকে যানবাহনের সংখ্যা বাড়ছে।
মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপার মাহফুজুর রহমান জানায়, যানজট এড়াতে, চুরি-ছিনতাই, অজ্ঞান ও মলম পার্টিসহ আইন শৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে ৬শ পুলিশ সদস্য নিয়োজিত থাকবে। ফেরিগুলো ভালো করে চলাচল করলে ও দৌলতদিয়ায় ঘাট ভাল থাকলে ২১টি জেলার মানুষ চাঁদ রাতেই বাড়ি পৌঁছে সকালে ঈদের নামজ নিজ এলাকায় পড়তে পারবে।
মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসক নাজমুছ সাদাত সেলিম জানায়, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে আমাদের একাধিক টিম নিয়োজিত থাকবে। ইতিমধ্যে আমরা সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরের সাথে মিটিং করে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি।
মানিকগঞ্জ বিআরটি এ সহকারী পরিচালক ( ইঞ্জিন) প্রকৌশলী মোবারক হোসেন জানায়, ফিটনেস বিহীন যানবাহন যেন ঈদে ঘুরমুখী যাত্রী তুলে মহাসড়কে বিরম্বনায় না ফেলে তার জন্য আমাদের ৩টি টিম সার্বক্ষনিক ঢাকা অারিচা মহাসড়কে নিয়েজিত থাকবে।
বিআইডব্লিউটিসির পাটুরিয়া ফেরিঘাটের সহকারী মহা ব্যবস্থাপক ( বাণিজ্য) মোঃ জিল্লুর রহমান জানায়, বর্তমানে ১৫টি ফেরি চলাচল করলেও ঈদের মৌসুমে ১৯টি ফেরি যানবাহন পারাপার করবে। কোন ফেরির যান্ত্রিক বিঘ্ন ঘটলে তাৎক্ষনিক ভাবে ভাসমান ফেরিতে মেরামত কারখানা প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
দৌলতদিয়া ফেরিঘাট শাখা বাণিজ্য বিভাগের ব্যবস্থাপক খোরশেদ আলম জানায়, প্রতিটি ফেরি নৌরুট পারাপার হতে প্রায় ৪০ মিনিট সময় লাগে। এছাড়া ফেরিগুলো লোড আনলোড হতেও প্রায় ২০ মিনিট করে সময় লাগে। তবে, কে-টাইপ ফেরিতে যানবাহন লোড আনলোডে এই সময়ের পরিমাণ একটু বাড়তে পারে বলেও জানান তিনি।
সকল বাধা বিপত্তি এড়িয়ে নারীর টানে ২১টি জেলার মানুষ চাঁদ রাতেই নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারবে এমন প্রস্তুতিই শেষ করছেন বিআইডব্লিউটিসির সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তর। তবে এ নৌরুটে বিআইডব্লিউটিসির সিরিয়ালে অনিয়ম এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ না আসলে ফেরি পারাপারে কোনো বিঘ্ন ঘটবে না এমনই আশা করছেন সাধারণ যাত্রী ও হাজার হাজার পরিবহন শ্রমিকরা।
এবিএন/মো. সোহেল রানা খান/জসিম/নির্ঝর