শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২ ফাল্গুন ১৪৩১
logo
  • হোম
  • সারাদেশ
  • ঝালকাঠির শিল্প নগরীর ৬জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা, প্রকৌশলী গ্রেপ্তার
আসামী তালিকা নিয়ে টক অব দ্যা টাউনে পরিনত

ঝালকাঠির শিল্প নগরীর ৬জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা, প্রকৌশলী গ্রেপ্তার

ঝালকাঠির শিল্প নগরীর ৬জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা, প্রকৌশলী গ্রেপ্তার

ঝালকাঠি, ২৩ জুন, এবিনিউজ : ঝালকাঠি বিসিক শিল্পনগরীর প্রকল্পের মাটি ভরাট কাজে দূর্নীতি-লুটপাটের অভিযোগে দূর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) প্রকল্প পরিচালক অসীম কুমার ঘোষসহ ৬ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। দায়েরকৃত উক্ত মামলায় ঢাকা বিসিক প্রধান কার্যালয়ের দুজন প্রকৌশলীকে গ্রেফতার করা হলেও প্রধান আসামী (প্রকল্প পরিচালক) অসীম কুমার ঘোষসহ এজাহারভূক্ত ৪ আসামীকে গ্রেপ্তারে দুদক এর অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানাগেছে।

অন্যদিকে ঝালকাঠির সদর আসনের এমপি শিল্পমন্ত্রী আলহাজ্ব আমির হোসেন আমুর নির্বাচনী এলাকায় শিল্প মন্ত্রনালয়ের গৃহীত বিসিক শিল্প নগরী প্রকল্প নিয়ে এধরনের দূর্নীতি-লুটপাট ও সেই ঘটনায় দুদকের মামলা দায়েরের ঘটনা ঝালকাঠি জেলাজুড়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। গত ২/৩ দিন ধরে দুদকের এ মামলার প্রভাবশালী দুই আ’লীগ নেতাকে আসামী করায় ও ঢাকা বিসিক প্রধান কার্যালয় থেকে আটক দুই প্রকৌশলীর ঘটনায় অফিস-আদালত, রাজনৈতিক দলীয় অফিস-ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, সাংবাদিক-আইনজীবীসহ সকল মহলে টক অব দ্যা টাউনে পরিনত হয়েছে।

জানাগেছে, ঝালকাঠিবাসীর দীর্ঘদিনের আকাঙ্খিত এ প্রকল্পের শুরু থেকে প্রকল্প পরিচালকের নেতৃত্বে ব্যাপক দূর্নীতি-লুটপাটের ঘটনায় বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত সংবাদের সূত্র ধরে দূর্নীতি দমন কমিশন সরেজমিন তদন্তে মাঠে নামে। এরমধ্যে দুদক বিসিক শিল্পনগরী প্রকল্পের বালু ভড়াট কার্যক্রমে ব্যাপক অনিয়ম ও লুটপাটের তথ্যপ্রমান পাওয়ায় বরিশাল দুদকের সহকারি উপপরিচালক মো. আল আমিন বাদি হয়ে ঝালকাঠির নলছিটি থানায় এ মামলা দায়ের করেন। গত ১৯ জুন ৬জনকে আসামী করে তাদের বিরুদ্ধে ৫২লাখ ৬৬হাজার ২৫০ টাকা অত্মসাতের অভিযোগে দ:বি: ৪০৬/ ৪০৯/ ৪৬৭/ ৪৬৮/ ৪২০/ ১০৯ ধারাসহ ১৯৪৭ সনের ২নং দূর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় নলছিটি থানায় মামলাটি (নং-১৭) রেকর্ড করা হয়।

মামলায় ঝালকাঠি বিসিক শিল্পনগরী প্রকল্প পরিচালক অসীম কুমার ঘোষ, বিসিক প্রধান কার্যালয়ের সহকারি প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. সাইফুল ইসলাম চৌধুরী, প্রধান কার্যালয় প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাইফুল ইসলাম খান ও সহকারি প্রকৌশলী মো. বেলায়েত হোসেন, মেসার্স হক ট্রেডার্স এর ঠিকাদার মো. মজিবুল হক আকন্দ, ইসলাম ব্রাদার্স এর ঠিকাদার মো. মনিরুল ইসলাম তালুকদারসহ ৬জনকে আসামী করা হয়। মামলা রেকর্ড হওয়ার একদিন পরে গত ২০ জুন দুদক অভিযান চালিয়ে ঢাকার বিসিক প্রধান কার্যালয় থেকে এজাহারভূক্ত প্রকৌশলী মো. সাইফুল ইসলাম খান ও বেলায়েত হোসেনসহ দুই আসামীকে গ্রেফতার করেন। আসামীদের মধ্যে ঠিকাদার মজিবুল হক আকন্দ জেলা আওয়ামীলীগের ১নং সাংগঠনিক সম্পাদক ও সদর উপজেলার নবগ্রাম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এবং অপর ঠিকাদার মনিরুল ইসলাম তালুকদার জেলা আওয়ামীলীগের কোষাধ্যক্ষ।

এজাহারের বিবরনে উল্লেখ করা হয়, ঝালকাঠি বিসিক শিল্প নগরীর প্রকল্প স্থাপনের জন্য জেলা প্রশাসক কর্তৃক সৃজিত এলএ কেস নং ৬১/২০১৪-১৫ এর ৮ মার্চ প্রস্তুতকৃত প্রধান আসামী অসীম কুমার ঘোষ, এলএ শাখার প্রধান নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ভূমি অধিগ্রহন কর্মকর্তা মোঃ সাইদুজ্জামান খান, বিসিক এর সহকারী মাননিয়ন্ত্রন ও মনিটরিং কর্মকর্তা মোঃ আলআমিন, এলএ শাখার সার্ভেয়ার মোঃ ইদ্রিস আলী ফরাজী, মোঃ সাহাব উদ্দিন সরদার এর যৌথ স্বাক্ষরিত তদন্তের ফিল্ডবুক পর্যালোচনায় দেখা যায় বিসিক শিল্প নগরীর প্রকল্পের অধিগ্রহনকৃত ১১.০৮ একর জমির মধ্যে লম্বায় ৫৫ফুট, চওড়ায় ৩৮ ফুট ও ৫ফুট গভীর একটি পুকুর ছিলো। দরপত্রের হিসাব অনুযায়ী যা ভরাটে করতে ২৯৫.৯০৮ ঘনমিটার মাটির প্রয়োজন ও এতে প্রতিঘন মিটার ১৪০ টাকা দর অনুপাতে মোট ব্যয় ৪১ হাজার ৪শ ২৭ টাকা।

অথচ আসামীদের উপস্থিতিতে ঝালকাঠি বিসিক শিল্প নগরীর প্রকল্পের জন্য অধিগ্রহনকৃত জমিতে বালু/মাটি ভরাটের পূর্বে ৯ নভেম্বর ২০১৫ইং তারিখ প্রিলেভেল মেজরমেন্টে এবং ভরাটের পর ১৮ মে ২০১৬ইং তারিখ পোষ্ট লেভেল মেজারমেন্ট গ্রহন করেন। পরিমাপ গ্রহনকালে তারা সম্পূর্ন অধিগ্রহনকৃত জমিকে ৪টি লটে বিভক্ত করে প্রতারনা ও জালিয়াতীর আশ্রয় নিয়ে প্রত্যেক লটে একটি করে ভূয়া পুকুর দেখিয়ে এবং উক্ত ভূয়া পুকুর মাটি ভরাট দেখানে।

এ বিষয়ে বরিশাল দুদকের সহকারি উপপরিচালক মো. আল আমিন জানান, দূর্নীতির মামলায় দুদক ঢাকা কার্যালয় থেকে বিসিকের শীর্ষ দুই প্রকৌশলীকে আটক করা হয়েছে। বাকী আসামীদের গ্রেপ্তারে জোর প্রচেষ্ঠা চলছে।

এবিএন/আজমীর হোসেন তালুকদার/জসিম/নির্ঝর

ad

প্রধান শিরোনাম

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত