শেরপুর, ০১ জুলাই, এবিনিউজ : শেরপুর জেলা শহরের শ্রী শ্রী গোপাল জিউ’র মন্দিরে বর্ণাঢ্য আয়োজনে রুশ কন্যা সিভেত লেনারের (২৭) সঙ্গে বিয়ে হয়েছে বাঙ্গালী ধর্মকান্ত (৩৭) সরকারের। পাত্র জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলার সন্নাসীভিটা গ্রামের মৃত ধীরেন্দ্র কান্ত সরকারের ছেলে। বিয়ের পর সিভেতের নাম দেওয়া হয়েছে সুশ্রী দেবী দাসী। সে মস্কোর আলেকজান্ডার নিজোবক্সির মেয়ে এবং মস্কোর একটি সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির ছাত্রী। স্বামী ও স্ত্রী দু’জনেই ইসকন সদস্য। বিয়েতে পাঁচ শতাধিক অতিথি অংশ নেন।
হিন্দু রীতি অনুযায়ী গায়ে হলুদ, সিঁদুর পড়ানো থেকে শুরু করে যজ্ঞ, সাতপাক ও মালাবদল করে শুক্রবার রাতে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। পরম করুনা গৌরদাস নামে ইসকন পুরোহিত তাদের বিয়েতে পুরোহিত ছিলেন। এদিন রাতে অতিথি ছাড়াও রুশ কন্যার বিয়ে দেখতে হাজারো মানুষ গোপাল জিউর মন্দিরে উপস্থিত ছিলেন। বিয়ে শেষে অতিথিদের পুস্পান্য, খিঁচুরী, ছানার রসা, বুটের ডাল, চাটনি দধি, পায়েসসহ ১৪ প্রকারের খাবার দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়।
বর ধর্মকান্ত সরকার জানান, মস্কোর আছরাখান টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে জ্বালানী বিষয়ে পড়ার সময় তিনি সেখানকার ইসকন মন্দিরের প্রধান ধর্মগুরু ভক্তি আনন্দ কৃষ্ণ মহারাজের কাছে দীক্ষা নেন। ২০১৩ সালে সিভেত লেনার খ্রিস্টান ধর্ম ত্যাগ করে ইসকনের সদস্য হন। তারা দু’জনেই আনন্দ কৃষ্ণ মহারাজের সেবা করতেন। পরে গুরুদেবের পরামর্শে তারা বিয়ে করতে সম্মত হন। বিয়ের জন্য মায়ের মত নিতে গত বছর সেপ্টেম্বরে ধর্মকান্ত দেশে আসেন। তার মা বিয়েতে সম্মতি দিলে চলতি বছর জুন মাসে সিভেত লেনার বাংলাদেশে আসেন।
শেরপুর ইসকনের সেবায়েত অপূর্ব জগন্নাথ দাস জানান, শাস্ত্র মোতাবেক ওই দম্পতি এখন থেকে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের সেবায় নিজেদের উৎস্বর্গ করবেন। তিনি বলেন, স্বামী-স্ত্রী হলেও তারা কখনই একসঙ্গে থাকতে পারবেননা। তবে সন্তান নিতে চাইলে একবারের জন্য তারা একসঙ্গে থাকতে পারবেন। এরপর দেড় বছর তাদের মধ্যে কোন সম্পর্ক থাকবেনা।
এ ব্যাপারে বর ধর্মকান্ত সরকার ও নববধূ সুশ্রী দেবী দাসী বলেন, আমরা জুলাই মাসে ভারতের মায়াপুর যাবো। সেখান থেকে বৃন্দাবনে। এরমধ্যে আমাদের গুরুদেব গর্ভধান সংস্কারের জন্য আমাদের একটি সময় দেবেন। পরে সেসময় একদিনের জন্য আমাদের মিলন হবে। এরপর দেড় বছরের মধ্যে আমাদের কোন যোগাযোগ থাকবেনা। আমরা ভগবানের সেবায় নিজেদের নিয়োজিত করবো। সম্ভবত বৃন্দাবন ত্যাগের আমরা ফের মস্কোতে ফিরে যাবো।
এবিএন/জনি/জসিম/জেডি