
ফেনী, ০৪ জুলাই, এবিনিউজ : সোনাগাজীতে নদী গর্ভে স্লুইস গেট বিলীন হয়ে যাওয়ার পর তৎপর হয়ে উঠেছে ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ড।এর পূর্বে স্লুইস গেটটি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার উপক্রম হলে স্থানীয় এলাকাবাসী সংস্কারের জন্য দাবী জানালেও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্তাব্যাক্তিরা কোন কর্নপাত করেনি। গত কয়েক দিনের ভারী বর্ষনে উপকুলীয় এলাকার অনেক স্থানে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।পানি প্রবাহের স্বাভাবিক পথগুলো দখল হয়ে যাওয়ার কারনে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। আর এ জলাবদ্ধতার কারনে অতিরিক্ত পানির চাপে উপজেলার নবী উল্যাহ বেড়ীবাঁধ সংলগ্ন চরছান্দিয়া ও চরদরবেশ ইউপির সীমানায় বেড়ীবাঁধের উপর অবস্থিত ৯ নং স্লুইস গেটটি ছোট ফেনী নদীর মোহনায় গতকাল সোমবার সকালে বিলীন হয়ে গেছে। জানা গেছে ১৯৬৫ সালে তৎকালীন পাকিস্থান সরকার উপকুলীয় জনগনকে ছোট ফেনী নদীর জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষা করতে ২০ কিলিমিটার দীর্ঘ আউটার বেড়ীবাঁধ নির্মান করে।বেড়ীবাঁধের ৫টি স্থানের ছোট ফেনী নদীর মোহনাগুলোতে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি ও নদীর লোনা জল যাতে প্রবেশ করতে না পারে সে লক্ষ্যে ৫টি স্লুইস গেট নির্মাণ করে।স্লুইস গেটগুলো রক্ষনাবেক্ষনের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে বেতনভুক্ত তত্তাবধায়নকারী নিয়োগ করা হয়।
দেশ স্বাধীনের পর স্লুইস গেটগুলো রক্ষানাবেক্ষন না করার কারনে ধীরে ধীরে সেগুলো ধ্বংস হতে থাকে। ১৯৮২ সালে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে স্লুইস গেট গুলো সংস্কার করা হলেও দীর্ঘদিন অব্যাবস্থাপনার কারনে সেগুলো ব্যাবহারের অনুপোযোগী হয়ে পড়ে। গত মাসে ঘুর্নীঝড় মোরার আঘাতে স্লুইস গেটের রাস্তা ক্ষতিগ্রস্থ হলে সোনাগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিনহাজুর রহমান জরুরী ভিত্তিতে মেরামত করে। কিন্তু গত কয়েক দিনের প্রবল বর্ষনে ৯ নং স্লুইস গেটটি বেড়ীবাঁধের ভিতরের পানির চাপ ও ছোট ফেনী নদীর পানির চাপে সোমবার সকালে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। যার কারনে সোনাগাজী সদরের সাথে ওই এলাকায় বসবাসরত ৫ গ্রামের মানুষের যোগাযোগের একমাত্র পথটি বন্ধ হয়ে গেছে।চরম দুর্ভোগে পড়েছে গ্রামগুলোতে বসবাসরত প্রায় ২০ হাজার মানুষ। স্থানীয় এলাকাবাসী জানিয়েছেন, স্লুইস গেটটি সংস্কারের জন্য গত কয়েক বছর যাবৎ স্থানীয় পানী উন্নয়ন বোর্ড,জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনকে বার বার অনুরোধ করা হেেলা কোন কার্যকরী ব্যাবস্থা গ্রহন করেনি।
মঙ্গলবার সকালে সরজমিনে দেখা গেছে জনসাধারন ঝুকি নিয়ে নৌকা ব্যবহার করে যাতায়াত করছে।সোমবার রাতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিনহাজুর রহমান ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম ভুট্টু ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জনগনের দুর্ভোগ লাগবে জরুরী ভিত্তিতে অস্থায়ী সাকো নির্মান ও আগষ্ট মাসের মধ্যে কালভার্ট নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন।একই দিন চরদরবেশ ইউপির কাজির হাট স্লুইস গেটটিও ভারী বর্ষনে অনেকটা তলিয়ে গিয়ে নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী কহিনুর আলম ঘটনাস্থল পরিদর্শনের সময় জানান,স্লুইস গেটটি নির্মাণে সরকারী অনুদান পাওয়া গেছে এবং অতিশিগ্রই কাজ শুরু হবে।এসময় সোনাগাজীর নির্বাহী কর্মকর্তা মিনহাজুর রহমান ও চরছান্দিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন মিলন উপস্থিত ছিলেন।
এবিএন/আবুল হোসেন রিপন/জসিম/তোহা