শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২ ফাল্গুন ১৪৩১
logo
  • হোম
  • সারাদেশ
  • ঝালকাঠির রিফাত হত্যা মামলার রায় নারায়ণগঞ্জ আদালতে ১২ জুলাই
শ্যালক হত্যাকারী দুলাভাই কারাগারে-ভাড়াটে খুনীরা পালাতক

ঝালকাঠির রিফাত হত্যা মামলার রায় নারায়ণগঞ্জ আদালতে ১২ জুলাই

ঝালকাঠির রিফাত হত্যা মামলার রায় নারায়ণগঞ্জ আদালতে ১২ জুলাই

ঝালকাঠি, ১০ জুলাই, এবিনিউজ : ঢাকার নারায়ণগঞ্জে খুন হওয়া ঝালকাঠির নলছিটির শিশু আসিকুর রহমান রিফাত (১১) হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবি করেছে নিহতের পরিবার।আগামী ১২ জুলাই নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে রিফাত হত্যা মামলার রায় ঘোষণার দিন ধার্য রয়েছে। ২০১২ সালের ১০ আগস্ট আপন বোনের স্বামী (দুলাভাই) ও তার ভাড়াটে দুই খুনি দিয়ে গলাকেটে হত্যা করে শিশু রিফাতকে।

নিহতের পরিবার ও মামলা সূত্রে জানা যায়, নলছিটির ব্যবসায়ী মো. তোফাজ্জেল হোসেন স্ত্রী ঝর্ণা বেগম ও একমাত্র ছেলে আসিকুর রহমান রিফাতকে নিয়ে ঢাকার মিরপুর ২ নম্বরের মণিপুর বসবাস করেন। তাদের সঙ্গে মেয়ে ও তার জামাতাও থাকত। হঠাৎ তার শ্বাশুরী ঝর্ণা বেগমের সঙ্গে জামাতা মহিউদ্দিন হাসানাতের সাথে সামান্য কথা কাটাকাটি হয়। এতে জামাতা হাসানাত শ্বশুর বাড়ির লোকজনের ওপর ক্ষিপ্ত হয়।

এঘটনার জের ধরে ২০১২ সালের ১০ আগস্ট বাসার পাশের গলিতে বিকাল ৩ টার দিকে খেলার সময় শ্যালক মণিপুর দারুস সালাম মাদ্রাসার পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র আসিকুর রহমান রিফাতকে ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে দুলাভাই হাসনাত মাইক্রোবাসে তোলে। পরে হাসনাত ৩০ হাজার টাকায় ভাড়া করা দুই খুনি সাইফুল ইসলাম ও মিঠুর সহযোগীতায় রিফাতকে নারায়ণগঞ্জ সিদ্দিরগঞ্জ থানা এলাকার নাভানা ভূঁইয়া সিটিতে নিয়ে যায়। সেখানে নির্জন স্থানে রাতে রিফাতের হাত-পা বেধে ধারালো ছুড়ি দিয়ে জবাই করে হত্যা করে মহিউদ্দিন হাসনাত এবং তার ভাড়া করা দুই খুনি সাইফুল ইসলাম ও মিঠু।

রাতেই সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ রিফাতের জবাই করা লাশ উদ্ধার করে। লাশের ময়না তদন্ত শেষে ১২ আগস্ট সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা করে। খুনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে রিফাতের বাবা তোফাজ্জেল হোসেন জামাতা হাসনাতকে আসামি করে নারায়ণগঞ্জ আদালতে মামলা করে। আদালত মামলাটি এজাহারভুক্ত করার জন্য সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশকে নির্দেশ দেয়।

এদিকে রিফাত হত্যার কিছুদিন পরে ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার কাঠীপাড়া মাদ্রাসা এলাকা থেকে মামলার আসামি হাসনাতকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। পুলিশে কাছে হত্যার কথা স্বীকার করে হাসানাত। এ ঘটনায় আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয় সে। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ভাড়াটে খুনি সাইফুলকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। দীর্ঘ দিন কারাগারে থাকার পরে হাইকোর্ট থেকে জামিনে মুক্তি পায় দুই আসামি। জামিন নিয়ে ভাড়াটে খুনি সাইফুল অদ্য পর্যন্ত পালাতক রয়েছে। অপর খুনি মিঠুকে এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

দীর্ঘদিন তদন্ত শেষে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ রিফাতের দুলাভাই হাসানাত সহ তিনজনের নামে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালত সাক্ষিদের স্বাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আগামী ১২ জুলাই রায়ের দিন ধার্য করেন। চলতি বছরের ৪ জুলাই আসামি হাসনাত হাজিরা দিতে গেলে আদালত তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। ঘাতক মহিউদ্দিন হাসানাত নলছিটি উপজেলার শীতলপাড়া গ্রামের মোসলেম উদ্দিনের ছেলে।

রায়ের দিন ধার্য হওয়ার পর নিহত শিশু রিফাতের পরিবার খুনী মেয়ে জামাই হাসানাত সহ দুই ভাড়াটে খুনীর কঠোর বিচারের দাবি জানিয়েছে। শিশু রিফাতের বাবা তোফাজ্জেল হোসেন বলেন, আমার একমাত্র ছেলেকে পাসন্ড মেয়ে জামাতা তার সহযোগীদের নিয়ে জবাই দিয়ে হত্যা করেছে। একমাত্র ছেলের শোক আমার পুরো পরিবার জীবনের সকল আশা-ভরসা হারিয়ে ফেলেছি। রিফাতের মা ঝর্ণা বেগম বলেন, রিফাতকে হত্যার পরে আমার বুক খালী হয়ে গেছে। যারা আমার সন্তানকে হত্যা করে আমাবুক খালী করেছে আদালত যেন তাদের মায়ের কোলও শূন্য করে। আমি আসামি হাসানাতের ফাঁসি দাবি করছি। আশাকরি আদালত ন্যায় বিচার করবেন।

এবিএন/আজমীর হোসেন তালুকদার/জসিম/নির্ঝর

ad

প্রধান শিরোনাম

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত