খাগড়াছড়ি, ১৬ জুলাই, এবিনিউজ : খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার মাটিরাঙ্গা উপজেলায় ফেনীছড়া নদীর করাল ঘ্রাস যেন থামছেই না। প্রতি বছরই ফেনী ছড়া নদীর ভাঙনে বিলীন হচ্ছে মাটিরাঙ্গার আমতলী, দেওয়ানবাজার ও অযোধ্যা সীমান্ত বিস্তীর্ন জনপদ। নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে ফসলী জমি। ফলে কমে যাচ্ছে বাংলাদেশের ভুখন্ড। আর এতে করে ছোট হয়ে আসছে বাংলাদেশ সীমান্ত। এবারের টানা বর্ষণেও তার ব্যতিক্রম ঘটছেনা।
পার্বত্য খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলাধীন ৪০বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের অধীন আমতলী বিওপি এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, বিস্তীর্ন ফসলী জমি পানির তোড়ে ভেঙে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। একই ভাবে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে দেওয়ানবাজার ও অযোধ্যা সীমান্ত এলাকায়। টানা বর্ষণে ইতিমধ্যে বাংলাদেশের প্রায় এক কিলোমিটার নদীগর্ভে তলিয়ে গেছে বলে জানা গেছে। দেওয়ান বাজার এলাকায় পলাশপুর জোন অধিনায়ক লে. কর্ণেল মো: খালিদ আহমেদ পিএসসি‘র উদ্যোগে ব্লক স্থাপনের মাধ্যমে ভাঙনরোধের চেষ্ঠা করলেও তা কোন কাজে আসছে না।
স্থানীয় কৃষক মো: শাহ এমরান ও মো: মনির হোসেন বলেন, ফেনীছড়া নদীর ভাঙনের ফলে দিন দিন বাংলাদেশের ভুখন্ড নদীতে তলীয়ে যাচ্ছে। এতে করে তাদের জমি কমে যাচ্ছে। নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে তাদের অনেক কষ্টে বোনা ফসল। ফেনীছড়া নদীর ভাঙণ রোধে সরকারের জরুরী উদ্যোগ দাবী করেন তারা।
আমতলী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো: আবদুল গণি বলেন, অব্যাহত ভাঙনের বিষয়টি পলাশপুর জোন কমান্ডার ও মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানিয়েছি। বাংলাদেশের ভু-খন্ড রক্ষায় নদীর তীরবর্তী এলাকায় ব্লক স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া খুব জরুরী প্রয়োজন বলেও জানান তিনি।
মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিএম মশিউর রহমান বলেন, পলাশপুর বিজিবির জোন কমান্ডার লে. কর্ণেল মো: খালিদ আহমেদ পিএসসি‘র মাধ্যমে ভাঙণের খবর পেয়ে আমি ভাঙন কবলিত এলাকাসমুহ পরিদর্শন করে ছবিসহ জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠিয়েছি। জেলা প্রশাসক মহোদয় ফেনীছড়া নদীর ভাঙন রোধে প্রকল্প গ্রহণের সহায়তা চেয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে চিঠি দিয়েছেন। আশা করছি খুব শীঘ্রই কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বাংলাদেশের ভু-খন্ড রক্ষার স্বার্থে জরুরী উদ্যোগ গ্রহণ প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
ইতিমধ্যেই অনেক সীমান্ত পিলার নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে উল্লেখ করে পলাশপুর বিজিবির জোন কমান্ডার লে. কর্ণেল মো: খালিদ আহমেদ পিএসসি অব্যাহতভাবে ফেনীছড়া নদীর ভাঙনের বিষয়টি বিজিবি‘র উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় প্রশাসনকে ফেনীছড়া নদী ভাঙনের বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। দেওয়ানবাজার এলাকায় বিজিবির উদ্যোগে ভাঙণরোধে ব্লক স্থাপন করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এক্ষেত্রে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের কার্যকরী উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন। ভাঙতে ভাঙতে নদী বাংলাদেশের অনেক ভেতরে চলে এসেছে দাবী করে তিনি বলেন অবিলম্বে ভাঙনরোধ করা না গেলে স্থানীয় কৃষকদের ফসলী জমি নদীগর্ভে হারিয়ে যাবে।
এবিএন/চাইথোয়াই মারমা/জসিম/নির্ঝর