
বান্দরবান, ২৫ জুলাই, এবিনিউজ : বান্দরবানে প্রবল ভারী বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। পাহাড়ী ঢলে সাঙ্গু ও মাতামূহুর নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রব্যাহিত হচ্ছে। এতে জেলার নিন্মাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়েছে। এছাড়াও বান্দরবান-চট্টগ্রাম সড়কের বাজালিয়ার মাহালিয়া এলাকা ও বান্দরবান-রাঙ্গামাটি সড়কের বালাঘাটা পুলপাড়া বেলিব্রীজ পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় সারাদেশের সাথে বান্দরবান জেলার শহরের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
এদিকে এদিকে বান্দরবান-রুমা সড়কের দৌলিয়ানপাড়া সড়কে পাহাড় ধসে নিখোঁজ চারজনের মধ্যে মুন্নি বুড়য়া নামে এক স্বাস্থ্য কর্মী লাশ মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রামের বাঁশখালী থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
বাঁশখালী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আলমগীর হোসেন জানান, বাঁশখালীর ২নং সাধনপুর ইউনিয়নের রাতাখোর্দ্দ মোজাফ্ফরাবাদ সাকিনের সাঙ্গু নদীর তীরবর্তী বেড়ীবাঁেধর পশ্চিম পার্শ্বের ধারে কাদা মাটিতে উপুড় হয়ে পড়ে থাকা এক মহিলার লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য চট্টগ্রাম কলেজ হাসপাতালের মর্গের প্রেরণ করা হয়েছে।
মন্নি বড়–য়ার ছোট ভাই ছোটন বড়–য়া জানান, বাশাঁখালী থেকে উদ্ধার হওয়া মহিলাটি লাশ তার বোন রুমা উপজেলার স্বাস্থ্য কর্মী মুন্নি বড়–য়ার। তিনিসহ পরিবারের সদস্যরা চট্টগ্রাম কলেজ হাসপাতালের মর্গের গিয়ে লাশ শনাক্ত করেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বান্দরবান-রুমা সড়কের দৌলিয়ানপাড়া এলাকায় পাহাড় ধসে আরো নিখোঁজ ৩জনের সন্ধানে তৃতীয় দিনেও উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে সেনাবাহিনী, দমকলসহ স্থানীয়রা। ভারি বর্ষণ অব্যাহত থাকায় উদ্ধার তৎপরতা বিঘ্নিত হচ্ছে বলে জানান, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এছাড়া রুমা সড়ক যোগাযোগ সচল করতে পাহাড় ধসে পড়া অংশে মাটি সরিয়ে নেয়ার কাজ করছে সেনাবাহিনীর প্রকৌশল বিভাগ।
এব্যাপারে দমকল বাহিনীর সহকারী পরিচালক মো: ইকবাল হোসেন জানান, দৌলিয়ানপাড়া এলাকায় তৃতীয় দিনের মতো নিখোঁজদের সন্ধানে উদ্ধার অভিযান শুরু হয়েছে। কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে সেনাবাহিনী, দমকল বাহিনী ও স্থানীয় লোকজন উদ্ধার কাজ চালাচ্ছে। ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঝিরিতে তীব্র স্রোত থাকায় উদ্ধার অভিযান ব্যাহত হচ্ছে।
এবিষয়ে বান্দরবান রিজিয়নের কর্মকর্তা (জিএসটু) মেজর আবু সাইদ মো: মেহেদী হাসান জানান, পাহাড় ধসের পর পরই সেনা সদস্যরা উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। নিখোঁজদের উদ্ধারে এক্সাবেটরসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম নিয়ে ৩০জনের অধিক সেনা সদস্য উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছে। প্রয়োজনে সেখানে সদস্য সংখ্যা আরো বাড়ানো হবে। এদিকে রুমা-বান্দরবান সড়কের দৌলিয়ান পাড়া এলাকায় কিছুক্ষণ পরপর পাহাড় ধসে পড়ছে। একারনে বান্দরবানের সাথে রুমার সড়ক যোগাযোগ সম্পুর্ণ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
এছাড়া পাহাড় ধসের আশঙ্কায় বান্দরবান-থানছি সড়কেও যান চলাচল বন্ধ করে রেখেছে যানবাহন মালিক সমিতি। অপরদিকে মঙ্গলবার সকালে চকরিয়া-লামা সড়কের মিরিজ্ঞা এলাকায় সড়কের উপর পাহাড় ধসে পড়ায় এ সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সাথে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।
উল্লেখ্য, রবিবার সকালে রুমা সড়কের দৌলিয়ানপাড়া এলাকায় সড়কের উপর পাহাড় ধসে পড়লে কমপক্ষে ৫জন নিখোঁজ হয়। ঐ স্থান থেকে এক নারীর লাশ উদ্ধার করা হলেও বাকিরা এখনো নিখোঁজ রয়েছেন। নিখোঁজদের মধ্যে যাদের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন— রুমা উপজেলার স্বাস্থ্যকর্মী মুন্নি বড়ুয়া, উপজেলা পোস্ট মাস্টার জবিউল আলম, কৃষি ব্যাংকের কর্মকর্তা গৌতম নন্দি ও রুমার মংশৈ প্রু কারবারীর মেয়ে সিমোচিং মারমা।
এবিএন/মোহাম্মদ আব্দুর রহিম/জসিম/রাজ্জাক