শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২ ফাল্গুন ১৪৩১
logo
  • হোম
  • সারাদেশ
  • নৈশ প্রহরী হারুন হত্যা মামলার আসামী বেল্লাল অবশেষে গ্রেফতার

নৈশ প্রহরী হারুন হত্যা মামলার আসামী বেল্লাল অবশেষে গ্রেফতার

নৈশ প্রহরী হারুন হত্যা মামলার আসামী বেল্লাল অবশেষে গ্রেফতার

ঝালকাঠি, ২৬ জুলাই, এবিনিউজ : ঝালকাঠির বিনয়কাঠি ইউনিয়নের মানপাশা বাজারের নৈশ প্রহরী হারুন সর্দার হত্যা মামলার অন্যতম আসামী বেল্লাল অবশেষে ধরা পেরেছে। পুলিশ কৌশলে তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। বেল্লাল ১৬৪ ধারায় দেয়া জবানবন্দিতে এই হত্যার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে বলে জানাগেছে। এ ছাড়াও হারুন হত্যার বিষয়ে সে আরো চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে। এমন কি তার সাথে এই হত্যায় আরো কারা জড়িত সে বিষয়ে তথ্য দিয়েছে। তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী পুলিশ অপর আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্ঠা চালাচ্ছে বলে জানাগেছে।

এ বিষয়ে হত্যা মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা এসআই মো. সরোয়ার জানান, বেল্লালকে সোর্স লাগিয়ে কৌশলে বরিশালের নিউ সার্কুলার সড়ক এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই হত্যার সাথে সে জড়িত থাকার কথা জানিয়ে ১৬৪ ধারায় জবানন্দি দিয়েছে। এছাড়াও চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রদানের পাশাপাশি এই হত্যার সাথে আরো কে কে জড়িত তা জানালেও তদন্তের স্বার্থে এর বেশি কিছু এই মূহূর্তে বলা যাবেনা। তবে তার দেয়া তথ্য যাচাই বাছাই করে অপর আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্ঠা চলছে বলে তিনি জানান।

অন্যদিকে উচ্চ আদালত থেকে জামিনপ্রাপ্ত এই মামলার আসামী মো. সাইদুল ইসলাম এই হত্যার সাথে জড়িত নয় বলে দাবী করেন। হারুন হত্যা মামলার ৫ আসামীর মধ্যে বেল্লালসহ ৩ জন জড়িত বলে আমি শুনেছি। আমাকে এলাকার কিছু স্বার্থন্বেষী এই মামলায় শত্রুতা মূলক ভাবে আসামী করিয়েছে। তাই জামিনে বেড়িয়ে আমি হারুন হত্যার সাথে কারা জড়িত এবং এর প্রকৃত রহস্য উদঘাটনে পুলিশকে সহায়তা করি।

এ জন্য বেল্লালকে গত ১৯ জুলাই বরিশাল নিউ সার্কুলা রোড এলাকায় পেয়ে আমি জাপটে ধরি। কিন্তু টহল পুলিশের দায়িত্বরত বরিশাল থানার এসআই সমিরণ আকষ্মিক ঘটনাস্থলে পৌছে ও নগদ অর্থের বিনিময়ে বেল্লাল কে পালিয়ে যেতে সহায়তা করে উল্টো তাকে থানায় নিয়ে যায়। পরে সে প্রকৃত ঘটনা জানালে ও হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঝালকাঠি থানার এসআই সরোয়ারের সাথে আলাপ করতে বললে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।

এ ব্যাপারে বরিশাল থানার এসআই সমিরণ বলেন, আমি বেল্লালকে অসুস্থ্য অবস্থায় বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করে আসি। শুনেছি তাকে সাইদুল নামে এক ব্যাক্তি ধরে মারধর করেছে। কিন্তু পরে জানতে পারি সে হত্যা মামলার আসামী। এ খবর পেয়ে ঝালকাঠি থানার এসআই ও তদন্ত কর্মকর্তা এসআই সরোয়ার বরিশাল আসলে তাকে সাথে নিয়ে হাসপাতালে গিয়ে বেল্লালকে পাইনি। হয়ত সে পালিয়ে গেছে।

জামিনে বেরিয়ে আসা আসামী সাইদুল ইসলাম আরো জানায়, বেল্লালকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তার কাছ থেকে সব জানা যাবে। কারন বেল্লাল এবং আসামী হালিম হাওলাদার গত ১৪ ডিসেম্বর ২০১৬ তারিখ ঘটনার রাতে বাজারের নৈশপ্রহরী হারুনকে অপর আসামী মোফাজ্জেল হাওলাদারের ঘরে ঘুমাতে পাঠায়। ঐ রাতে বেল্লাল ও হালিম বাজারে পাহারার দায়িত্বে ছিল। পরদিন সকালে গাছের সাথে হারুন সর্দারের ঝুলন্ত লাশ পাওয়া যায়।

উল্লেখ্য গত ১৪ ডিসেম্বর ২০১৬ তারিখ মানপাশা বাজারের নৈশ প্রহরী হারুনকে হত্যা করে তার লাশ গাছের সাথে ঝুলিয়ে রাখা হয়। এর প্রতিবাদে পরদিন গত ১৫ ডিসেম্বর এ হত্যার সাথে জড়িতদের গ্রেফতার পূর্বক বিচারের দাবি করে মানপাশা বাজারের ব্যবসায়ীদের সকাল সন্ধ্যা ধর্মঘট পালন, কালো পতাকা প্রদর্শন, ঝালকাঠি শহরে বিক্ষোভ ও মানববন্ধণ কর্মসূচি পালনসহ জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি প্রেরণ করেন। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই সরোয়ার সোর্স লাগিয়ে বেল্লালের অবস্থান জানতে পেরে তাকে পূনরায় গ্রেফতার করেন।

এব্যাপারে হত্যা মামলার বাদি নিহত হারুনের ভাই মজিবর সর্দার জানান, ভাইয়ের হত্যার পর দীর্ঘ দিনেও মূল আসামীরা ধরা না পরায় অনেকটা হতাশ হয়ে ছিলাম। তবে পুলিশ বেল্লালকে গ্রেফতারের পর এখন এ হত্যার কারন কি এবং কি ভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছে তার প্রকৃত চিত্র হয়ত জানা যাবে বলে মনে আশার সঞ্চার হয়েছে ।

এবিএন/আজমীর হোসেন তালুকদার/জসিম/নির্ঝর

ad

প্রধান শিরোনাম

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত