
মানিকগঞ্জ, ০২ আগস্ট, এবিনিউজ : মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলায় মরা বয়লার মুরগির মাংস দিয়ে অালুর চপ তৈরি করে বিক্রি করার অভিযোগে এক দোকান বন্ধ করে দিয়েছে স্থানীয় জনগন।
মরা মুরগির মাংস ব্যবহার করে অালুর চপ বিক্রি বিষয়টি এখন টকঅপ সাটুরিয়ায় পরিনত হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সর্বত্রই চলছে অালোচনা সমালোচনা। এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে স্থানীয় বিচারে ঘটনার সত্বত্যা প্রমান হওয়ার পর থেকে চলছে তোলপাড়। দোষী দোকানদারের শাস্তির দাবীতে ফুসে উঠছে স্থানীয় জনগন। ঘটনাটি ঘটেছে সাটুরিয়া উপজেলার বালিয়াটি ইউনিয়নের ভাটারা বাজারে। মরা মুরগির মাংস দিয়ে অালুর চপ তৈরি করে বিক্রি করার অভিযোগে ভাটারা বাজারের সুরোত অালী (৩৫) এর চানাচুর ও চপের দোকান বন্ধ করে দিয়েছে স্থানীয় জনগন।
জানা গেছে, মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার বালিয়াটীর ভাটারা গ্রামের সুরোত আলি কয়েক বছর ধরে ভাটারা বাজারে চানাচুর, চপ, ঝাল মুড়ি বিক্রি করে আসছিল। গত রবিবার সন্ধ্যায় বাজারের মজিবর নামের একজন ক্রেতা অভিযোগ করেন, সুরোত আলি ভাটারা পাশের গ্রামের মরে যাওয়ার পর ফেলে দেওয়া কয়েকটি বয়লার মুরগি কুরিয়ে নিয়ে এনে তা দিয়ে চপ তৈরি করে বিক্রি করছে। এ খবর পেয়ে মূহুর্তের মধ্যে দোকানের মধ্যে মানুষ জড়ো হয় । মরা বয়লার মুরগির মাংস দিয়ে আলুর চপ তৈরি করে বিক্রি করার অভিযোগে সুরোতের দোকানের সব চপ ফেলে দিয়ে তার দোকানও বন্ধ করে দেয় স্থানীয়রা।
২ দিন পরে দোকানদার সুরোত আলি ও অভিযোগ কারীদের নিয়ে ভাটারা বাজার কমিটি মরা মুরগির মাংস দিয়ে চপ বিক্রির বিষয়টি নিয়ে শালিশ বসে মঙ্গলবার রাতে। সেখানে সাক্ষী প্রমাণের মাধ্যমে ঘটনার সত্বত্যা পাওয়া যায়।
শালিশে প্রমাণীত হয় যে একই গ্রামের মোঃ আজাহার উদ্দিনের ছেলে মোঃ বাদশা মিয়ার মুরগির খামারে রবিবার সকালে মুরগি মারা যায়। আর সেই অসুস্থ ও মারা যাওয়া মুরগি ৯০ টাকা কেজিতে কিনে আনে সুরোত আলি। আর সেই মরা মুরগির মাংস দিয়ে চপ তৈরি করে বিক্রি করে সে।ইউপি সদস্য মোঃ ইসমাইল হোসেন জানায়, অভিযুক্ত ছুরত আলি সালিশে মরা মুরগির মাংস দিয়ে চপ বিক্রির কথা স্বীকার করেছে। তাই তাকে বন্ধ দোকান খোলতে বালা হয়েছে কিন্ত মাংসের চপ বিক্রি করতে পারবে না এই শর্তে। মোঃ ফারুক হোসেন জানায়, আমি ওর দোকান থেকে নিয়মিত খাই এবং পরিবারের জন্য নিয়ে যাই। বিষয়টি নিয়ে ঘটনাটি প্রশাসনকে অবগত করলেও কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় আমরা হতাশ। শুনছি ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে।
বালিয়াটী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ রুহুল আমিন জানান, ভাটারা বাজারের সুরোত আলি মরা মুরগির মাংস দিয়ে চপ বিক্রি করা নিয়ে এলাকায় চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। আমি উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ও থানা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের সাথে আলাপ করে ছুরত আলির নিকট সংরক্ষিত মুরগির মাংস পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। মরা মুরগি প্রমাণীত হলে তার বিরোদ্ধে ভোক্তা অধিকার আইনে মামলা করা হবে।
মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা হসপিটালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মোঃ লুৎফর রহমান জানান, মরা মুরগির মাংস দিয়ে খাবর তৈরি করে খেলে তার পেটের পীরাসহ ফুডপয়জনিং রোগে আক্তান্ত হবে।
সাটুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আমিনুর রহমান জানায়, এমন অভিযোগ পেয়ে আমি ঘটনা স্থলে ফোর্স পাঠিয়েছিলাম। কে এখনও এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেন নি। অভিযোগ পেলে সুরোত আলিকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।
এ বিষয়ে কথা বলতে বুধবার বিকেলে ভাটারা বাজারে সুরোত অালীর দোকানে গেলে তার দোকান বন্ধ পাওয়া যায়। পরে এ প্রতিবেদক ঘটনার বিষয়ে তার বাড়িতে গেলে তাকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। বাড়ির লোকজন জানায় সে কোথায় জানি গিয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন জানায়, স্থানীয় এক বয়লারের খামারে মুরগি অসুস্থ হয়ে মারা যাচ্ছে। তাই খামার মালিকরা মুরগি জবাই করে কম দামে বিক্রি করছে। সে খানের কিছু মুরগি মারা যাওয়াতে ফেলা দেওয়া হয়েছে। সুরোত কম দামে জবাই করা মুরগি কিনে অানায়, লোকজন বলছে সে মরা মুরগি নিয়ে এসেছে।
এবিএন/মো: সোহেল রানা খান/জসিম/রাজ্জাক