![বঙ্গবন্ধু দারিদ্র বিমোচন ও পল্লী উন্নয়ন একাডেমীর অর্থ লুটপাট](https://archive.abnews24.com/assets/images/news_images/2017/08/05/gopalgong_92616.jpg)
গোপালগঞ্জ, ৫ আগস্ট, এবিনিউজ : গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া বঙ্গবন্ধু দারিদ্র বিমোচন ও পল্লী উন্নয়ন একাডেমীর (বাপার্ড) বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণের তথ্য আরটিএ ফর্ম পুরণের মাধ্যমে আবেদন করেও পাওয়া যায়নি। সম্প্রতি ওই প্রতিষ্ঠানের হস্তশিল্প , পোশাক তৈরী, নার্সারী, সবজি চাষ, হাঁস মুরগী, গবাদীপশু পালনসহ বিভিন্ন ট্রেডের প্রশিক্ষণে বরাদ্দকৃত টাকার অর্ধেক লুটপাটের অভিযোগ ওঠে। এ ব্যাপারে তথ্য চাইতে গেলে প্রতিষ্ঠানের মহাপরিচালক মোঃ আবু সাইদ ফকির আরটিএ ফর্ম পুরণ করে দিতে বলেন।
গত ১৩ জুলাই বাংলাভিশনের গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি মনোজ সাহা, দৈনিক সমকালের কোটালীপাড়া প্রতিনিধি রতন সেন কংকন, যুগান্তরের কোটালীপাড়া প্রতিনিধি এইচ.এম মেহেদী হাসানাত, দৈনিক ইত্তেফাকের কোটালীপাড়া সংবাদদাতা গৌরাঙ্গলাল দাস, কোটালীপাড়া প্রেসক্লাবের সভাপতি মিজানুর রহমান বুলু পৃথকভাবে আরটিএ ফর্ম পুরণ করেন।
ওই ফর্মে সাংবাদিকরা ওই প্রতিষ্ঠানের গত ৩ অর্থ বছরের গৃহীত ও বাস্তবায়নকৃত প্রকল্পের তালিকা, এ সব প্রকল্পের বাজেটের ফটোকপি, প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা, ডাইনিং ম্যানেজার নিয়োগ বিধির ফটোকপি, পরিচালক কৃষি ও প্রাণিসম্পদ প্রেষণে যোগদানের কাগজপত্রের ফটোকপি, সুবিধাভোগীদের মধ্যে বিতরণকৃত সেলাই মেশিন ক্রয় প্রক্রিয়ার পদ্ধতিগত প্রমাণপত্রের ফটো কপি, প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারীদের তালিকা প্রণয়ন প্রক্রিয়া বিধির ফটোকপি।
বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণের প্রশিক্ষকদের যোগ্যতা প্রমানপত্রের ফটোকপি, প্রতিষ্ঠান কতৃক বাস্তবায়িত কর্মকান্ডের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠান প্রধানের লিখিত বক্তব্য সহ তথ্য প্রাপ্তির আবেদন করেন। এছাড়া ওই আবেদনে প্রশিক্ষণের কোর্স উপদেষ্টা, প্রশিক্ষক, কোর্স পরিচালক, কোর্স সমন্বয়কারীর সম্মানী প্রদান ও নিয়োগ প্রক্রিয়ার ছায়া কপি চাওয়া হয়।
গত ১৯ জুলাই ওই প্রতিষ্ঠানের সহকারী পরিচালক মোঃ আব্দুল গনি মিনা চিঠি দিয়ে জানান, যথাযথ কর্মকর্তার কাছে তথ্য প্রাপ্তির আবেদন না করায় আবেদনটি ফেরত দেয়া হলো। সেখানে তিনি যথাযথ কর্মকর্তার কাছে আবেদন করার অনুরোধ করেন। তবে ওই চিঠিতে তিনি যথাযথ কর্মকর্তার নাম পদবী উল্লেখ করেননি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কোটালীপাড়া বঙ্গবন্ধু দারিদ্র বিমোচন ও পল্লী উন্নয়ন একাডেমীর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জানান, হস্তশিল্প ও পোশাক তৈরী প্রতিটি প্রশিক্ষণের জন্য ৩ লাখ ৮১ হাজার ৫ শ’ টাকা বরাদ্দ করা হয়। মাসব্যাপী এ প্রশিক্ষণে ৩০ জন অংশ নেন।
এখানে প্রশিক্ষণার্থীদের খাবার, য়াতায়াত, প্রশিক্ষকের সম্মানী, ব্যবহারিক ক্লাসের মালামাল ক্রয় সহ অন্যান্য খাত থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ লুটপাট করা হয়। এছাড়া ওই প্রতিষ্ঠানে বছর ব্যাপী আয়োজিত বিভিন্ন ট্রেডের প্রশিক্ষণ কর্মশালা থেকে বরাদ্দের অর্ধেক টাকা লুটপাট করা হয় বলে ওই প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
দুর্নীতি ফাঁস হয়ে যাবে এ আশংকায় তথ্য দেয়া হয়নি বলে দাবি করেন ওই প্রতিষ্ঠানের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
ওই প্রতিষ্ঠানের সহকারী পরিচালক মোঃ আব্দুল গনি মিনা বলেন, আবেদনের ১০ কার্য দিবসের আগেই আমরা জবাব দিয়ে তথ্য প্রাপ্তির আবেদন ফিরিয়ে দিয়েছি। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে আদেন না করায় এটি ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। এ প্রতিষ্ঠানের তথ্য প্রদাণের দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা আমি।
প্রতিষ্ঠোনের তথ্য প্রাপ্তির জন্য আমার বরাবর আবেদন করতে হবে। সেটি ওই চিঠিতে ভুল বসত উল্লেখ করা হয়নি। কিন্তু ১৩ জুলাই তথ্য পাওয়ার জন্য গোপালগঞ্জ ও কোটালীপাড়ার সাংবাদিকরা প্রতিষ্ঠানের মহা-পরিচালকের কাছে আবেদন করেন। তিনি দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নয়। এখন আরটিএ ফর্ম পুরণ করে আমার বরাবর আবেদন করলে তথ্য সরবরাহ করব।
এবিএন/লিংকন/জসিম/এমসি