![অবশেষে শিশু নির্যাতনের সেই মাদ্রাসাটি বন্ধ ঘোষণা](https://archive.abnews24.com/assets/images/news_images/2017/08/13/madrasa_abnews_94306.jpg)
বরিশাল, ১৩ আগস্ট, এবিনিউজ : একশ’ টাকা চুরির মিথ্যে অপবাদে মুখে গামছা বেঁধে তৃতীয় শ্রেনীর ছাত্রীকে (৮) অমানুষিক নির্যাতনের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার এজাহারভূক্ত দুই শিক্ষককে গ্রেফতারের পর আজ রবিবার দুপুরে আকস্মিকভাবে মাদ্রাসাটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতার শাশুড়ি অতিগোপনে মাদ্রাসায় এসে বন্ধ ঘোষণা করে তড়িঘড়ি করে মাদ্রাসা তালাবদ্ধ করে পালিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ পাঁচজনকে আটক করেছে। ঘটনাটি জেলার গৌরনদী উপজেলা সদরের খাদিজাতুল কোবরা (রাঃ) মহিলা কওমী মাদ্রাসার।
জানা গেছে, মামলা গ্রহণ না করে থানার ওসি মনিরুল ইসলামের নানা নাটকীয়তার পর পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে শনিবার দুপুরে মামলা নিতে বাধ্য হয় পুলিশ। ওইদিন দুপুরে নির্যাতিতা শিশু সুমাইয়ার মা রেনু বেগম বাদী হয়ে মাদ্রাসার সুপার খাদিজা বেগমসহ ওই মাদ্রাসার অপর তিন মহিলা শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ ওইদিন রাতে দিয়াশুর গ্রামে আত্মগোপনে থাকা এজাহারভূক্ত আসামি শিক্ষক হাফিজা বেগমকে (বাংলা খালামনি) এবং ওইদিন বিকেলে নাঠৈ গ্রামের এক নিকট আত্মীয়র বাড়িতে আত্মগোপনে থাকা অপর শিক্ষক ফাতেমা আক্তার লিজাকে (আরবী খালামনি) গ্রেফতার করেন। এ ঘটনার পর মামলার প্রধান আসামি সুপার খাদিজা বেগম ও তার স্বামী মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা জাহিদুল ইসলামসহ অন্যান্য শিক্ষকরা গ্রেফতারের ভয়ে আত্মগোপন করেন।
এদিকে শিশু ছাত্রী সুমাইয়ার নির্যাতনের দৃশ্য দেখে মাদ্রাসার আবাসিক হলের শতাধিক ছাত্রীদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পরে। এ অবস্থায় রবিবার দুপুরে মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা জাহিদুল ইসলামের শাশুড়ি ও প্রধান আসামি সুপার খাদিজা বেগমের মা মাদ্রাসায় এসে আকস্মিকভাবে মাদ্রাসা বন্ধ ঘোষণা করে ছাত্রীদের হল থেকে বের করে দেন। পরবর্তীতে ছাত্রীদের অভিভাবকরা এসে তাদের সন্তানদের বাড়িতে নিয়ে যায়।
মামলার বাদি নির্যাতিতা ছাত্রী কামরুন নাহার সুমাইয়ার মা উপজেলার পশ্চিম শাওড়া গ্রামের সৌদি প্রবাসী মোঃ কামাল হোসেন বেপারীর স্ত্রী রেনু বেগম জানান, ঘটনার পর থেকেই থানার ওসি মনিরুল ইসলাম রহস্যজনক ভূমিকা পালন করছেন। তিনি আরও বলেন, মাদ্রাসা বন্ধ ঘোষণার পর তড়িঘড়ি করে তালাবদ্ধ করে পালিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ পাঁচজনকে আটক করলেও পরে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়।
এ ব্যাপারে গৌরনদী মডেল থানার ওসি মনিরুল ইসলাম বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই পাঁচজনকে থানায় আনা হয়েছিলো। পরে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, একশ’ টাকা চুরির অপবাদ দিয়ে গত বৃহস্পতিবার রাতে মাদ্রাসার আবাসিক হলের ছাত্রী সুমাইয়ার মুখে গামছা বেঁধে সুপার খাদিজা বেগমসহ তিন মহিলা শিক্ষক অমানুষিক নির্যাতন করে। তারা সুমাইয়ার সমস্ত শরীরে ১৬০টি বেত্রাঘাত করে হাতের আঙ্গুলে সুঁই ফুটায়। গত শুক্রবার সকালে গুরুতর অবস্থায় নির্যাতিতা ছাত্রীকে উদ্ধার করে গৌরনদী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেই থেকে সুমাইয়া এখনও কথা বলতে পারছেনা।
এবিএন/কল্যান/জসিম/এমসি