মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫, ৩ আষাঢ় ১৪৩২
logo

কাঁঠালিয়ায় ভাসমান বীজতলা তৈরী

কাঁঠালিয়ায় ভাসমান বীজতলা তৈরী

ঝালকাঠি, ১৮ আগস্ট, এবিনিউজ : ঝালকাঠি ও কাঁঠালিয়ায় বাড়ি-ঘর থেকে অতিবৃষ্টি ও প্লাবনের পানি নামতে থাকলেও ফসলের মাঠে এখনো জমে থাকায় এই এলাকার কৃষকরা ভাসমান সবজি ও ধানের বীজতলা তৈরী করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।

এ পানি নামতে নামতে পুনরায় চাষাবাদ শুরু করতে অনেক দেরি হয়ে যাওয়ার আশংকায় কৃষকরা ভাসমান সবজি ও ধানের বীজতলা তৈরীতে গুরুত্ব দিয়েছে। জেলা-উপজেলার কৃষি অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সহায়তার অপেক্ষা না করে এই এলাকার কৃষকরা তার অভিজ্ঞতার আলোকে এ ভাসমান বীজতলা কার্যক্রম চলিয়ে যাচ্ছেন।

সরেজমিনে দুটি উপজেলার কয়েকটি এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, অতিবৃষ্টি ও প্লাবনের পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা পুরোদমে নেমে পড়েছেন কৃষিকাজে। এখনো অনেক খেতে বন্যার পানি রয়ে গেছে। এ পানি শুকিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই যেন চারা রোপন করা যায় সে জন্য কৃষকরা পানির উপরেই সবজি ও ধানের ভাসমান বীজতলা তৈরী করেছেন।

যেসব স্থানে বন্যার পানি দ্রুত নেমে যাচ্ছে যেখানে সরাসরি মাঠের মধ্যে বীজতলা তৈরী করছেন কৃষকরা। আর যে সব জায়গায় পানি রয়েছে সেখানে প্রস্তুত করে হচ্ছে ভাসমান বীজতলা। এ সব বীজতলায় সবজির মধ্যে লাউ, শিম, বরবটি, ফুলকপির চারা আর ধানের মধ্যে আমনের বীজ ছিটানো হচ্ছে।

টানাবৃষ্টি ও অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধিতে জমিতে ফসলের মাঠসহ নিচু জমিতে জলাবদ্ধতার কারণে কৃষকেরা কলাগাছের ভেলার উপরে রোপা আমনের ‘ভাসমান’ বীজতলা তৈরি করেছে। প্রাথমিক ভাবে খোজ না নিলেও পানি নামতে শুরু করলে কৃষি বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও সহযোগিতায় এগিয়ে এসেছে। পোকা মাকড়ের হাত থেকে বাঁচতে ‘ভাসমান’ বীজতলা গুলোতে কীটনাশকের পরিবর্তে ব্যবহার হচ্ছে জৈব সার ব্যবহার করছে। আর গাছের ডাল বা কঞ্চি দিয়ে পার্চিং লাগিয়ে পোকার আক্রমণ থেকে বীজতলাগুলো সুস্থ সবল রাখছে।

কৃষি স¤প্রসারণ বিভাগের একটি সূত্র জানায়, তৈরিকৃত ভেলায় প্রতি বর্গমিটারে ৮০-১০০ গ্রাম অঙ্কুরিত বীজ ফেলতে হয়। পানির উপর ভাসমান থাকার কারণে এরূপ বীজতলায় পানি সেচের দরকার হয় না। বীজ বপনের ২৫-৩০ দিন পরেই চারা রোপনের উপযোগী হয়ে যায়। এভাবে তৈরিকৃত এক বর্গমিটার বীজতলার চারা দিয়ে ২০ বর্গমিটার পর্যন্ত রোপন করা যায় অর্থ্যাৎ এক শতাংশ জমির চারা দ্বারা কমপক্ষে ২০ শতাংশ জমি রোপণ করা যায়।

একটা সময় ছিলো ঝালকাঠি-কাঁঠালিয়াসহ জেলার অন্যান্য উপজেলায় অনেক আবাদি জমি অনাবাদি-পতিত জমি হিসাবে পড়ে থাকতো। তবে সময়ের সাথে সাথে কৃষক সমাজও অনেক সচেতন হওয়ায় এখন আর জমি পতিত থাকেনা। কৃষি অফিস থেকে তাদের বন্যার পানিতে ভাসমান আগাম সবজির ও ধানের বীজতলা তৈরী করতে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে।

কয়েকটি স্থানে সবজি ও ধানের বীজতলা হাতে কলমে তৈরী করে কৃষকদের দেখানো হয়েছে। এর পর কৃষকরা নিজেই সবজি ও ধানের বীজতলা তৈরী করছেন।

এবিএন/আজমীর/জসিম/এমসি

ad

প্রধান শিরোনাম

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত