ঢাকা, ০২ সেপ্টেম্বর, এবিনিউজ : ঈদের জামাতে প্রতিপক্ষ গ্রুপের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক বক্তব্য দেওয়াকে কেন্দ্র করে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় ঈদগাহ মাঠে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এসময় গোলাগুলি ও বোমা বিস্ফোরণে আহত হয়েছেন কমপক্ষে ২৪ জন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ছয় জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আলমডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকরাম হোসেন। পরে চুয়াডাঙ্গার পুলিশ সুপার নিজাম উদ্দিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
আজ শনিবার সকালে উপজেলার হাপানিয়া গ্রামের ঈদগাহ মাঠে এ ঘটনা ঘটে। ঈদগাহের পাশেই স্থানীয় হাপানিয়া পুলিশ ক্যাম্প। সংঘর্ষের ঘটনায় আহত ২৪ জনের মধ্যে একজনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকি ২৩ জনের মধ্যে ১৬ জনকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল ও ৭ জনকে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. পরিতোষ কুমার ঘোষ জানান, আহতদের মধ্যে দুই জনের শরীরে গুলি ও বাকিদের শরীরে বোমার স্প্লিন্টারের আঘাত পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, হাপানিয়া গ্রামে শনিবার সকালে ঈদের নামাজ পড়তে ঈদগাহে হাজির হন কয়েক হাজার মুসল্লি। জামাত শুরুর আগে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ইউপি সদস্য ইমদাদুল হক ঈদগাহের মিম্বারে দাঁড়িয়ে আওয়ামী লীগেরই অন্য গ্রুপের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিতে শুরু করেন। সাধারণ মুসল্লিরা এতে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখান। একই সময়ে ওই ইউপি সদস্যের প্রতিপক্ষ গ্রুপের নেতাকর্মীরা বক্তব্য দিতে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। এসময় দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এক পর্যায়ে শুরু হয় গোলাগুলি। এসময় ৩টি বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মাঠে পরপর দু’টি বোমা বিস্ফোরণের পর কয়েক রাউন্ড গুলির শব্দ শোনা যায়। এসময় সাধারণ মুসল্লিরা আতঙ্কে ছোটাছুটি শুরু করেন। পাশের ক্যাম্পের পুলিশ দ্রুত কয়েক রাউন্ড রাবার বুলেট ছুঁড়ে দুই পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
এসময় গুলিবিদ্ধ হয়ে ও বোমার আঘাতে আহত হন ২৪ জন। তাদের উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাদের মধ্যে জয়নাল আবেদীন নামে গুলিবিদ্ধ একজনকে ঢামেক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
অন্য আহতরা হলেন- হালিম আলী, সৌরভ হোসেন, মতিয়ার হোসেন, সেলিম শেখ, মিলন আলী, হাসান আলী, আজিজুল হক, সোহরাব হোসেন, নজরুল ইসলাম, করম আলী, মকলেছুর রহমান, ফিরোজ আহমেদ, সুইট আলী, কায়েম আলী ও মাজেদ আলী।
অন্য পক্ষের আহতরা হলেন- জামাল উদ্দিন, আবু তাহের, ওহাব, কালু, লিটন, মিলন ও রানা। এই গ্রুপের রাহাত আলী ও মন্টু জানান, প্রতিপক্ষের আঘাতে এরা আহত হয়েছেন। তাদের গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ঘটনার পর জাতীয় সংসদের হুইপ সোলায়মান হক জোয়ার্দার হাসপাতালে এসে আহতদের খোঁজখবর নেন। এসময় তিনি অভিযোগ করেন, ইউপি সদস্য ইমদাদুলের নেতৃত্বে গুলি চালায় দুর্বৃত্তরা। অন্যরা বোমা হামলা চালায়।
চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার নিজাম উদ্দিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বলেন, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। গোটা গ্রামে পুলিশি টহল শুরু হয়েছে।’
আলমডাঙ্গা থানার ওসি আকরাম হোসেন জানান, এ ঘটনায় ছয় জনকে আটক করা হয়েছে।
এবিএন/জনি/জসিম/জেডি