শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২ ফাল্গুন ১৪৩১
logo
  • হোম
  • সারাদেশ
  • মেলান্দহে দেড় শতাধিক গ্রামবাসীর বিরুদ্বে মামলা

মেলান্দহে দেড় শতাধিক গ্রামবাসীর বিরুদ্বে মামলা

মেলান্দহে দেড় শতাধিক গ্রামবাসীর বিরুদ্বে মামলা

জামালপুর, ৫ সেপ্টেম্বর, এবিনিউজ : জামালপুরের মেলান্দহের হাতিজার চারিয়া গ্রামের দেড় শতাধিক লোকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের ঘটনায় এলাকায় জনশুন্য হয়ে পড়েছে।

মেলান্দহ থানার এসআই নিল কমল চক্রবর্তী বাদি হয়ে পৃথক আরেকটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় দেড় শতাধিক গ্রামবাসিকে আসামী করা হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৯ জনকে।

এরা হলেন, বাচ্চু (৫০) ও তার ২ ছেলে জাকিরুল (৩৫), সাত্তার (২৫), কালুর ২ ছেলে বাহার আলী (৫০), ছাবেদ আলী (৫০), বেঙ্গুর ছেলে সলিম শেখ (৩৫), জলিলের ছেলে নাজির শেখ (৬০), আসমতের ছেলে আবু বকর (৪০), লাল মিয়ার ছেলে চা-বিক্রেতা রিপন (১৬)। এদেরকে জামালপুর কোর্টে চালান দিয়েছে।

বর্তমানে গ্রেপ্তার আতংকে পুরুষশুণ্য বীরহাতিজার চারিয়া গ্রামে এক শ্রেণির দুস্কৃতিকারীরা পুলিশের পরিচয়ে দিনে-রাতে বিভিন্ন বাড়িতে হানা দিয়ে মালামাল চুরি করছে। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ১৫/১৬টি বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটেছে। ভীতিকর পরিস্থিতে মসজিদে আজান এবং মন্দিরে উপাসনা বন্ধ হয়েছে। দৃস্কৃতিকারীদের ভয়ে এলাকার ছাত্রী-যুবতীরা পাশের গ্রাম আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। ভিন এলাকার মানুষও ওই গ্রামের উপর দিয়ে চলাচলে সতর্কতা অবলম্বন করছেন।

ভীতিকর পরিস্থিতিতে আজ মঙ্গলবার বিকাল ৩টার রদিকে এমপি ফরিদুল হক খান দুলালসহ প্রশাসনের লোকজন এলাকায় পরিদর্শন করেছেন।

এ সময় গ্রেপ্তারকৃত স্বজনরা এমপির কাছে অভিযোগ করে বলেন, ঘটনার সাথে জড়িত নয় এমন নির্দোষীদের গ্রেপ্তার করে নেয়া হচ্ছে। তিনি জনশুণ্য গ্রামে চুরির উৎপাত বন্ধ এবং নিরাপরাধীদের গ্রেপ্তার নাকরতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন।

ওসি মাজহারুল করিম জানান-পুলিশের কাজে বাধা-মারধর এবং গাড়ি ভাংচুরের ঘটনায় ভিডিও ফুটেজ দেখে আসামীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নিরাপরাধ লোকদের গ্রেপ্তার নাকরতে আইওকে বলা আছে।

জানাগেছে, কলাবাধা গ্রামের মিনাল (৩৮) ও তার স্ত্রী মিনা (২৯) নারায়নগঞ্জে ফকিরা গার্মেন্টসে চাকরী করতো। স্বামী মিনাল আরেক মেয়েকে বিয়ে করে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ চলছিল। ২ সেপ্টেম্বর মিনাকে হত্যার পর শ্বশুরালয়ের কাছে উল্টো স্ত্রীকে দাবী করে এবং তার ২সন্তানকে নিয়ে শটকে পড়তে চায়।

এ সময় স্বজনরা মিনালকে আটকে রেখে থানায় খবর দেন। কিন্তু পুলিশ তাদের অভিযোগ পাত্তা দেয় নি। পরদিন সকালে কলাবাধা গ্রামের একটি পুকুরে হাত-পা-মুখ বাধা বস্তাবন্দি লাশ ভেসে ওঠলে ওসি-চেয়ারম্যান নড়েচড়ে বসেন। একপর্যায়ে আসামী মিনালকে উদ্বার করতে যায়।

এ সময় ওসি ও চেয়ারম্যান জনতার রোষানলে পড়লে পরিস্থিতি ঘোলাটে হয়। পরে পুলিশ-জনতা ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার একপর্যায়ে পুলিশ ও চেয়ারম্যানের উপর হামলা চালায়। স্বজনদের অভিযোগ আটক মিনালকে পুলিশ হেফাজতে নিতে চেয়ারম্যান-ওসিকে কাছে ধর্না দেয়া হয়। পুলিশ অভিযোগের গুরুত্ব দেয় নি। পরদিন ওসি সিভিলে এসে আসামীকে নিয়ে টেনে হেচড়া করলে জনতার রোষানলে পড়লে অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

এ ঘটনায় গত ৩ সেপ্টেম্বর নিহতের ভাই রাশেদ বাদি হয়ে স্বামী মিনালসহ ৬জনের বিরুদ্বে মামলা (নং-৩) দায়ের করেন। ওদিকে গ্রেপ্তারকৃত নিহতের স্বামী মিনাল প্রধান আসামী পুলিশ হেফাজতে জামালপুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।

নিহতের স্বজনরা থানায় অভিযোদ দিতে আসার বিষয়টি স্বীকার করে ওসি মাজহারুল করিম বলেন, তারা বলেছিল মিনা নারায়নগঞ্জে নিখোঁজ হয়। ওখানে একজনের লাশও পাওয়া যায়। কাজেই নারায়নগঞ্জের ঘটনায় আমি অভিযোগ নিতে পারি না। দুইদিন যাবৎ একজন লোককে আটকে রাখাটা অন্যায়। সেই হিসেবে হত্যাকারী স্বামীকে পুলিশ হেফাজতে নিতে আইনগত কোন বাধা ছিল কি না? এমন প্রশ্নে ওসি বলেন-পুরো বিষয়টিই ছিল একটি ভিন্ন প্রেক্ষাপট।

এবিএন/জামাল/জসিম/এমসি

ad

প্রধান শিরোনাম

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত