শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২ ফাল্গুন ১৪৩১
logo

সোনাগাজীতে আশ্রয় নিয়েছে ১৩ রোহিঙ্গা মুসলমান

সোনাগাজীতে আশ্রয় নিয়েছে ১৩ রোহিঙ্গা মুসলমান

সোনাগাজী(ফেনী), ১২ সেপ্টেম্বর, এবিনিউজ :মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে সেনাবাহিনী ও বৌদ্ধ সন্ত্রাসীদের নির্যাতনে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা পরিবারের ১৩ সদস্য সোনাগাজীতে আশ্রয় নিয়েছে। আত্মীয়তার সুত্রে রোহিঙ্গা পরিবারটি টেকনাফ থেকে ১০ সেপ্টেম্বর সোনাগাজীর চরদরবেশ ইউপির চরশাহাভিকারী গ্রামের মাতব্বর বাড়ীতে আশ্রয় গ্রহন করে।

আশ্রয় গ্রহনকারী সবাই মিয়ানমানের আরাকান রাজ্যের তাংবাজার থানাধীন বাইচি ধাং মরু ইউপির চাঙ্গেনা গ্রামের বাসিন্দা বলে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে। আশ্রয় গ্রহনকারী রোহিঙ্গারা হলেন( ১)মোহাম্মদ জাফর আহাম্মদ পিতা-মৃত আশ্রাফ মিয়া,(২)আম্বিয়া খাতুন,স্বামী- জাফর আহাম্মদ(৩) মৌলভি মোহাম্মদ সফি,পিতা-জাফর আহাম্মদ(৪) ছেনুয়ারা বেগম,স্বামী-মৌলভি সফি(৫) আজিজুল হক,পিতা- আব্দুল হাই(৬) খতিজা বেগম,স্বামী-আব্দুল হাই(৭) লাকি(৮)মোহাম্মদ আলম(৯)মোহাম্মদ রফিক(১০)মোহাম্মদ ওমর(১১)মোহাম্মদ হাসান,সর্ব পিতা মৌলভি সফি(১২) মোচাম্মদ নুর হাসিনা(১৩)মোচাম্মদ আছিয়া পিতা-আজিজুল হক।১৩ সদস্যদের পরিবারটিতে ৭ জনই শিশু যাদের বয়ষ ৪ মাস থেকে শুরু করে ৯ বছর।খবর পেয়ে ১১ সেপ্টেম্বর সোনাগাজী মডেল থানার ওসি হুমায়ন কবির ও ওসি তদন্ত হারুনুর রশিদ মাতব্বর বাড়ীতে উপস্থিত হয়ে আশ্রয়গ্রহনকারী রোহিঙ্গা পরিবারটির খোঁজ খবর নেন।

এ বিষয়ে ওসি হুমায়ন কবির জানান, মাতব্বর বাড়ীর আব্দুর রশিদের মেয়ে শিউলি আক্তারের সাথে ২০১২ সালে চট্রগ্রামে গার্মেন্টেসে চাকুরীর সুবাদে রোহিঙ্গা মুসলমান জাফর আহম্মদের ছেলে মোহাম্মদ আনোয়ারের সাথে বিবাহ হয়।আনোয়ার ওই বছর মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে অবস্থান করছে। আত্মীয়তার সুত্রে রোহিঙ্গা পরিবারটি সোনাগাজীতে অবস্থান করছে।

ওসি আরো জানান,মানবিক দিক বিবেচনা করে রোহিঙ্গা পরিবারটিকে দেখাশুনা করার জন্য স্থানীয় চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম ভুট্টুকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং পরিবারটির অবস্থানের বিষয়ে উদ্ধতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে অবহিত করা হয়েছে।

সরেজমিন উপস্থিত হয়ে জানা গেছে ১৩ রোহিঙ্গার মধ্যে সবাই অসু্স্থ। জ্বর, শরীরে আঘাতের চিহ্ন সহ তারা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত।এরমধ্যে ৭ শিশু বেশি অসু্স্থ। ৩ মহিলা জ্বরে ভুগছেন।পুরুষ সদস্যের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

মহিলা রোহিঙ্গারা বাংলা ভাষা একেবারেই বুঝেন না। কিন্তু পুরুষ রোহিঙ্গারা বাংলা ভাষা অনেকটাই বুঝেন। ১৩ সদস্য পরিবারের অভিভাবক মোহাম্মদ জাফর আহম্মদ বলেন, তার যুবতী দুই মেয়ে কে বৌদ্ধরা গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করেছে। আরেক মেয়ের কোন খোঁজ -খবর পায়নি। তাদের বাড়ী -ঘর বৌদ্ধরা আগুন দিয়ে জালিয়ে দিয়েছে।

জাফর আরো বলেন, আরাকান রাজ্য থেকে জঙ্গল, নদী, পাহাড় অতিক্রম করে বাংলাদেশে এসেছি জীবন বাচাঁতে।১৪ দিন পানি খেয়ে জীবন বাঁচাতে হয়েছে। ঘুম যেতে পারি নি। শিশুদেরকে কোলে করে টানা ১৪ দিন হাটতে হয়েছে। বাংলাদেশে এসে নতুন প্রাণ পেয়েছেন। জাফরের বড় ছেলে মৌলভি মোহাম্মদ সফি আরাকানে স্থানীয় মসজিদের ইমাম ছিলেন।তিনি জানান, বৌদ্ধরা ইসলাম বিরোধী। বৌদ্ধরা মুসলমানের দেখতে পারেনা। বৌদ্ধদের সামনে আল্লাকেও স্মরন করা যায়না।

এ দিকে স্থানীয় এলাকাবাসীর অনেক কে দেখা গেছে তারা বিভিন্ন ভাবে রোহিঙ্গাদেরকে সহযোগীতা করছে।

সোনাগাজী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিনহাজুর রহমান জানিয়েছেন,আশ্রয়গ্রহনকারী রোহিঙ্গা পরিবারটির প্রতি মানবিক দিক বিবেচনা করা হয়েছে।তবে তারা যেন অন্য কোথাও চলে যেতে না পারে সে ব্যাবস্থা নিতে পুলিশ প্রশাসন কে নজর রাখতে বলা হয়েছে।

এবিএন/আবুল হোসেন রিপন/জসিম/নির্ঝর

ad

প্রধান শিরোনাম

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত