
কুলাউড়া (মৌলভীবাজার), ০৭ সেপ্টেম্বর, এবিনিউজ : মৌলভীবাজারের কুলাউড়া ও জুড়ীর ৬ লাখ মানুষের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট কুলাউড়া হাসপাতালে মাত্র কর্মরত আছেন ৬ ডাক্তার। ৩৯ জন ডাক্তারের পদ এখানে থাকলেও ৩৩ টি পদ শূন্য থাকায় কর্মরতরা হিমশিম খাচ্ছেন রোগীদের স্বাস্থ্য সেবা প্রদানে। ৫০ বেডের হাসপাতালটি নিজেই এখন রুগ্ন। ডাক্তার সংকট, পর্যাপ্ত ঔষুধ।
এখানে স্বাস্থ্য সেবা চলছে জোড়া তালি দিয়ে। এর সুযোগে হাসপাতালে আসা রোগীরা সরকারী হাসপাতালে পর্যাপ্ত সেবা না থাকায় প্রায় রোগিকে চিকিৎসা তড়িঘড়ি করে জেলা সদর কিংবা সিলেট ওসমানী হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। এতেও যন্ত্রনার শেষ নেই। সরকারী এম্বুলেন্স চালক গাড়ীর যান্ত্রিক ত্রুটির অজুহাত দেখিয়ে অনেক সময় রোগীদের সরকারী এ্যাম্বুলেন্স সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে থাকে। যার ফলে চড়া দাম দিয়ে রোগীদেরকে নিতে হয় প্রাইভেট এ্যাম্বুলেন্স।
জানা যায়, কুলাউড়া হাসপাতালে মিলিয়ে ১১ জন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারসহ মোট ৩৯ জন ডাক্তারের পদ রয়েছে। যার মধ্যে কর্মরত আছেন ৫ জন এমবিবিএস ডাক্তার ও একজন চর্ম রোগের বিশেষজ্ঞ ডাক্তার। প্রতিদিন কুলাউড়া হাসপাতালে ৪ থেকে ৫শ জন রোগি আউটডোরে চিকিৎসা গ্রহণ করে থাকেন। মাত্র ৫ জন ডাক্তারের পক্ষে এত রোগিকে সেবা দেয়া কঠিন কাজ।
তাছাড়া ৫০ শয্যা হাসপাতালে প্রায়ই ভর্তি রোগির সংখ্যা ৬০ জনের অধিক থাকে। ফলে মেঝেতে বিছানা বিছিয়ে রোগিকে চিকিৎসা দেয়া হয়। অফিসের কাজ কর্ম পরিচালনার জন্য প্রধান করণিক ও প্রধান হিসাবরক্ষক দুটো পদই শুন্য। তাছাড়া পরিচ্ছন্নতাকর্মী ৫ জনের মধ্যে ৩ জন প্রেষণে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে কর্মরত। মাত্র একজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী দিয়ে হাসপাতালের কাজ সম্পন্ন করা দুষ্কর।
ফিল্ড পর্যায়ে ৩ জন স্বাস্থ্য পরিদর্শকের সবক’টি পদই শুন্য। সহকারি স্বাস্থ্য পরিদর্শকের ১৩টি পদের মধ্যে ৭ জন কর্মরত আছেন। স্বাস্থ্য সহকারি ৬১ জনের মধ্যে ৫৩ জন কর্মরত আছেন। তবে ২০ জন অবসরে যাওয়ার অপেক্ষায়। ফলে হাসপাতালে এবং মাঠে স্বাস্থ্য সেবা পরিচালনা করা ক্রমশ দুষ্কর হয়ে পড়ছে।
এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নুরুল হক জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমিটির সভায় একাধিকবার ডাক্তার সঙ্কটের কথা সভায় উত্থাপন করলেও কোন প্রতিকার মেলেনি। তাছাড়া বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে বার বার লেখার পরও কোন ডাক্তার মেলেনি। এ অবস্থায় কর্মরতদের দায়িত্ব পালন করাও মুশকিল হয়ে পড়ছে।
এবিএন/ময়নুল হক পবন/জসিম/এমসি