বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১ ফাল্গুন ১৪৩১
logo
  • হোম
  • সারাদেশ
  • মা‌নিকগ‌ঞ্জে পদ্মা যমুনায় ইলিশ রক্ষা অভিযা‌নে ১৩ দিনে ২৯৯ জন দ‌ন্ডিত

মা‌নিকগ‌ঞ্জে পদ্মা যমুনায় ইলিশ রক্ষা অভিযা‌নে ১৩ দিনে ২৯৯ জন দ‌ন্ডিত

মা‌নিকগ‌ঞ্জে পদ্মা যমুনায় ইলিশ রক্ষা অভিযা‌নে ১৩ দিনে ২৯৯ জন দ‌ন্ডিত

মা‌নিকগঞ্জ, ১৪ সেপ্টেম্বর, এবিনিউজ : সরকারী ঘোষণা অমান্য করে নিষিদ্ধ সময়ে মা‌নিকগ‌ঞ্জের পদ্মা ও যমুনায় ইলিশ শিকারের দায়ে ‌জেলার শিবালয় ও দৌলতপুর উপ‌জেলায় গত ১৩ দি‌নে ২৯৯ জন‌কে জেল জরিমানা করা হ‌য়ে‌ছে। অার এ সময় প্রায় ১৬ লাখ মিটার নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়। মানিকগঞ্জের শিবালয় উপ‌জেলায় নিষিদ্ধ সময়ে ইলিশ শিকারের দায়ে ২২৭ জন‌কে ও দৌলতপুর উপ‌জেলায় ৭২ জন‌কে অাট‌কের পর জেল জ‌রিমানা ক‌রে‌ছে ভ্রাম্যমান অাদালত।

জানা গে‌ছে, সরকারি ভাবে চলতি ১লা অক্টোবর থেকে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন ইলিশ ধরা, মজুদ, পরিবহন নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানের অংশ হিসেবে দেশের ২৭ জেলার মধ্যে অন্যতম মানিকগঞ্জের পদ্মা যমুনা বেষ্ঠিত শিবালয়, দৌলতপুর ও হরিরামপুর উপজেলার তালিকাভূক্ত জেলেদের নিষিদ্ধ সময়ে ইলিশ শিকার বন্ধ রাখতে খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। এ তিনটি উপজেলার অন্তত ৬০ কিলোমিটার বিস্তৃত পদ্মা যমুনা বক্ষে ইতিপূর্বে নিষিদ্ধ সময়ে ইলিশ ধরার প্রবনতা লক্ষ্য করা যায়। গত কয়েক মওসুমে ভ্রাম্যমান আদালত অভিযান চালিয়ে এদের জেল জরিমানা ও জাল নৌকা আটক করে। প্র‌তিবা‌বের ম‌তো এবার ও এ সকল এলাকার মৌসুমী জেলে ইলিশ ধরায় নে‌মে‌ছে। পেশাজীবী জেলেরাও এ ক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিশেষ করে স্থানীয় একশ্রেণির জনপ্রতিনিধি ও প্রভাবশালী মৎস্য আড়ৎ ব্যবসায়ীদের মদদে দুর্গম চরাঞ্চলের ভিন্ন পেশার মানুষ কৌতুহলবশত নিষিদ্ধ সময়ে ইলিশ ধরার কাজ কর‌ছে। গতকাল শুক্রবার ও অভিযান চালিয়ে শিবালয় উপ‌জেলায় ২০ জেলেকে জেল জরিমানা ও পাঁচ লাখ মিটার জাল জব্দ করেছে শিবালয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।

১ অক্টোবর শুরু হওয়া এ অভিযানে এ পর্যন্ত মা‌নিকগ‌ঞ্জের শিবালয় ও দৌলতপুর উপ‌জেলায় ২৯৯ জেলেকে আটক ও প্রায় ১৬ লাখ মিটার নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়। জব্দ জাল আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। শিবাল‌য়ে আটক জেলেদের মধ্যে ১১৩ জনের কারাদণ্ড ও ১১৪ জনকে অর্থদণ্ড প্রদান ক‌রে‌ছে শিবালয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামাল মোহাম্মদ রাশেদ।

অার দৌলতপুর উপ‌জেলায় অাটক জে‌লে‌দের ম‌ধ্যে ৩৭ জন‌কে কারাদন্ড ও ৩৫ জন‌কে অর্থদন্ড দি‌য়ে‌ছে দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কানিজ ফাতেমা। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যেমে এ জেল জ‌রিমানা করা হয়। উপজেলা প্রশাসন, মৎস্য অফিস, থানা পুলিশ ও নৌপুলিশ যৌথভাবে এ অভিযান পরিচালনা করে আসছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, মানিকগঞ্জের ৩ উপজেলার পদ্মা-যমুনার অংশে অন্তত ৬০ কিলোমিটার এলাকায় মা ইলিশ বিচরণের ক্ষেত্র রয়েছে। এ সুবাদে এক শ্রেণির মওসুমী ইলিশ শিকারী আইন অমান্য করে নদীতে জাল ফেলছে। এদের বিরুদ্ধে স্থানীয় প্রশাসন কঠোর ব্যবস্থা নিলেও অনেকেই ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। ইতিমধ্যে, নদীতে পরিচালিত অভিযানে আটক স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের কিছু আত্মীয়-স্বজনের নাম প্রকাশ পেয়েছে।

শিবাল‌য়ের পাটুরিয়া নৌপুলিশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমিনূল ইসলাম জানায়, অভিযান সফল করতে স্থানীয় প্রশাসনকে সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদান করা হচ্ছে। অভিযানে আটককৃতদের ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে শাস্তি দেয়া হচ্ছে।

শিবালয় উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা রফিকুল আলম জানায়, চলতি অভিযানে আটক প্রায় ১৫ লাখ মিটার নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল জব্দ করে পুড়িয়ে ফেলা হয়। বানিজ্যিক উদ্দেশ্যে ইলিশ মজুদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা হিসেবে একটি বরফকল জব্দ করা হয়। জেলেদের কাছ থেকে উদ্ধারকৃত ইলিশ স্থানীয় এতিমখানা-মাদ্রাসা, মন্দির, গীর্জাসহ দরিদ্র লোকজনকে দেয়া হয়।

শিবালয় ইউএনও কামাল মোহাম্মদ রাশেদ জানায়, সরকার ঘোষিত সময়ে ইলিশ নিধনের অভিযোগে আটককৃতদের কারা ও অর্থ দন্ড দেয়া হয়েছে। এ অভিযান আগামী ২২ অক্টেবর পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।

এবিএন/সো‌হেল রানা খান/জসিম/এমসি

ad

প্রধান শিরোনাম

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত