মানিকগঞ্জ, ২৫ অক্টোবর, এবিনিউজ : মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলা প্রশাসনে অফিস ফাঁকির অভিযোগে ১৩ কর্মকর্তাকে বদলীর তালিকা তৈরি করায় আতংক বিরাজ করছে। ইতিমধ্যেই ৬ কর্মকর্তাকে অন্যত্র বদলী করা হয়েছে। বাকি ৭ জনের মধ্যে ৫ কর্মকর্তা তাদের অফিস ফাঁকির দায় এড়াতে স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট দফতরে লিখিত আবেদন করেছে। এ নিয়ে অন্যান্য কর্মকর্তা কর্মচারীদের মধ্যেও বদলী আতংক বিরাজ করছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলা রাজধানী ঢাকার পার্শ্ববর্তী হওয়ায় দুর্নীতি পরায়ন অধিকাংশ কর্মকর্তা কর্মচারী উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে এ উপজেলায় যোগদান করে থাকে। যাতে তারা ঢাকা কিংবা সাভার থেকে এসে অফিস করতে পারে। যোগদান করেই ওই কর্মকর্তারা অফিস ফাঁকির প্রতিযোগীতায় নামে। এতে সরকারি কাজ মারাত্মক ভাবে বিঘ্ন ঘটছে। কর্মকর্তাদের অনুপস্থিতি ও অনিয়মের সুযোগ নিচ্ছেন অধিনস্থ কর্মচারীরাও। ফলে, উপজেলাবাসী কাঙ্খিত সেবা থেকে বঞ্চিতসহ হয়রানির শিকার হচ্ছে। এ নিয়ে কয়েকটি সংবাদ প্রকাশিত হলে দৃষ্টি পড়ে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের। বিভিন্ন সময় সরকারি গোয়েন্দা সংস্থার তদন্তের প্রেক্ষিতে কর্মকতাদের অফিস ফাঁকির সত্যতা মিলে। এতে উপজেলা প্রশাসনে কর্মরত ১৩ কর্মকর্তাকে অভিযুক্ত করে তালিকা করা হয়।
ইতিমধ্যে পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা মেহেদী আক্তার, সাব রেজিষ্ট্রার মুস্তাফিজুর রহমান, হিসাব রক্ষন অফিসার সুধির চন্দ্র হালদার, খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মো: দিলদার মাহমুদ, মৎস্য সম্প্রসারণ কর্মকর্তা অর্পনা বর্মন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সহকারি প্রোগ্রামার মো: শাকিল আহমেদকে বদলী করা হয়েছে। ওই তালিকার ৬ জনসহ উপজেলা প্রশাসনে বিরাজ করছে বদলী আতংক। এর মধ্যে সমবায় অফিসার আখিনুর ইয়াসমিন, যুব উন্নয়ন অফিসার মতিয়ার রহমান মন্ডল, প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার মো. শফিকুল ইসলাম, প্রাণি সম্পদ অফিসার ডা. মো:মাহবুবুল ইসলাম ও স্বাস্থ্য ও প: প: কর্মকর্তা ডা. সেকেন্দার আলী মোল্লাহ স্থানীয় সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম বরাবর তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ থেকে অব্যাহতি চেয়ে লিখিত আবেদন করেছে।
এদিকে, উপজেলা প্রশাসনের বহুল আলোচিত উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুর রাজ্জাক ডিপ্লোমাধারী হয়েও একই চেয়ারে ৯ বছর যাবত আছেন বহাল তবিয়তে। তিনি ভারপ্রাপ্ত হিসেবে উপজেলা ইঞ্জিনিয়ারের চেয়ারটি আঁকড়ে ধরে ঠিকই অফিস ফাঁকিসহ নানা অনিয়নম দুর্নীতি করে বেড়াচ্ছে। অপরদিকে, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এম আবু ওবায়দা আলী ও সহকারি শিক্ষা অফিসার মো: মনিরুজ্জামান খান এবং সমাজ সেবা অফিসার আব্দুল আলীমের বিরুদ্ধে অফিস ফাঁকিসহ নানা অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।
সিংগাইর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো:যুবায়ের জানায়, এটা সরকারি কোন সংস্থা থেকে তদন্ত হয়েছে। যা পুর্ণাঙ্গ নয়। উপজেলা চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে মিটিং করেছি, এ বিষয়ে আরো অধিকতর তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। তালিকায় কতিপয় দায়ী কর্মকর্তারা বাদ পড়েছেন। আবার নিরাপরাধ কর্মকর্তারা তালিকাভুক্ত হয়েছে বলে তিনি দাবী করে।
এবিএন/মো: সোহেল রানা খান/জসিম/নির্ঝর