মানিকগঞ্জ, ২৬ অক্টোবর, এবিনিউজ : স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপনের নাম ভাঙিয়ে মানিকগঞ্জে পরিবহন সেক্টরে চাঁদাবাজির অভিযোগ ওঠেছে।
বুধবার বিকেলে জেলা প্রশাসক বরবারে লিখিতভাবে এমন অভিযোগ করেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক ও জেলা শ্রমিকলীগ সভাপতি।
সোনার ডিম হিসেবে খ্যাত পরিবহন সেক্টর নিয়ন্ত্রণ নিতে ক্ষমতাসীন দলের দুই পক্ষের নেতাকর্মীরা ইতিমধ্যে বিভক্ত হয়ে পড়েছে।
লিখিত অভিযোগে অবৈধ চাঁদাবাজি বন্ধসহ ৫ দফা দাবি তুলে ধরা হয়। আগামী ৮ নভেম্বরের মধ্যে দাবি মানা না হলে পরদিন ৯ নভেম্বর জেলায় ৪৮ ঘণ্টা পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেয়া হয়েছে।
মানিকগঞ্জে পরিবহন সেক্টরের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বেশ কিছু দিন ধরে ক্ষমতাসীন দলের নেতা কর্মীরা বিভক্ত হয়ে পড়েছে। এক পক্ষ আরেক পক্ষকে চাঁদাবাজ উল্লেখ করে বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ ও কর্মসূচি পালন করে আসছে।
মানিকগঞ্জ জেলা বাস-মিনিবাস-মাইক্রোবাস ওনার্স গ্রুপের আহ্বায়ক জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এনায়েত হোসেন টিপু ও মানিকগঞ্জ জেলা সড়ক পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সদস্য সচিব জেলা শ্রমিকলীগের সভাপতি বাবুল সরকারের লিখিত অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, গত ১৩ অক্টোবর স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপনের নাম ভাঙিয়ে তার ভাই সদর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো: ইসরাফিল হোসেন ও পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বহিরাগত লোকজন নিয়ে তাদের অফিস ও টার্মিনাল দখল করে নেয়।
এরপর মালিক শ্রমিকদের কাছ থেকে জোড় করে চাঁদা আদায় করে আসছে। এর প্রতিবাদে মানিকগঞ্জ জেলা বাস মিনিবাস মাইক্রোবাস ওনার্স গ্রুপ ও মানিকগঞ্জ জেলা সড়ক পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ যৌথভাবে ১৫ অক্টোবর বাস ধর্মঘটের ডাক দেয়। জেলা প্রশাসকের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে ওদিনই সকাল ১০ টায় ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেয়া হয়।
এ ঘটনায় মালিক শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। যে কোনো মুহূর্তে মানিকগঞ্জে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা মারাত্মক অচলাবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দখলদারদের উচ্ছেদ, নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাছে অফিস ও টার্মিনাল বুঝিয়ে দেয়া,দখলদারদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা, পরিবহন মালিক শ্রমিক সংগঠনে দলীয়করণ বন্ধ ও মালিক শ্রমিকদের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়েছে লিখিত অভিযোগে।
এসব দাবি মানা না হলে ৯ নভেম্বর থেকে মানিকগঞ্জ জেলায় ৪৮ ঘণ্টার সড়ক পরিবহন ধর্মঘটের আল্টিমেটাম দেয়া হয়েছে।
মানিকগঞ্জ জেলা বাস মিনিবাস মাইক্রোবাস, অটোট্যাম্পু ওনার্স গ্রুপের সভাপতি ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম জানায়, কাজী এনায়েত হোসেন টিপু ও বাবুল সরকারের কমিটি অবৈধ। তারা দীর্ঘদিন ধরে পরিবহন সেক্টরে চাঁদাবাজি করে আসছিল।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপনের নির্দেশে আমাদের বৈধ কমিটি এখন থেকে পরিবহন সেক্টরের কার্যক্রম পরিচালনা করছি।
চাঁদা আদায়ের অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি আরও বলেন, তাদের সংগঠন কোনো চাঁদা আদায় করে না। কাজী এনায়েত হোসেন টিপু ও বাবুল সরকারের লোকজন আগের পরিবহন থেকে চাঁদা আদায় করতো বর্তমানে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পরিবহন থেকে সব ধরনের চাঁদা আদায় বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসক নাজমুছ সাদাত সেলিম জানায়, মালিক শ্রমিকদের ব্যানারে ৫ দফা দাবি সংযুক্ত একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগ কারীদের সঙ্গে বসে বিষয়টি সমাধান করা হবে।
এ ব্যপারে কথা বলতে প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপনের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলে তিনি রিসিভ করেননি।
এবিএন/মো: সোহেল রানা খান/জসিম/নির্ঝর