বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১ ফাল্গুন ১৪৩১
logo
  • হোম
  • সারাদেশ
  • কাশিয়ানী পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ

কাশিয়ানী পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ

কাশিয়ানী পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ

গোপালগঞ্জ, ২৬ অক্টোবর, এবিনিউজ : গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) সত্য রঞ্জন রায়ের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।

আসবাবপত্র ও অন্যান্য উপকরণ ক্রয়ে ভূয়া বিল-ভাউচার দেখিয়ে অর্থ আত্মসাৎ, ঘুষ গ্রহণ, স্বাক্ষর জাল, ক্ষমতার অপব্যবহার ও কর্মকর্তা কর্মচারীদের হয়রানীসহ নানা অনিয়মের বিষয়ে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের মহাপরিচালক বরাবর একাধিক লিখিত অভিযোগ করেছেন ওই দপ্তরের ক্ষতিগ্রস্থ এবং ভুক্তভোগী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

অভিযোগে প্রকাশ, পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) সত্য রঞ্জন রায় কাশিয়ানী উপজেলায় যোগদানের পর থেকে নানা অনিয়ম ও দূর্নীতি করে আসছেন। তিনি ২০১৪-১৫ ও ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে কর্মচারীদের ভ্রমণ ব্যয় বাবদ ৬ লাখ ২৩ হাজার টাকা বরাদ্দ আসলেও তিনি কর্মচারীদের দুই বছরের ২ হাজার করে টাকা দিয়ে বাকী টাকা বিভিন্ন নাম দিয়ে সই জাল করে উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন।

২০১৪-১৫ অর্থ বছরে আসবাবপত্র ক্রয়ের নামে সই জাল করে ভূয়া বিল ভাউচার জমা দিয়ে ৮০ হাজার টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন। তিনি উপজেলার কোথাও পরিদর্শন না গিয়েও নিয়মবহির্ভূতভাবে ভ্রমণ ব্যয় খাত থেকে ১ লাখ ৮৯ হাজার টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন।

মালামাল ক্রয়, পরিবহন ব্যয়, নৌকা ভাড়ার বিল, মিটিং ব্যয় ও বিবিধ ব্যয় বিলের টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছেন। মোটর সাইকেল চালাতে পারেন না। তবুও পি ও এল খাতের বিলের টাকা উত্তোলন করেন। সকল বিলের টাকা ব্যাংকের স্ব স্ব হিসাব নাম্বারে প্রদানের নির্দেশনা থাকলেও তিনি ৫০% থেকে ৬০% কর্তন করে রেখে প্রদান করেন।

পরিবার পরিকল্পনা সহকারী মিনতী রানী বিশ্বাস নামে এক নারীর কাছ থেকে সত্য রঞ্জন রায় লাম্পগ্রান্ট, জিপিএফ চুড়ান্ত এবং আনুতোষিক বিল উত্তোলনের জন্য দেড় লাখ টাকা ঘুষগ্রহণ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। একইভাবে প্রীতি কনা বিশ্বাস, ঝর্ণা রানী বিশ্বাস ও মিসেস মল্লিকা রানী মজুমদারের কাছ থেকেও উৎকোচ গ্রহণ করেছেন তিনি।

অবসরপ্রাপ্ত পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক সরদার লুৎফর রহমান বলেন, ‘আমার সিলেকশন গ্রেডের বিল স্বাক্ষর করতে সত্য রঞ্জনকে ১০ হাজার টাকা ঘুষ দেয়া লাগছে। এছাড়া লামগ্রান্ট ও জিপিএফ চূড়ান্ত টাকা উত্তোলনের জন্য ৫০ হাজার টাকা দাবি করলে, আমি দিতে অস্বীকার করলে তিনি আমাকে নানাভাবে হয়রানী করেন।’ এমন অভিযোগ রয়েছে পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক সুধাংশু কুমার দাস ও সিরাজুল ইসলামসহ অনেকেরই।

সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগকারী এসকেন্দার শেখ নামে এক ফার্ণিচার ব্যবসায়ী বলেন, ‘সত্য রঞ্জন অফিসের ফার্ণিচার তৈরীর কথা বলে আমার দোকান থেকে ৪টি সাদা ভাউচার আনেন। কিন্তু দীর্ঘদিন হলেও তিনি আর আমার দোকানে আসেন না। একদিন অফিসে গিয়ে ফার্ণিচার তৈরীর কথা বললে তিনি আমাকে জানান বরাদ্দ আসার কথা ছিল। তা এখনও আসেনি বলে ফার্ণিচার তৈরী করা সম্ভব হচ্ছে না। পরে জানতে পারি তিনি আমার দোকানের ভাউচার ব্যবহার করে ৮০ হাজার টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছেন।’

এছাড়া পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সত্য রঞ্জন কর্মকর্তা কর্মচারীদের অফিসে ডেকে নিয়ে নানা ত্র“টির কথা বলে ভয়ভীতি দেখিয়ে উৎকোচ গ্রহণ করে থাকেন বলে একাধিক কর্মকর্তা কর্মচারী অভিযোগ করেন। উপজেলার নিজামকান্দি আপগ্রেড ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রে সরকারিভাবে সরবরাহকৃত ল্যাপটপ, প্রিন্টার, মডেমসহ অন্যান্য জিনিসপত্র ক্ষমতার অপব্যবহার করে সত্য রঞ্জন ঢাকায় তার বাসায় নিয়ে ব্যবহার করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সত্য রঞ্জন রায় তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘অভিযোগের বিষয়ে বিভাগীয় তদন্ত হয়েছে। আমি দোষী হলে শাস্তি পাবো, না হলে মাপ পাবো।’

এবিএন/লিয়াকত হোসেন লিংকন/জসিম/নির্ঝর

ad

প্রধান শিরোনাম

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত