বরিশাল, ০২ নভেম্বর, এবিনিউজ : বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার চরহোগলপাতিয়া গ্রামের আগরপুর আলতাফ মেমোরিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র সিয়াম হোসেন লিমন (১৩)। এ বছর উপজেলার আগরপুর ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষায় পা দিয়ে লিখে পরীক্ষা দিচ্ছে সিয়াম।
জানা যায়, সিয়াম ৬ বছর বয়সে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে গুরুতর আহত হলে দুই হাত কেটে ফেলতে হয়। তবে শারীরিক প্রতিবন্ধকতা ও দরিদ্রতা বার বার বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে তার লেখাপড়ায়। কিন্তু দায়ার পাত্র নয় সিয়াম। তাই পা দিয়ে লিখেই চালিয়ে যাচ্ছে লেখাপড়া।
সিয়ামের বাবা সামসুল হক ইলেকট্রিক মিস্ত্রি। মা রুমা বেগম গৃহিণী। সিয়ামরা এক ভাই দুই বোন।
সিয়ামের মা রুমা বেগম বলেন, নানা বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে সিয়াম বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়। সেখান থেকে আল্লাহর রহমতে বেঁচে ফিরলেও দুটি হাত কেটে ফেলতে হয়। শিশুকাল থেকেই সিয়ামের পড়াশোনার প্রতি খুব ঝোঁক। আমরা গরীব মানুষ। অনেক কষ্টে এ অচল ছেলেকে পড়ালেখা করাচ্ছি।
আগরপুর আলতাফ মেমোরিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ইংরেজির শিক্ষক সাইদুর রহমান জানান, সিয়াম মেধাবী একজন ছাত্র এবং স্কুলে শতভাগ উপস্থিতি রয়েছে তার। পড়াশোনার প্রতিও রয়েছে মনোযোগ। সমাজের ধনী মানুষকে এ ধরনের অদম্য মেধাবী ও প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের পৃষ্ঠপোষকতায় এগিয়ে আসা উচিত। উপযুক্ত পৃষ্ঠপোষকতা পেয়ে অনেক প্রতিবন্ধী মানুষ সমাজের বোঝা না হয়ে সম্পদ হয়েছেন, সিয়ামও তাদের একজন হতে চায়।
আগরপুর ডিগ্রি কলেজ পরীক্ষা কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান জানান, সিয়াম অন্য শিক্ষার্থীদের মতো বেঞ্চে বসে পরীক্ষা দিতে পারেনি। তার দুই হাত অচল থাকায় সে পা দিয়ে লিখে পরীক্ষা দেয়। পা দিয়ে লিখলেও ওর লেখা ভালো। অন্যদের আগেই সিয়াম তার উত্তরপত্র লেখা শেষ করেছে।
পরীক্ষা কেমন হয়েছে জানতে চাইলে সিয়াম হোসেন লিমন জানায়, আজকের বাংলা পরীক্ষা ভালো হয়েছে। আমি লেখাপড়া শেষ করে ইঞ্জিনিয়ার হতে চাই।
এবিএন/শংকর রায়/জসিম
© আবহমান বাংলা মিডিয়া লিমিটেড কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
