![ইন্দুরকানীতে সাবেক ছাত্রশিবিরের নেতাকে যুবলীগের সম্পাদক করায় মানববন্ধন](https://archive.abnews24.com/assets/images/news_images/2017/11/03/indurkandi-human-chain_108842.jpg)
ইন্দুরকানী (পিরোজপুর) , ০৩ নভেম্বর, এবিনিউজ : পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে সাবেক ছাত্র শিবিরের এক নেতাকে ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক করায় বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৪ টায় চন্ডিপুর বাজারে বালিপাড়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের কার্যালয়ের সামনে আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও শ্রমীক লীগের নেতা কর্মীরা মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করেন। এসময় বালিপাড়া ইউনিয়ন সহ উপজেলার নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। মানব বন্ধন শেষে ছাত্রলীগের দলীয় কার্যালয় সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শাহীন গাজী।
এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি আ. মজিদ বিকম, বালিপাড়া উইনয়ন আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল হাওলাদার, বালিপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ইউপি সদস্য ইয়াকুব আলী, বালিপাড়া ইউনিয়ন শ্রমীক লীগের সভাপতি আলমগীর সেপাই, সাধারন সম্পাদক বাদশা, উপজেলা যুবলীদের সাংগঠনিক সম্পাদক আল-আমীন, মামুন সেপাই, প্রচার সম্পাদক বাদশা, উপজেলা সেচ্ছাসেবক লীগের সাধারন সম্পাদক মো. মামুন, সিনিয়র সহ-সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন বাবু, বালিপাড়া ইউনিয়ন যুবলীগের আহবায়ক মোয়াজ্জেম হোসেন হাওলাদার, বালিপাড়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আলী আকবর বেপারী, যুবলীগ নেতা রনি, বাপ্পি মোল্লা, ছাত্রলীগের আহবায়ক রাহাত গাজী, যুগ্ন -আহবায়ক রাহাত খান রাজু সহ উপজেলা ও বালিপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এসময় লিখিত বক্তব্যে শাহীন গাজী অভিযোগ করে বলেন গত ১ নভেম্বর উপজেলা যুবলীগ কার্যালয়ে গোপনীয় ভাবে কিছু নেতাকর্মিকে নিয়ে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আ. রাজ্জাক এবং যুগ্ন-সাধারন সম্পাদক একরামুল শিকদার বেঠক করে। গোপন বৈঠক শেষে তারা বালিপাড়া ইউনিয়ন যুবলীগের ৬১টি সদস্য বিশিস্ট একটি পূর্নাঙ্গ কমিটি ঘোষনা করেন। এই দুই নেতা সংগঠনের নিয়মনীতি উপেক্ষা করে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে ছাত্রশিবির থেকে আসা মো. শামীমকে বালিপাড়া ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করেন। ঐ বৈঠকে উপজেলা যুবলীগের সাধারন সম্পাদক, সহ-সভাপতি, সাংগঠনিক সম্পাদক সহ অধিকাংশ নেতাকর্মি উপস্থিত ছিলেননা।
তিনি আরো বলেন, গত এক মাস আগে বালিপাড়া পাবলিক হলে বালিপাড়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি-সম্পাদকের উপস্থিতে এক বিশেষ বর্ধিত সভায় বিভিন্ন ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাকর্মিদের মতামতের ভিত্তিতে ইউনিয়ন যুবলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন হাওলাদারকে আহবায়ক ও আলমগীর সেপাই, বাপ্পি মোল্লা, স্বপন পঞ্চায়েত, আবিদ হাচান সোহাগ, আসাদুল ইসলাম মুন্নাকে যুগ্ন-আহবায়ক এবং জিয়াউল হাচান রনিকে সদস্য সচিব করে ৩১ সদস্য বিশিস্ট বালিপাড়া ইউনিয়ন যুবলীগের আহবায়ক কমিটি ঘোষনা করা হয়। পিরোজপুর জেলা আ.লীগের সভাপতি ও সংসদ সদস্য একেএমএ আউয়াল, জেলা যুবলীগের সভাপতি আক্তারুজ্জামান ফুলুর নির্দেশক্রমে গত ২৫ অক্টোবর উক্ত কমিটি ৩ মাসের জন্য অনুমোদন দেয়া হয়েছে। কিন্তু রাজ্জাক, ইকরামুল গত বুধবার যে কমিটি ঘোষনা করেছে তা সম্পূর্ণ সংগঠন পরিপন্থি। এছাড়া তারা বালিপাড়া ও পাড়েরহাট ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ড যুবলীগের কমিটিতে বিতর্কিত ও সরকার বিরোধী ঘরানার লোকজনকে অর্থের বিনিময়ে পদ দিয়েছেন বলে অভিযোগ আনা হয়। এদিকে নিজের ইচ্ছেমত ইকরামুল সিকদার উপজেলা যুবলীগের যুগ্ন-সাধারন সম্পাদক পদে থেকে বিভিন্ন সময়ে ব্যানার, পোস্টারে এমনকি সভা,সমাবেশে দায়িত্বপ্রাপ্ত ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদকের পরিচয় দিয়ে আসছেন যা সম্পূর্ণ সংগঠনের নীতিমালা বিরোধী কাজ বলে দাবি করেন শাহিন গাজী।
তিনি আরো বলেন, প্রায় দেড় মাস পূর্বে প্রধান মন্ত্রীর নিজস্ব তহবিল থেকে এ উপজেলায় ২০১৩-১০১৪ সালে বিএনপি-জামায়াতের হামলায় ক্ষতিগ্রস্থ আ.লীগের ২৭ নেতাকর্মিকে আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়। এতে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আ. রাজ্জাক কোন রকম হামলা মামলার শিকার না হয়েও ভূল তথ্য দিয়ে ১ লাখ টাকা আর্থিক অনুদান আনেন। অথচ প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্থরা এখনও কোন আর্থিক সাহায্য পাননি। সংবাদ সম্মেলনে শামীম সম্পর্কে অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে বক্তব্য দেন।
উক্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে খোজ নিয়ে জানা যায়, শামীম সেখ ২০০৬-২০০৭ সালের ছাত্রশিবিরের কমিটিতে বালিপাড়া ইউনিয়ন সভাপতি পদে ছিল। একই কমিটিতে মো. সেলিম সেক্রেটারি পদে ছিল। সেলিম তার স্বাক্ষরীত একটি প্রত্যয়নে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তবে একটি সাইকেল চুরির অভিযোগে তাকে সংগঠন থেকে পরে বহিস্কার করা হয় বলে অন্য একটি সূত্রে জানা যায়।
উক্ত অভিযোগের পেক্ষিতে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, শামীমের সম্পর্কে যে অভিযোগ তোলা হয়েছে তা সত্য নয়। আমার জানামতে সে আ.লীগ পরিবারের সন্তান। দীর্ঘদিন ধরে আমাদের সংগঠনের সাথে সে কাজ করছে।
ঐ ইউনিয়নের বিভিন্ন নেকাকর্মিদের উপস্থিতিতে কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেখানে কেউ এ ধরনের কোন অভিযোগ তোলেনি বলে তিনি দাবি করেন।
বালিপাড়া ইউনিয়ন যুবলীগের একাংশের সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, আমার একই ওয়ার্ডে শামীমের বাড়ি। আমরা ওকে এতদিন শিবির শামিম বলেই জানতাম। কিন্তু হঠাৎ করে শিবির থেকে যুবলীগ নেতা হয়ে গেলেন তা আমাদের বোধগম্য নয়। যারা তাকে যুবলীগে পদ দিয়েছেন তারা কিসের জন্য দিয়েছেন তা আমি বলতে চাইনা।
এ ব্যাপারে বালিপাড়া ইউনিয়ন আ.লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক মোস্তফা কামাল বলেন, শামীম যে জামায়াত শিবিরের রাজনীতিতে সক্রিয় ভাবে জড়িত ছিল তা এ ইউনিয়নের এমন কারো অজানা নয়।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত সেখ শামীম বলেন, আমি জামায়াত শিবিরের রাজনীতিতে জড়িত ছিলাম না। আমি দীর্ঘদিন ধরে যুবলীগের কর্মি হিসেবে কাজ করে আসছি। আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ ভিত্তিহীন।
এবিএন/নাইম খান/জসিম/নির্ঝর