
নরসিংদী, ০৬ নভেম্বর, এবিনিউজ : নরসিংদীর রায়পুরায় টেঁটাযুদ্ধে সামিল না হওয়ায় চরমধুয়া বাজার ও গ্রামবাসীর উপর হামলা, লুটপাট এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত হয়েছে ৩ জন। শনিবার বিকেলে বাঁশগাড়ী ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান সিরাজুল হক বাহিনীর সাথে সাবেক চেয়াম্যান শাহেদ সরকার বাহিনীর সংঘর্ষ বাধে। এই সংঘর্ষ বাঁশগাড়ী সহ মির্জারচর ও নীলক্ষ্যা ইউনিয়েনেও ছড়িয়ে পড়ে।
সংঘর্ষে চরমধুয়া গ্রামের লোকজন সমর্থন ও সামিল না হওয়ায় রাত ৮টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত সহস্রাধিক লোকজন লাঠি, টেটা, বল্লম, দা, ছুড়ি ও বন্দুক নিয়ে এই গ্রামে হামলা চালায় তারা। এতে চরমধুয়া গ্রামের প্রায় অর্ধশতাধিক বাড়ি ঘরে হামলা, লুটপাট, ভাংচুর করা হয়। পাশাপাশি চরমধুয়া নতুন বাজারের ১০টি দোকানে অগ্নি সংযোগ সহ প্রায় ৪০টি দোকানে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এতে প্রায় ৫ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে গ্রামবাসী। ঘটনার পর থেকে এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
চরমধুয়া গ্রামের বাসিন্দা আহসান সিকদার জানান, কিছুদিন আগে স্থানীয়ভাবে রায়পুরার বাঁশগাড়ী ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান সিরাজুল হক ও সাবেক চেয়ারম্যান শাহেদ সরকার বাহিনীর মধ্যে মীমাংশা করা হয়। সেই মীমাংশা করার পরও তারা শনিবার বিকেলে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। সেই সংঘর্ষে একটি পক্ষ পার্শবর্তী ইউনিয়ন নীলক্ষ্যা থেকে লোক ভাড়া করে এনে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। সংঘর্ষে লিপ্ত হওয়ার সময় যাতায়াতের রাস্তা হিসেবে ব্যবহার করা হয় চরমধুয়া ইউনিয়নকে।
হামলাকারীদের আহবানে চরমধুয়া গ্রামবাসী তাদের সাথে লিপ্ত না হওয়ায়। শনিবার রাতে বাজারে ও গ্রামবাসীদের উপর তারা নগ্ন হামলা চালায়। এই হামলায় প্রায় অর্ধশত বাড়ি থেকে নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার, টিভি, ফ্রিজ ও ফ্যান নিয়ে যায়। এসময় তাদের হামলায় ৩ জন আহত হয়। আমার নিজের গরুর ফার্ম থেকে ৪০টি গরু তারা লুট করে নিয়ে যায়। সব মিলিয়ে আমাদের গ্রামের প্রায় ৫ কোটি টাকার ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে।
চরমধুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল সালাম সিকদার বলেন, তারা সবসময়ই সন্ত্রাসী কার্যক্রম করে আসছে। আধিপত্যকে টিকিয়ে রাখতে তারা বিভিন্ন সময় এই ধরণের সন্ত্রাসী কার্যক্রম করে আসছে। বিভিন্ন সময়ে এর সমাধানের চেষ্টা করার পরও এই সংঘর্ষ বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। সরকারের প্রতি আমি এর সুষ্ঠু সমাধানের আবেদন করছি।
নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মোহাম্মদ শফিউর রহমান বলেন, চরমধুয়া গ্রামে সহিংসতা এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং এই ঘটনার সাথে যারা জড়িত তাদের চিহ্নিত করে গ্রেফতারের অভিযান চলছে।
তিনি আরও বলেন, এই টেটাযুদ্ধের নেপথ্যে যারা রয়েছেন তাদেরকে একাধিকবার গ্রেফতার করলেও তারা সহজেই জামিন পেয়ে যায়। জামিনের পর আবারো শুরু হয় তাদের সেই অধিপত্য বিস্তারের টেটা যুদ্ধ। যার কারণে এই টেটা যুদ্ধ বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না।
এবিএন/সুমন রায়/জসিম/এমসি