শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২ ফাল্গুন ১৪৩১
logo

রাজবাড়ীতে এসপি সালমার একবছর: সাফল্য অনেক

রাজবাড়ীতে এসপি সালমার  একবছর: সাফল্য অনেক

রাজবাড়ী, ১৩ নভেম্বর, এবিনিউজ : “ আমার নাম এই বলে খ্যাত হোক আমি তোমাদেরই লোক” রাজবাড়ীর একজন – এ কথাটি বলেই সকল অপশক্তিকে রুখে দিয়ে সন্দুর একটি রাজবাড়ীর গড়ার লক্ষ নিয়ে বিগত ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদান করেছিলেন সালমা বেগম পিপিএম।

রাজবাড়ীতে যোগদানের পরেই তিনি, বাল্য বিবাহ, ইভটিজিং, মাদকদ্রব, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও জুয়ার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেন নারী বান্ধব এই পুলিশ কর্মকর্তা।

এক বছরপূর্ণ হওয়ায় রাজবাড়ী জেলাবাসী বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে তাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

পুলিশ সুপার সালমা বেগম পিপিএম বলেন, পদ্মা নীদর পাড়ের ছোট্র একটি জেলা হলেও রাজবাড়ীর মানুষ খুবই ভালো এবং বড় মনের মানুষ তাদের আন্তরিকতার কোন অভাব নেই। সকল শ্রেণীর মানুষ সহযোগিতা না করলে আমি এ জেলার পরিবেশকে সুন্দর রাখতে পারতাম না। আমি মনে করি, জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিক নেতা, ব্যবসায়ী, আইনজীবি, বিভিন্ন মিডিয়ায় কর্মরত সাংবাদিক, সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সুশিল সমাজের মানুষ গুলোর সার্বিক সহযোগিতা নিয়ে যত দিন রাজবাড়ীতে থাকবো জেলার সকল শ্রেণী প্রেশার মানুষকে আইনগত সেবা দিয়ে জাবো।

রাজবাড়ীতে আসার পর থেকে, পুলিশ সুপার সালমা বেগম পিপিএম সাহসীকতার সাথে আপোষহিন ভাবে মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও জুয়া নির্মূলে কাজ করেছেন।

রাজবাড়ীর সবচে বড় মাদকের স্পট হিসেবে পরিচিত শহরের লোকসেড এলাকায় এখন যেমন কমেছে মাদক ব্যবসায়ী তেমন কমেছে মাদক।আবার নতুন নতুন যে সকল মাদকের স্পট হিসেবে গড়ে উঠতে চেষ্টা করেছে তাদের কে কঠোর হাতে দমন করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন তিনি।

রাজবাড়ীর ৫টি উপজেলার ৫টি থানার পুলিশ সদস্যরা, বিভিন্ন মাদকদ্রব, অস্ত্র উদ্ধার করে যাচ্ছেন জীবন বাজি রেখে।গ্রেপ্তার করা হয়েছে বড় বড় চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের।

উদ্ধার করা হয়েছেন ওয়ান সার্টার গান, পিস্তল, রিভলবার, একনলা বন্ধুকসহ বিভিন্ন ধরণের আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি। তার দক্ষতার কারণে মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারেনি। সারাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা থাকলেও এর কোন প্রভাব পরেনি রাজবাড়ীতে। সর্বপরি অতিতের ঈদ গুলোতে সবচে খারাপ অবস্থায় থাকা দক্ষিণ বঙ্গের প্রবেশদ্বার হিসেবে পরিচিত দৌলতদিয়া ফেরী ঘাট এলাকায় ছিলো নিরবিচ্ছিন্নভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের অবস্থান। ফলে ধারাবাহিকতা রক্ষা পেয়েছে, ঘাট এলাকায় সৃষ্টি হয়নি কোন বিশৃঙ্খলতা।

যাত্রীদের ঈদের নামাজ পড়তে হয়নি ঘাট এলাকায়। গভীর রাত অবধি নিজে মহাসড়কে দাঁড়িয়ে করেছেন যানজট নিরশনের কাজ।

এসপি সালমার সময়কালে বাল্যবিয়ের খবর পেয়ে পুলিশ সদস্যরা ওই স্থানে যাননি এমন তথ্য পাওয়া যায়নি। সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে তিনি রোধের চেষ্টা করেছেন বাল্যবিয়ে।

জেলা পুলিশের উদ্যোগে ও রাজবাড়ী চেম্বর অফ কামার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রিজের সভাপতি কাজী ইরাদত আলীর সহযোগীতায় ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার অংশ হিসেবে রাজবাড়ী বাজারসহ জেলা শহরের ১১টি পয়েন্টে লাগানো হয়েছে ৩৫টি সিসি ক্যামেরা।

গত ২৫ জানুয়ারী রাজারবাগে অনুষ্ঠিত হয়েছে পুলিশ সপ্তাহ। ওই অনুষ্ঠানে ভাল কাজ করার জন্য বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর অফ জেনারেল (আইজিপি) একেএম শহিদুল হক বিপিএম,পিপিএম বার রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার সালমা বেগম পিপিএম (সেবা) কে “আইজিপি ব্যাচ” প্রদান করেছেন। একই দিন রাজারবাগে অনুষ্ঠিত এবারের পুলিশ সপ্তাহে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে গ’বিভাগে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছে রাজবাড়ী জেলা পুলিশ। গত ২৫ জানুয়ারী দুপুরে এ অর্জন উপলক্ষে বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর অফ জেনারেল (আইজিপি) একেএম শহিদুল হক বিপিএম,পিপিএম বার রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার সালমা বেগম পিপিএম (সেবা) কে ক্রেস্ট প্রদান করেন।

বরিশালের বাকেরগঞ্জের বাসিন্দা সালমা বেগম জন্ম গ্রহণ করেন ১৯৭২ সালের ৩০ নভেম্বর। বি,এ (অনার্স) ও এম,এ (ইংরেজী)। ১৯৯৯ সালে ১৮ তম বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডারে যোগদান করেন। ব্রক্ষণবাড়ীয়া জেলায় শিক্ষা নবিস হিসেবে কর্মরত ছিলেন। পুলিশ সুপার পদে যোগদান করেন ২০১২ সালের ২৫ এপ্রিল। পিপিএম সেবা পদক প্রাপ্ত হন ২০১৫ সালের ২৭ জানুয়ারী। তিনি মৌলিক প্রশিক্ষণ, বিপিএ, সারদাসহ বিভিন্ন প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। তার বিগত কর্মস্থলছিল ডিএমপি, ঢাকা, পুলিশ হেকোয়ার্টার্স, সিআইডি, এপিবিএন। তিনি মিশনে কসোভো ও সুদানে কাজ করেছেন। উদীয়মান তারকা অন্তরিপ চৌধুরী নামে এক পুত্র সন্তানের জননী সালমা বেগমের স্বামী নাট্যকার খাইরুল আলম টুটুল বাংলাদেশ ব্যাংকের জয়েন্ট ডিরেক্টর হিসেবে কর্মরত আছেন।

এবিএন/খন্দকার রবিউল ইসলাম/জসিম/নির্ঝর

ad

প্রধান শিরোনাম

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত