বাউফল (পটুয়াখালী), ১৯ নভেম্বর, এবিনিউজ : পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার আটটি চর নিয়ে গঠিত চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়ন। ওই ইউনিয়নে প্রায় ১৭ হাজার মানুষের জীবন-জীবিকা নির্ভর করে মাছ শিকার ও কৃষি কাজে । অব্যাহত নদী ভাঙন ও প্রকৃতির সঙ্গে যুদ্ধ করে বেঁচে থাকা । এসব মানুষের কপালে জোটে না প্রাথমিক চিকিৎসা সেবাটুকুও। তাদের চিকিৎসা সেবায় সরকারিভাবে তেমন কার্যকর উদ্যোগ নেই বলে অভিযোগ স্থানীয় লোকজনের।তাদের মতে ওই এলাকার প্রাথমিক চিকিৎসা একমাত্র ভরসা সেখানকার হাতুরে ডাক্তারও কবিরাজ ।
চর এলাকার আবুল মিয়া, আঃ রব মাস্টার জানায় এই এলাকার মানুষের অন্যতম সমস্যা হচ্ছে চিকিৎসা সেবা না পাওয়া। চরে বসবাস করার কারনে সবসময় তাদের বিভিন্ন রোগ-বালাই লেগেই থাকে। বিশেষ করে বর্ষা ও বন্যার পানিতে বাড়িঘর ডুবে যায় ও পানি নেমে যাওয়ার সময় ডায়রিয়াসহ অন্যান্য রোগ প্রকট আকার ধারন করে । সে সময় শিশু, নারি, ও বয়স্ক লোকজন বেশী বিপদে পড়েন । চিকিৎসা না পাওয়ায় দুর্ভোগ আর ভোগান্তি চরম পর্যায়ে পৌছে । সময় মতো চিকিৎসা না পেয়ে শিশু ও গর্ভবতী মায়ের মৃত্যুর ঘটনাও প্রায় ঘটে থাকে । জানা যায় সরকারি উদ্যোগে ১৯৯৮ সালে কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ২০১০সালে চালু হয় । চালু হওয়ার পর থেকেই বেশীর ভাগ সময় সেটা বন্ধ থাকে। কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রভেইটার(CHCP) ছিদ্দিকুর রহমান ও স্বাস্থ্যকর্মী ছলেমান ওই ক্লিনিকটি দায়িত্বে আছেন। স্বাস্থ্য সহকারী ছলেমান বাড়ি কেশাবপুর ইউনিয়নে যাতায়াতের ভাল ব্যবস্থা না থাকায় তিনি নিয়মিত কমিউনিটি ক্লিনিকে যান না। (CHCP) ছিদ্দিকুর রহমান বাড়ি ওই এলাকায় হওয়ায় তিনি মাঝে,মাঝে ক্লিনিকে বসেন।
ফলে স্বাস্থ্য কর্মীদের গাফিলতীর কারনে নিয়মিত খোলা হয় না ক্লিনিক । চরঞ্চালের মানুষের চিকিৎসার জন্য তাদের নদী পথ দিয়ে নৌকা বা ট্রলার যোগে প্রায় ১০ কিঃ মিঃ দূরে বাউফল উপজেলা সদরে যেতে হয় । বিশেষ করে গর্ভবতীমাদের সমস্যা চরম আকারে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে স্থানীয় দাই দিয়ে কাজ না হলে শেষ মুহুর্তে উপজেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।এই সময় হাসপাতালে নেওয়ার পথে প্রায়ই মা অথবা বচ্চার মৃত্যু ঘটে । এব্যাপারে চন্দ্রদীপ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এনামুল হক (আলকাস ) মোল্লা বলেন,চরে কোন চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই। দীর্ঘ পথ নদী পাড় হয়ে উপজেলা সদরে যেয়ে চিকিৎসা নিতে হয়।চরবাসির মানুষেরা সামান্য প্রাথমিক চিকিৎসাও সময়মতো পায় ন।বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে কয়েকবার জানিয়েছি।কিন্ত কোন কাজ হয়নি।
এবিষয় বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মঈনুল ইসলাম প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন,ওই ইউনিয়নের জনগন স্বাস্থ্যসেবা থেকে অনেকটা বঞ্চিত হচ্ছে । কেননা ওখানে সরকারি ভাবে কোন ডাক্তার নিয়োগ দেওয়া নেই । ওই কমিউনিটি ক্লিনিকের জন্য একমাত্র কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রভেইটার(CHCP) নিয়োগ দেওয়া হয়েছে । স্বাস্থ্যকর্মী মাসে টিকা দেওয়ার জন্য যাবেন । তবে নিয়োমিত কমিউনিটি ক্লিনিক খোলা রেখে প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে ।
এবিএন/দেলোয়ার হোসেন/জসিম/তোহা