বেরোবি (রংপুর), ২৬ নভেম্বর, এবিনিউজ : বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক ১ম বর্ষের আজ রবিবার থেকে শুরু হওয়া ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে বিভিন্ন এলাকা থেকে পরীক্ষার্থী নিয়ে আসা বেশকয়েকটি পরিবহন থেকে দফায় দফায় চাঁদাবাজি করার অভিযোগ উঠেছে। আজ রবিবার বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের সামনে রাখা এসব পরিবহন থেকে কে বা কারা স্থানীয় বাসিন্দা এবং ছাত্রলীগের নাম ভাঙিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে সকাল থেকে দুপুর থেকে কয়েকদফায় প্রায় ৭ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এসময় বাসের চালক, হেল্পার এবং কোচিং সেন্টারের প্রতিনিধিদের টাকা না দিলে মেরে ফেলার হুমকি দেয়া হয়। একই সাথে টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে বাসে অবস্থানরত ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের মানসিক নির্যাতন ও মারধর করা হয়।
রাজশাহী থেকে আসা সিয়াম স্পেশাল রিজার্ভ একটি বাসে আসা একটি কোচিং সেন্টারের প্রতিনিধি সত্যজিৎ সরকার অভিযোগ করেন, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত তিন দফায় আমার কাছে ১৪ শত টাকা নিয়ে গেছে। সকালে ৯ টায় এসে কয়েকজন অপরিচিত যুবক ছাত্রলীগের নাম বলে এখানে বাস দাঁড়ালে টাকা দিতে হবে বলে দাবি করে। তারা এসে হুমকি দেয়। শেষে ৪০০ টাকা দেই। ঠিক ১২ টায় আবারো একদল এসে স্থানীয় বাসিন্দা বলে ৬০০ টাকা নিয়ে যায়। দুপুর ১ টায় আরো কয়েকজন এসে টাকা দাবি করে। এভাবে আমার কাছ থেকে ১৪০০ টাকা নিয়ে গেছে। টাকা দিতে না চাইলে, পরীক্ষার্থীদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে।
ভুক্তভোগী এই ব্যক্তি বলেন, ঢাকাসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এভাবে শিক্ষার্থী নিয়ে গেছি কোথাও এভাবে টাকা নিতে দেখিনি। এখানে নাকি বাস দাঁড়ালে টাকা দিতে হবে। কয়েকটি পরিবহনের চালক-হেল্পারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সিয়াম স্পেশাল থেকে দফায় দফায় ১৪০০ টাকা, বগুড়া থেকে আসা জেবি ডিলাক্স থেকে মোট ১২০০ টাকা, একই এলাকা থেকে আসা সোনার তরী পরিবহন থেকে মোট ১২০০ টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়। এসময় জেবি ডিলাক্স বাসে আসা এক স্টুডেন্ট প্রতিনিধিকে টাকা না দেয়ায় মারধর করা হয়েছে। ঘটনায় দিনভর পরিবহন সংশ্লিষ্ট এবং পরীক্ষার্থীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগেছে বলে জানা গেছে।
ছাত্রলীগের নাম ভাঙানোর বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নোবেল শেখের সাথে যোগাযোগ করলে বিষয়টি প্রথম অবগত হন বলে জানান। ছাত্রলীগের নাম ভাঙিয়ে কে বা কারা এমন ঘটনা ঘটিয়েছে সে বিষয়ে খোজ নেয়ার কথা বলেন তিনি।
এ ব্যাপারে বহিরাঙ্গন শাখার পরিচালক রাফিউল আজম খান বলেন, এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরের ঘটনা তাই এটার দায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিবে না। এরপরও তিনি বিষয়টি নিয়ে প্রোক্টরের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানান। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোক্টর (চলতি দায়িত্ব) আবু কালাম মো. ফরিদ-উল ইসলাম বলেন, এইমাত্র শুনলাম। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। পরবর্তীতে এরকম ঘটনা যাতে না ঘটে সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য যে, রবিবার সকাল নয়টা থেকে এ ইউনিটের প্রথম শিফটের পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৭-১৮ সেশনে স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়। ইউনিটভিত্তিক এই পরীক্ষা চলবে আগামী ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত।
এবিএন/তপন কুমার রায়/জসিম/তোহা
© আবহমান বাংলা মিডিয়া লিমিটেড কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
