
লক্ষ্মীপুর, ২৯ নভেম্বর, এবিনিউজ : লক্ষ্মীপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদকে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের দেয়া কয়েক লাখ টাকার মালামালের হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নেতারা এ মালামাল খোয়া গেছে বলে দাবি করলেও সাবেক নেতারা বর্তমান নেতাদের দিকেই ইঙ্গিত করছেন। এ ব্যাপারে থানায় সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করা হয়েছে।
মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার কাজল কান্তি দাস অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে লক্ষ্মীপুর মডেল থানায় জিডি করার কথা স্বীকার করেছেন। তবে সে ব্যাপারে বিস্তারিত জানাতে অস্বীকৃতি জানিয়ে পরবর্তীতে সংবাদ সম্মেলন করে সবাইকে অবহিত করার আশ্বাস দিয়েছেন। লক্ষ্মীপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লোকমান হোসেনও জিডির বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
জেলা আওয়ামী মুক্তিযোদ্ধা লীগের সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান মাস্টার জানান, সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যবহারের জন্য তিন বছর আগে ২৪ লাখ টাকা মূল্যমানের আসবাবপত্র, কম্পিউটারসহ ২৫ ধরনের মালামাল সরবরাহ করে। এ সময় মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনের কাজ চলমান থাকায় অধিকাংশ মালামাল একটি কক্ষে তালাবদ্ধ করে রাখা হয়। জেলা কমান্ডার আনোয়ারুল হক মাস্টার কয়েক মাস আগে মারা গেলে ডেপুটি কমান্ডার কাজল কান্তি দাস ভারপ্রাপ্ত কমান্ডারের দায়িত্ব পান, কিন্তু মালামাল স্থাপনের উদ্যোগ নেননি। এদিকে কমিটির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় গত মাসে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে জেলা প্রশাসক হোমায়রা বেগম মুক্তিযোদ্ধা সংসদের দায়িত্বভার নিতে গেলে মালামাল খোয়া যাওয়ার বিষয়টি জানাজানি হয়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক হোমায়রা বেগম বলেন, মালামাল খোয়া যাওয়ার বিষয়টি তিনি মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক নেতাদের কাছ থেকে জেনেছেন। তবে ২৪ লাখ টাকার মালামালই যে সেখানে ছিল, এমন কথা কোথাও লেখা নেই। তিনি মালামাল উদ্ধারের চেষ্টা করছেন।
জেলার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার কাজল কান্তি দাসের দাবি, কিছু আসবাবপত্র রয়েছে। তবে কম্পিউটার ল্যাপটপসহ আরো বেশকিছু মূল্যবান মালামাল খোয়া গেছে। এর জন্য দায়িত্বপ্রাপ্তদের ওপরই দায় চাপিয়েছেন ডেপুটি কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবদীন। সাবেক সাংগঠনিক কমান্ডার মনা বাকশাল বলেন, মালামাল কে নিয়েছে, কারা নিয়েছে— তা আমাদের জানা আছে। তাদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে।
অন্যদিকে, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা হুমায়ূন কবির তোফায়েলসহ বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা অভিযোগ করেছেন, বিগত কমিটি মুক্তিযোদ্ধাদের স্বার্থে কোনো কাজ না করে শুধু লুটপাট করে নিজেদের আখের গুছিয়েছে। দায়িত্বপ্রাপ্তদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করারও হুমকি দিয়েছেন এক মুক্তিযোদ্ধা।
সাবেক জেলা কমান্ডার হুমায়ূন কবির তোফায়েলের নেতৃত্বে জেলা কমিটির সাবেক সদস্য সচিব খোরশেদ আলম, সাবেক উপজেলা কমান্ডার বশির মাস্টার, ডেপুটি কমান্ডার সামছুদ্দিন পাটওয়ারী ১৯ নভেম্বর জেলা প্রশাসকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স নির্মাণে অনিয়ম, সাবেক কমিটির লুটপাট ও মালামালের বিষয় অবহিত করে তদন্তের ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
এবিএন/আবির আকাশ/জসিম/রাজ্জাক