নীলফামারী, ১১ ডিসেম্বর, এবিনিউজ : মাথায় রক্তনালী টিউমারে আক্রন্ত মেয়েকে বাচাতে সবার দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন মজিবুল হক নামে এক অসহায় পিতা। আর সবার মত তার স্ত্রী মনিরা বেগমের কোলেও শিশু সন্তানও জন্মলাভ করে। জন্মের সময় তার ডান চোখের কোনায় সামান্য ফোলা ছিল।
সেই ফোলা আজ বড় হয়ে রক্তনালী টিউমারে রূপ নিয়েছে। নীলফামারীর ডোমার উপজেলার সদর ইউনিয়নের দোলাপাড়া গ্রামের দরিদ্র রিক্সাচালক মজিবুলের আড়াই বছরের মেয়ে ইয়ামনি। সদাহাসোজ্বল ইয়ামনিকে দেখলেই সকলের চোখে পানি এসে যায়। সুন্দর মুখটি রক্তনালীর টিউমারের কারনে বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। তার ডান চোখের অর্ধেকটাই বন্ধ হয়ে গেছে টিউমারটির কারনে।
জন্মের পরেই পরিবারের লোকজন দেখতে পায় তার মাথার ডান পাশে ছোট একটি টিউমার জাতীয় কিছু। প্রথমে অনেকেই এটিকে কোন কিছু মনে না করলেও এক সময় তা বৃদ্ধি পেতে থাকে। বয়সের সাথে সাথে বাড়তে থাকে ঐ টিউমার টি।টিউমার টি বড় হয়ে এখন ডান চোখ পর্যন্ত এসে গেছে। চিকিৎসা করাতে না পারলে আর কিছুদিনের মধ্যেই বিষ্ফোরন ঘটতে পারে।ডাক্তারের ভাষায় রোগটির নাম মেনিংগোসিল।
নীলফামারীর ডোমার উপজেলার সদর ইউনিয়নের দোলাপাড়া গ্রামের দরিদ্র রিক্সা চালক মজিবুল হকের মেয়ে আড়াই বছর বয়সী ইয়ামনি আক্তার এই রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর প্রহর গুনছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছে চিকিৎসা করাতে পারলে এই রোগ থেকে নিরাময় হওয়া সম্ভব।
দরিদ্র মজিবুল ঢাকায় রিক্সা চালিয়ে সংসার চালান। আর তার অসুস্থ সন্তান থাকেন তার শশুর আর শাশুড়ীর কাছে।
ইয়ামনির নানী সুলতানা বেগম জানান,জন্মের পর থেকে তার ডান পাশে ছোট টিউমার জাতীয় কিছু ছিল। প্রথমে গুরুত্ব না দিলেও এক সময় তা বড় হতে থাকলে আমরা বিভিন্ন চিকিৎসকের শরাপন্ন হলেও তা নিরাময় করা যাচ্ছে না। ডাক্তাররা ঢাকায় নিয়ে যেয়ে চিকিৎসা করাতে বললে সামান্য জমি ছিল তা বিক্রি করে চিকিৎসা করালেও নিরাময় হয়নি।
ডাক্তার এক মাসের মধ্যেই টিউমার অপারেশন করতে বলেছে। অর্থের অভাবে তাও সম্ভব হচ্ছেনা। সম্পত্তি যা ছিল তা বিক্রি করে তার চিকিৎসা চললেও এখন অর্থের অভাবে তার চিকিৎসা করানো সম্ভব হচ্ছে না। ডাক্তাররা বলেছেন চিকিৎসা করাতে না পারলে এক সময় তা বৃদ্ধি পেয়ে সম্পৃর্ন মুখটিকে ঢেকে দিবে।
তিনি বলেন, টিউমারটি নরম ও তুলতুলে মাঝে মাঝে ব্যাথা উঠলে ছোট ইয়ামনি ঠিক থাকতে পারে নি। ব্যাথার সময় তার চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এসে তাদের সান্তনা দেয়। এদিকে মেয়ের চিকিৎসার জন্য প্রায় দুইলক্ষ টাকা প্রয়োজন। তাই মেয়েকে বাচাতে মজিবুল প্রতিদিন অসুস্থ্য শিশু সন্তানকে কোলে নিয়ে মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে। এই প্রতিবেদকের সাথে তার কথা হলে সে জানায়,অচিরেই তাকে ঢাকা নিয়ে ডেতে হবে। তানাহলে এক সময় তা ক্যান্সারে রূপ নিতে পারে বলেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন মজিবুল। ছোট ইয়ামনিকে সকলেই আদর করছেন।স্থানীয়রা জানিয়েছে গরীব বলে কি বাচতে পারবে না ইয়ামনি।
ছোট ইয়ামনিতো কোন অন্যায় করেনি যে তাকে চিকিৎসার অভাবে মরতে হবে। তারা এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। তারা বলছেন সরকারীভাবে চিকিৎসা করানো গেলে আর দশটা শিশুর মত ইয়ামনিও সুস্থ হয়ে সকলের মুখে হাসি ফোটাবে। বাংলাদেশের অনেক প্রতিষ্টান বা ধনাঢ্য ব্যাক্তি ইয়ামনির দায়িত্ব নিয়ে তাকে সুস্থ্য করে তুলতে পারেন। আবার সরকারী ভাবেও তার চিকিৎসা করানো যেতে পারে। ইয়ামনির বাবা মজিবুল ইসলাম সকলের সহযোগীতা কামনা করেছেন।
এ ব্যাপারে কেউ সহযোগীতা করতে চাইলে তার নানীর মোবাইলে (০১৭৩৮২৪১০৬৮) বা তারা বাবার মোবাইলে(০১৭৫৫২২০৬৪৬) যোগাযোগ করতে পারেন।
এবিএন/আব্দুল্লাহ আল মামুন/জসিম/এমসি