![বড়াইগ্রামে শিক্ষকের নির্যাতনে শিশু শিক্ষার্থীর পড়া-লেখা বন্ধ](https://archive.abnews24.com/assets/images/news_images/2017/12/11/nator_abnews24 copy_114727.jpg)
বড়াইগ্রাম (নাটোর), ১১ ডিসেম্বর, এবিনিউজ : নাটোরের বড়াইগ্রামে প্রথম শ্রেণীর এক শিশু শিক্ষার্থীকে নির্দয় ভাবে শারিরিক নির্যাত করায় আতঙ্কে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। মিম (৮) নামের ওই শিক্ষার্থী চলতি বার্ষিক পরীক্ষায়ও অংশ গ্রহণ করছে না। উপজেলার মাঝগাঁও ইউনিয়নের পারকোল মধ্যপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গত বুধবার এমন ঘটনা ঘটেছে। মিম পারকোল গ্রামের মৎস্যজীবী বাবলু মিয়ার মেয়ে। দরিদ্র পরিবারের সন্তান হওয়ায় স্থানীয় ইউপি সদস্য আর প্রধান শিক্ষকের নিকট মৌখিক আবেদন করলেও শিক্ষা অফিস, ইউএনও বা থানায় অভিযোগ করার সাহস পাচ্ছেন না বাবলু মিয়া।
আজ সোমবার বিদ্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রথম শ্রেণীর শিশু শিক্ষার্থী মিম ও মতেনা ব্রেঞ্চে বসা নিয়ে বিতর্কে জরায়। এসময় সহকারী শিক্ষক আজিজুল হক বিষয়টি দেখে কোন কিছু বুঝে ওঠার আগেই বেত দিয়ে নির্দয় ভাবে পিটিয়ে জখম করে মিমকে। এসময় তার পিঠ, কাঁদ ও পায়ে ক্ষত হয়ে রক্ত ঝড়তে থাকে। পরে সে কান্না করতে করতে বাড়ি চলে যায়। এরপর থেকে আর স্কুলে আসেনি। স্কুলে এখন বার্ষিক পরীক্ষা চলছে কিন্তু মিম সে পরীক্ষায় অংশ নিতে আসেনি। মিমের বাবা বাবলু মিয়া বলেন, মেয়েকে আজিজুল মাষ্টার মারার পর থেকে স্কুলে যেতে ভয় পাচ্ছে। আমিও এর বিচার চেয়ে স্কুলের সভাপতি এবং মেম্বারকে বলেছি। তারা কোন বিচার করে দেয় নাই। আমি গরিব মানুষ, আর কার কাছে বিচার চাইবো।তাই ভাবছি মেয়েকে পড়াবই না।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামসুল আলম শিশু শিক্ষার্থীকে নির্যাতন এবং বার্ষিক পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ না করার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। কিন্তু আর কিছু বলতে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন। বিদ্যালয়ের সভাপতি কসলেম উদ্দিন এবং স্থানীয় ইউপি সদস্য ইসমাইল হোসেন বলেন, তারা অভিযোগ পেয়েছেন। কিন্তু ইউনিয়নে ভোট শুরু হয়েছে আগামী ২৮ ডিসেম্বর ভোট। তাই ব্যস্ততায় সময় করে মিটিং করা হচ্ছে না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন অভিভাবক বলেন, আজিজুল মাষ্টার স্থানীয় ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় তার বিরুদ্ধে কেউ কথা বলার সাহস পায় না।
আজিজুল মাষ্টার শিক্ষার্থীর শ্লীলতাহানিসহ নানা অভিযোগে একাধিকবার বরখাস্ত হয়েছেন। একবার একটানা ৭ বছর স্কুলের বাইরে ছিলেন। আবার বিভিন্ন জনকে বিভিন্ন ভাবে ম্যানেজ করে স্কুলে যোগদেন। আর তাতেই তার কোন অন্যায়ের প্রতিবাদ করা হয় না। বিশেষ করে এই এলাকায় মৎস্যজীবি লোকের বসবাস বেশী। তারা দরিদ্র হওয়ায় প্রতিবাদ করার সাহসও পায় না। এ বিষয়ে অভিযুক্ত আজিজুল হকের সাথে তার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে পাওয়া যায় নাই। উপজেলা শিক্ষা অফিসার আকলিমা খানম বলেন, বিষয়টি তিনি অবগত নন। তবে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন বলেও জানান তিনি।
এবিএন/আশরাফুল ইসলাম আশরাফ/জসিম/তোহা