![খাগড়াছড়ির লক্ষ্মীছড়িতে এইচডব্লিএফ-এর বিক্ষোভ](https://archive.abnews24.com/assets/images/news_images/2017/12/17/khagrachari--police-rape_115620.jpg)
খাগড়াছড়ি, ১৭ ডিসেম্বর, এবিনিউজ : খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলায় পুলিশ কনস্টেবল আনোয়ার শাহাদাৎ কর্তৃক নবম শ্রেণীতে পড়–য়া এক পাহাড়ি স্কুলছাত্রীকে অপহরণ ও ধর্ষণ প্রচেষ্টার প্রতিবাদে ও অপরাধীর দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবিতে লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা সদরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে হিল উইমেন্স ফেডারেশন(এইচডব্লিউএফ) লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা শাখা। ‘নারীনির্যাতন ও ধর্ষণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধগড়েতুলুন’ এই শ্লোগানেআজ আজশনিবার (১৬ ডিসেম্বর ২০১৭)সকাল ১১ টায় লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা কুশীনগর বনবিহার এলাকা থেকে এক বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি পিএফসি স্কুল গেইট ঘুরে লক্ষীছড়ি সদর হাসপাতাল গেইটের সামনে এসে এক সংক্ষিপ্ত প্রতিবাদ সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন এইচডব্লিউএফ লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা শাখার সভাপতি রেশমী মারমা, সাধারণ সম্পাদক থুইনুচিং মার্মা ও বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ(পিসিপি) লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা শাখা সাধারণ সম্পাদক নয়ন চাকমা।
বক্তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে রক্ষকই ভক্ষকের মতো আচরণ করায় এখানকার নারীরা চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছে। নবম শ্রেণীর ছাত্রীকে অপহরণ ও ধর্ষণের চেষ্টাকালে পুলিশ কনস্টেবল আনোয়ার শাহাদাৎ হাতে নাতে ধৃত হলেও থানা কর্তৃপক্ষ তাকে গ্রেফতার ও উপযুক্ত শাস্তি প্রদান করেনি। তাকে ক্লোজড করার কথা বলে অপরাধীকে আড়াল করা হয়েছে বলে তারা অভিযোগ করেন।
বক্তারা আরো বলেন,নারী নির্যাতন-ধর্ষণ-খুনের ঘটনা সারাদেশে ঘটলেও পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। এখানে রাষ্ট্রের বিশেষে শক্তির মদদে তাহয়ে থাকে। বিশেষ করে রাষ্ট্রীয় বাহিনীও সরকারী পৃষ্ট পোষকতায় নিয়ে আসা বে-আইনী সেটলার বাঙালিদেরকে দিয়ে পরিল্পিতভাবে পাহাড়ি নারীদের নির্যাতন ও হত্যার ঘটনা ঘটানো হয়। ১৯৯৬ সালে লেঃ ফেরদৌস গং কর্তৃক তৎকালীন হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক কল্পনা চাকমাকে অপহরণ ও গুম থেকে শুরু করে থুই¤্রাচিং,ছবি,ভারতী, সবিতা ও ইতি চাকমাসহ অসংখ্য নারীকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা ঘটলেও কোন ঘটনারই সুষ্ঠু বিচার ও অপরাধীদের শাস্তি দেওয়া হয়নি। ফলে এ ধরনের ঘটনা বাড়ছে বৈ কমছেনা।
সমাবেশ থেকে বক্তারা অবিলম্বে স্কুল ছাত্রীকে অপহরণ ও ধর্ষণের চেষ্টাকারী পুলিশ কন্সটেবল আনোয়ার শাহাদাৎকে গ্রেফতার, বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানান। এছাড়া বক্তারা পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারাদেশে সংঘটিত নারীনির্যাতন, ধর্ষণ, খুন, গুম ও হত্যার সাথে জড়িত সকল অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানেরও দাবি জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, বিজয় দিবসের র্যালিতে অংশগ্রহণের জন্য গত ১৪ডিসেম্বর(বৃহস্পতিবার) রাতে ওই ছাত্রী তারবান্ধবীদের সাথে কথা বলে বাসায় ফেরার পথে লক্ষ্মীছড়ি ইউএনও কার্যালয়ের পার্শ্ববর্তী স্থানে পৌঁছলে বখাটে পুলিশ সদস্য আনোয়ার শাহাদাৎতাকে পথরোধ করে জোর পূর্বক তুলে নেয়ার চেষ্টা করে। সেটা সম্ভব না হওয়ায় এক পর্যায়ে সে ছাত্রীকে ধর্ষণের উদ্দেশ্যে ধরার চেষ্টা করলে ছাত্রীটি চিৎকার দেয়। তার চিৎকার শুনে আশে পাশেরএলাকা থেকে ৪জন ছাত্র ছুটে এসে শাহাদাৎকে হাতে নাতে ধরে ফেলতে সক্ষম হয়। এ সময় সে(শাহাদাৎ) নিজেকে পুলিশ সদস্য পরিচয় দিলে ছাত্ররা তাকে থানায় নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে গতকাল শুক্রবার সকালে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে থানার ওসি বৈঠক করে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যেকে ক্লোজড করা হয়েছে বলে জানান। তবে তার বিরুদ্ধে উপযুক্ত কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। হিল উইমেন্স ফেডারেশন(এইচডব্লিউএফ) লক্ষীছড়ি উপজেলা শাখা দপ্তর সম্পাদক সুরলতা চাকমা স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
এবিএন/ চাইথোয়াই মারমা/জসিম/নির্ঝর