![চকরিয়ায় বিজয় মেলার নামে চলছে অশ্লীল নৃত্য ও জুয়া](https://archive.abnews24.com/assets/images/news_images/2017/12/27/v_117305.jpg)
চকরিয়া, ২৭ ডিসেম্বর, এবিনিউজ : মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলার অনুমোদন নিয়ে প্রকাশ্যে জুয়া ও নগ্ন নৃত্যু প্রদর্শনে কক্সবাজারের চকরিয়া অশান্ত হয়ে উঠছে। শিক্ষার্থীসহ তরুণ যুব সমাজ হচ্ছে বিপথগামী। পাড়া-গাঁয়ে বেড়ে যাচ্ছে চুরি-ছিনতাই। উপজেলার ডুলাহাজারা, বরইতলী, কোণাখালীতে কয়েকদিন ধরে চলছে বিজয় মেলার ব্যানারে এসব অনৈতিক কর্মকান্ড। এছাড়া বিজয় মেলায় মুক্তিযুদ্ব নিয়ে স্মৃতিচারণ করার মতো কোন মুক্তিযোদ্ধা বা সংগঠক না এনে আয়োজকরা মেলাকে বাণিজ্যিকিকরণের কারণে বদরখালীসহ আরো বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে এভাবে মেলা চালিয়ে টুপাইস ইনকাম করতে উদ্যোগ নিয়েছে স্থানীয় সরকার দল সমর্থিতরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার ডুলাহাজারা, বরইতলী ও কোণাখালীতে চলছে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা। মহান বিজয়ের মাসে মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে এই মেলার অনুমোদন নিয়ে চালানোর কথা থাকলেও প্রকাশ্যে জুয়ার বোর্ড বসিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে আয়োজক ও জুয়ার বোর্ডের মালিকরা। এই জুয়ার ফাঁদে পড়ে সর্বস্ব খোয়াচ্ছে শিক্ষার্থীসহ তরুণ যুবসমাজ। মা-বাবার কাছ থেকে মেলা দেখতে যাওয়ার সময় নিয়ে যাওয়া টাকা হারানোর পর তারা টুকটাক অপরাধে জড়াচ্ছে। আবার পেশাদার জুয়াডিরাও ভাগ্যের চাকা ঘুরাতে এখন বিজয় মেলার জুয়ার আসরে সামিল হয়েছে।
বিজয় মেলার মঞ্চে স্থানীয় নেতাদের দিয়ে অল্পক্ষণ বক্তব্যের আয়োজন হলেও মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক সঠিক তথ্য নির্ভর স্মৃতিচারণ করার মতো কাউকে আনা হয়নি একটি মেলাতেও। এসব মেলায় উন্মক্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্টানও করা হচ্ছে সীমিত আকারে। পক্ষান্তরে সার্কেসের ভিতরেও আলাদা পেন্ডেল করে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে নারাীদের এনে তাদের সিনেমার নায়িকা পরিচয় দিয়ে প্রদর্শন করা হচ্ছে নগ্ন নৃত্য। পূর্ব ধারণা না থাকায় অনেক মেয়ে মেলায় গিয়ে টিকেট কেটে সার্কাস ও সাংস্কৃতিক পেন্ডেলে প্রবেশের পর দশ-পনের মিনিট থেকেই লজ্জায় ঘরে ফিরতে বাধ্য হচ্ছে। এসব কারণে বিভিন্ন পরিবারে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যেও ঝগড়া-বিবাদ বেড়ে গেছে।
মেলায় চর্কিসহ চাক্কা পাঞ্জার জুয়ার পাশাপাশি অনুমোদন ছাড়াই চলছে লটারি। সাথে কয়েকজন তরুণ মিলে বালতিতে পয়সা ফেলে, হারু খেলা, টিন টিকেট, এক/তিন তাজের জাদুসহ রকমারি জুয়াও চলছে। মেলায় দিনে স্টল নির্ভর হলেও সন্ধ্যা থেকে ভোর রাত পর্যন্ত চলে নগ্ন নৃত্য ও জুয়ার আসর।
একাধিক সুত্রে জানায়, জেলা প্রশাসনিক কর্ণদারকে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ মুক্তিযুদ্ধের সংস্কৃতি নির্ভর মেলা চালানো হবে এমন শর্তে আয়োজকরা অনুমোদন নিলেও বাস্তবে চলছে তার উল্টো। স্থানীয় প্রশাসন এসব মেলা নিয়ে কোন ধরনের কর্ণপাতই করছেননা।
কদাচিৎ উপজেলার কর্মকর্তারা মেলা পরিদর্শনে গেলেও দিনের বেলায় যাওয়ায় রাতের অসামাজিক কর্মকান্ড নজরে আসেনা তাদের। এসব মেলার আয়োজকদের অনেকেই দাবি করেছেন উপজেলার বিভিন্ন স্তরে চাঁদা দিয়ে মেলা চালানো হচ্ছে। তবে, নগ্ন নৃত্য ও জুয়া খেলা চালানোর বিষয়টি সকল আয়োজক অস্বীকার করেছেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুরুদ্দীন মুহাম্মদ শিবলী নোমান বলেন, ইতিপূর্বে ডুলাহাজারার বিজয় মেলায় প্রকাশ্যে জুয়ার চলছে এমন সংবাদ পেয়ে আমি নিজেই পরির্দশন করে একটি জুয়ার আসর ভেঙ্গে দিয়েছি। আয়োজকদের নির্দেশ দিয়েছি জুয়া ও অসামাজিক কোন কার্যকালাপ না চালানোর জন্য। এরপরও চলছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) ও চকরিয়া থানা পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছি।
এবিএন/মুকুল কান্তি দাশ/জসিম/রাজ্জাক