![শার্শায় অপচিকিৎসায় প্রসূতির করুণ মৃত্যু](https://archive.abnews24.com/assets/images/news_images/2017/12/28/jessor-opocikitsha_117347.jpg)
যশোর, ২৮ ডিসেম্বর, এবিনিউজ : শার্শার বাগআঁচড়া সাতমাইল রুবা ক্লিনিকে ডাক্তারের অপচিকিৎসায় আবারও আয়েশা বেগম (২৭) নামে এক প্রসূতির করুণ মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে।
এব্যাপারে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্বজন দের কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে আকাশ বাতাস। ক্ষিপ্ত হয়ে রয়েছে রোগীর স্বজনরা। রোগীর স্বজন বাবু জানান, তার ফুফাতো বোন শার্শা উপজেলার সামটা গ্রামের আলমগীর ড্রাভারের স্ত্রী আয়শা বেগমের মঙ্গলবার ভোরে প্রসাব বেদনা উঠলে স্বজনরা বাগআঁচড়া সাতমাইল ডাক্তার আহসান হাবীব রানা ও তার স্ত্রী ডাক্তার জেরিন আফরোজ নিপুর মালিকানাধীন রুবা ক্লিনিকে ভর্তি করে। দিনভর ডাক্তার দ্বয় রোগী কে ভুল চিকিৎসা দিতে থাকে। একপর্যায়ে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯ টার দিকে রোগীর অবস্থার অবনতি হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়ে।
এসময় তড়িঘড়ি করে স্বজনদের ডেকে ঢাকায় নিয়ে যেতে বলে। ততক্ষণে রোগী মৃত্যু বরণ করেন। অপচিকিৎসায় এক সন্তানের জননী আয়েশা বেগমের অকাল মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
এর আগেও এ ক্লিনিকে বাগআঁচড়া ইউনিয়ন বিবাহ রেজিষ্টার হাফিজুর রহমানের স্ত্রীর প্রসাব বেদনা উঠলে ডাক্তার দ্বয়ের অপচিকিৎসায় মৃত্যু হয়। ডাক্তারে ভুল ও অপচিকিৎসায় একের পর এক রোগীর মৃত্যু হলেও দম্ভের সাথে চালিয়ে যাচ্ছেন তারা তাদের অপচিকিৎসা। সেবার নামে চালিয়ে যাচ্ছেন গলা কাটা বানিজ্য।
সুচিকিৎসা দেওয়ার নামে অবৈধ ভাবে গড়ে উঠা এ ক্লিনিক খুলে বসে এলাকার সহজ সরল নিরীহ রোগীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছেন লক্ষ লক্ষ টাকা। আর এই হাসপাতালটি চলছে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকতাদের মোটা অংকের মাসোহারা দিয়ে। ফলে সাধারণ মানুষ টাকা খরচ করেও উপযুক্ত চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। স্বীকার হচ্ছেন ভুল ও অপচিকিৎসার।
নাম সর্বস্ব এ ক্লিনিকে বছরে অর্থ বানিজ্য হচ্ছে কোটি টাকা। বাংলাদেশ সরকারের দি মেডিকেল প্রাকটিস এন্ড প্রাইভেট ক্লিনিক ল্যাবরেটরীজ রেজুলেশন অডিন্যন্স ১৯৮২ মোতাবেক বেসরকারী ক্লিনিকে যে সব জনবল, চিকিৎসা যন্ত্রাংশ এবং পরিবেশ বজায় থাকার কথা এ ক্লিনিকে তার লেশ মাত্র নেই।
সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, দশ বেডের জন্য অনুমতি থাকলেও এ ক্লিনিকে রয়েছে ৪০ টি বেড। যা আইনত দন্ডনীয়। এ ক্লিনিকে মারাতœক অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা আর অস্বাস্থ্যকর অবস্থার করুণ চিত্র ফুটে উঠেছে। নেই সিনিয়র স্টাফ নার্স। প্রতান্ত গ্রাম অঞ্চল থেকে পেটে ভাতে মেয়েদর রেখে তাদের কে দিয়ে চলে সিনিয়র স্টাফ নার্সের কাজ। এই ক্লিনিকে অপারেশন থিয়েটরের অবস্থা আরও শোচনীয়। অপারেশনের জন্য প্রয়োজনী যন্ত্রপাতি, পর্যাপ্ত অক্সিজেন ও আলোর ব্যবস্থা নেই। অথচ এখানে চলছে বড় বড় সব অপারেশন। ফলে রোগী ক্লিনিক ত্যাগ করলেও পরবর্তীতে নানা জটিলতায় ভুগে মৃত্যুর মুখে পতিত হয়। এসব অব্যবস্থা অনিয়ম অস্বাস্থ্যকর ভুল ও অপচিকিৎসির বলি হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। অথচ মোটা অংকের টাকা পেয়ে নিশ্চুপ রয়েছেন স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা।
এব্যাপারে ডাক্তার আহসান হাবীব রানার মুঠো ফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমি সাময়িক চিকিৎসা দিয়ে রোগী ছেড়ে দিয়েছি। কেউ আমাকে ফাঁসানোর জন্য ষড়যন্ত্র করছে।
এবিএন/ইয়ানূর রহমান/জসিম/নির্ঝর