শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২ ফাল্গুন ১৪৩১
logo

লক্ষ্মীপুর থেকে হারিয়ে যাচ্ছে রস ও গাছি

লক্ষ্মীপুর থেকে হারিয়ে যাচ্ছে রস ও গাছি

লক্ষ্মীপুর, ১০ জানুয়ারি, এবিনিউজ : হারিয়ে যেতে বসেছে বাংলার ঐতিহ্যবাহী সুস্বাদু খেজুর রসের সঙ্গে সম্পৃক্ত পেশা ‘গাছি’। একসময়ে শীত মৌসুমের শুরুতেই ভোরের কুয়াশা অতিক্রম করে গ্রামগঞ্জের গাছিরা কাছি (মোটা দড়ি), বেতের ঝুড়ি কোমরে বেঁধে ছুটে চলতেন গ্রামের পথ থেকে পথে। ঝুড়ির ভেতরে থাকত কয়েক রকমের গাছ কাটা দা (ছেন দা), বালি রাখার চুঙ্গা, রসের হাঁড়ি বা ঠিলা এমনকি দায়ে ধার দেয়ার বিভিন্ন প্রকারের দা। শীতের শুরুতেই গাছ ছিলানো (গাছ কাটা) নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়তেন গাছিরা। গাছের উপরে উঠে নিজেকে কোমরের কাছিতে বেঁধে তারপর চলত গাছ কাটা। কে কার আগে খেজুর গাছ কেটে রস নিয়ে বিক্রি করতে পারবে এর প্রতিযোগিতা চলত। খেজুর রসে তৈরি নানা প্রকার পিঠা-পায়েশ ছিল এ অঞ্চলের মানুষের নবান্নের সেরা উপহার।

খেজুর রস দিয়ে অল্প সময়ে তৈরি করা হতো পাটালি গুড়, ভীড়মিঠাইসহ নানা রকমের মজার মজার খাবার সামগ্রী।

কিন্তু সময়ের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে ঐতিহ্যবাহী খেজুর রস ও ব্যস্ততম পেশা গাছি। খেজুর গাছ কাটার সাথে নিয়োজিতদের অঞ্চল ভেদে বলা হয় শিয়ালি বা গাছি। কালের বিবর্তনে খেজুর গাছ ধ্বংসসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারণে এ গাছ শহরের এলাকায় দেখা না গেলেও গ্রাম অঞ্চলে কিছু দেখা যায়। রায়পুর, রামগতি ও কমলনগরের কিছু গাছ চোখে পড়ে। কিন্তু গাছ থাকলেও গাছি তেমন দেখা যায় ন। অনেকের মতে এই পেশা মৌসুমী হওয়ায় এবং গাছ কমে যাওয়া এ পেশায় গাছিদের সংখ্যা কমে গেছে। ফলে রসের সঙ্গে হারাতে বসেছে খেজুর গাছ সম্পৃক্ত পেশা-গাছি।

কমলনগর ও রামগতির কয়েকজন বাসিন্দা জানান, কয়েক বছর আগেও শীত মৌসুমে খেজুর রসের তৈরি নানা প্রকার পিঠা-পায়েসসহ সুস্বাদু নবান্নের খাদ্যসামগ্রী দিয়ে উৎসাহ ও আনন্দের মধ্যে আমরা নবান্নকে বরণ করতাম। এখন আর খেজুর রস না পাওয়ায় নবান্নের আনন্দ থেকে বঞ্চিত আমরা। শীত মৌসুমে অতিথিদের রসের তৈরি পায়েশ দিয়ে আপ্যায়ন করানোর প্রচলন এখন ভুলতেই বসেছেন গ্রামাঞ্চলের মানুষ।

এবিএন/অ আ আবীর আকাশ/জসিম/নির্ঝর

ad

প্রধান শিরোনাম

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত