![কয়রায় চিংড়িতে জেলি পুশ করে বেচা বিক্রির হিড়িক](https://archive.abnews24.com/assets/images/news_images/2018/01/20/koyra_121619.jpg)
কয়রা (খুলনা), ২০ জানুয়ারি, এবিনিউজ : সুন্দরবন উপকূলীয় জনপদ কয়রায় চিংড়িতে জেলি পুশ করে বেচা বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘের থেকে সংগৃহীত বাগদা চিংড়িতে সিরিঞ্জের সাহায্যে জেলি ও সাগু পুশ করে কেজিপ্রতি দেড় দুই’শ গ্রাম ওজন বাড়িয়ে অতিরিক্ত মুনাফা হাতিয়ে নিচ্ছে অসাধু ব্যবসায়িরা।
ডিপো মালিকরা ছাড়াও খুচরা ব্যবসায়িরা উপজেলার চাঁদালি. গিলাবাড়ি ও দেউলিয়া বাজারের মৎস্য আড়ত থেকে প্রতিদিন ড্রাম ভর্তি বাগদা চিংড়ি ক্রয় করে নিজ নিজ বাড়িতে নিয়ে পরিবারের সদস্যদের দিয়ে জেলি, সাগু পুশ করে তা আবার আড়তের পাইকারী ব্যবসায়িদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে।
অসাধু খুচরা ব্যবসায়িচক্রগুলো সারা বছর এ ধরনের কার্যক্রম চালিয়ে গেলেও কর্তৃপক্ষের নিয়মিত মনিটরিং না থাকায় সাদা সোনা হিসেবে পরিচিত চিংড়িতে পুশ প্রবণতা দিন দিন বেড়ে চলেছে। চিকিৎসকদের মতে জেলি মিশ্রিত চিংড়ি স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এটা জানার পরও অসাধু চক্রগুলো কোন কিছুর তোয়াক্কা না করে আর্থিক ফায়দা লুটে নিতে চিংড়িতে জেলি, সাগু ও পানি পুশ করা অব্যাহত রেখেছে।
কয়রা সদরের মাঝের আইট, ১নং কয়রা, ৬নং কয়রা, মহারাজপুরের হায়াতখালি, দশালিয়া, মঠবাড়ি বাগালীর হোগলা, চাঁদালি, ঘুগরাকাটি, উত্তর বেদকাশির কাটকাটা, হরিহরপুর, কাশিরহাট, মহেশ্বরীপুরের গিলাবাড়ি, খোড়লকাটি ও দক্ষিণ বেদকাশি এলাকার খুচরা ব্যবসায়ি আড়তের পাইকারী ব্যবসায়িদের কাছ থেকে ভোরবেলা বাগদা চিংড়ি ক্রয় করে স্ব স্ব বাড়িতে নিয়ে পুশের কাজ শেষ করে দুপুরের আগে সেগুলো আবার আড়তে নিয়ে পাইকারী ব্যবসায়িদের নিকট বিক্রি করছে। প্রতিদিনি টন টান পুশকৃত চিংড়ি পাইকারী ব্যবসায়িরা ট্রাক ভর্তি করে খুলনা সহ অন্যত্র কোম্পানিতে নিয়ে যাচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও ভাইরাসের কারণে একদিকে যেমন সুন্দরবন উপকূলীয় অঞ্চলের বাগড়া চিংড়ি চাষে ধ্বস নেমেছে অন্যদিকে জেলি, সাগু, পানি পুশের কারণে বিদেশে চিংড়ির গুনগত মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর হিসেব মতে, গত অক্টোবরে ৩ কোটি ১১ লাখ এবং নভেম্বরে ২ কোটি ৪২ লাখ ২২ হাজার ডলার মূল্যের হিমায়িত চিংড়ি বিদেশে রফতানি করা হয়।
নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম, রাশিয়া, ডেনমার্ক, সাইপ্রাস, অষ্ট্রিয়া, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, ইতালি, জার্মানি, পর্তুগাল, গ্রিস, সুইজারল্যান্ড, লিথুনিয়া, স্পেন ও পোলান্ডে চিংড়ি রফতানি করে ইতপূর্বে দেশ প্রচুর পরিমানে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করলেও বর্তমানে এ সকল দেশ চিংড়ি আমদানিতে অনেকটা আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে চিংড়ির দাম পূর্বের তুলনায় কমেছে।
উপজেলা চিংড়ি ডিপো মালিক সমিতির সভাপতি আলহাজ সরদার নুরুল ইসলাম কোম্পানি বলেন, ডিপোর অস্তিত্ব এখন প্রায় নেই। মাছের কাটা বা আড়ত হওয়ায় ঘের মালিকরা সরাসরি কাটায় চিংড়ি নিয়ে যায়। সেখান থেকে খুচরা ব্যবসায়িরা বাগদা চিংড়ি ক্রয় করে কি করেন সেটা তারাই ভালো বলতে পারবেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ আলাউদ্দিন আহমেদ বলেন, পুশের বিরুদ্ধে অভিযান চলমান রয়েছে। অসাধু চক্র কোন কোন জায়গায় পুশ করে সেটা জানতে পারলে অবশ্যই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এবিএন/শাহীন/জসিম/রাজ্জাক