![উদ্বোধনের অপেক্ষায় ভোলার স্বাধীনতা জাদুঘর](https://archive.abnews24.com/assets/images/news_images/2018/01/22/bhola-mugeim-pic-1-(1)_121993.jpg)
ভোলা, ২২ জানুয়ারি, এবিনিউজ : আগামী প্রজন্মের কাছে মুক্তিযোদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরার জন্য ও মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস সংরক্ষন করার লক্ষ্য নিয়ে ভোলার উপশহর বাংলাবাজারে স্থাপিত স্বাধীনতা জাদুঘর উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে। আগামী ২৫ জানুয়ারি মহামন্য রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ জাদুঘরটির আনুষ্ঠানিক উদ্ধোধন করবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।
জাদুঘরটি প্রতিষ্ঠা করেন মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ তার ব্যক্তিগত উদ্যোগে। রাষ্ট্রপতির উদ্বোধনের পরপরই জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হবে বলে জানান জাদুঘরের তত্ত্বাবধায়ক। বানিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ ইতিমধ্যে স্বাধীনতা জাদুঘরটি পরিদর্শন করেছন।
জাদুঘরটি একদিকে যেমন গবেষণাগার, অপরদিকে ডিজিটাল ডিসপ্লে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, ভাষা অন্দোলন থেকে স্বাধীনতা আন্দোলনের ধারাবাহিকতা দেখতে ও জানতে পারবে নতুন প্রজন্ম। বাঙালির লোকজ ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি তুলে ধরা হয়েছে।
প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ ড. মুনতাসীর মামুনসহ বেশ কয়েকজন গবেষক এর নিরলস পরিশ্রমে জাদুঘরটি অন্যতম সংগ্রহশালায় পরিণত হয়েছে। এখানে আমাদের স্বাধীনতা অর্জনের পেছনের ৮০ বছরের ইতিহাসের ধারাবাহিক দুর্লভ সংরক্ষণ থাকবে বলে জানা যায়। থাকছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে নির্মিত প্রামন্য চিত্র ও চলচিত্র প্রর্দশনীর জন্য রাখা হচ্ছে থ্রীডি মিনি হল রুম। বর্তমানে চলছে যাদুঘরটির শেষ মুর্হূতের কাজ।
বাংলাবাজারের বাণিজ্যমন্ত্রীর মায়ের নামে প্রতিষ্ঠিত ফাতেমা খানম কমপ্লেক্স ৩ বছর আগে এর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। এর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
জাদুঘরটির স্বপ্নদ্রষ্টা ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের মহনায়ক বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল জানান, মুক্তিযোদ্ধের ইতিহাস আগামী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে এমন একটি জাদুঘর নির্মাণের স্বপ্নছিলো দীর্ঘদিনের। কারন বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে বঙ্গবন্ধুর প্রতিটি ভাষণই জাতিকে আন্দোলিত করেছিল। যা আজ গবেষণার বিষয় হয়ে উঠেছে।
জাদুঘর পরিচালনার দায়িত্বে থাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মইনুল হোসেন বিপ্লব জানান, এখানে তিনটি গ্যালারি রয়েছে। প্রথম তলার গ্যালারিতে এক পাশে ইতিহাস এতিহ্য, প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, ’৪৭-এ দেশভাগ ও ভাষা আন্দোলনের দুর্লভ ছবি ও তথ্য রয়েছে।
অপর পাশে রয়েছে লাইব্রেরি ও গবেষণাগার। এ ছাড়া ওই একই তলায় রয়েছে মাল্টিমিডিয়া ডিসপ্লে হলরুম। দ্বিতীয় তলায় রয়েছে ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধের আগ পর্যন্ত ইতিহাসের মুহূর্তগুলোর চিত্রকল্প।
তৃতীয় তলায় রয়েছে যুক্তফন্ট, ’৫৮-এর আন্দোলন, পাকিস্তানের সামরিক শাসন, ’৬৬-এর আন্দোলন, ’৬৯-এর গণআন্দোলন, ’৭০-এর নির্বাচন, ৭মার্চের ভাষন , ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধুর আত্মত্যাগের দুর্লভ আলোকচিত্র। এ ছাড়া রয়েছে বঙ্গবন্ধুর সব ভাষণের অডিও ও ভিডিও ডিজিটাল প্রদর্শনী। দর্শনার্থীরা ডিজিটাল টাচস্কিন ব্যবহার করে যে কোনো গুরুত্বপূর্ন মুহূর্ত ও তথ্য জানতে পারবেন।
ভোলার বাংলাবাজার এলাকাটিও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বহন করে চলেছে। ১৯৭১ সালের ২৩ অক্টোবর এই বাংলাবাজারে তিনদিক থেকে পাকবাহিনী হামলা চালায়। তাই ওই এলাকায় স্থাপিত হয়েছে এমন জাদুঘর।
স্থানীয় ব্যবসায়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক কামাল হোসেন বলেন, আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ কিভাবে ৯ মাসে স্বাধীনতা অর্জন করেছে। সেই যুদ্ধের ইতিহাস এর এক খন্ড চিত্র এখানে এসে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরবে।
এবিএন/আদিল হোসেন তপু/জসিম/রাজ্জাক